অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে কঠোর হচ্ছে পর্তুগাল, নতুন আইন অনুমোদন

অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে কঠোর হতে চলেছে ইউরোপের দেশ পর্তুগাল। দেশটি এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি নতুন আইন চালু করেছে। এর মাধ্যমে দেশটির সরকার অবৈধভাবে প্রবেশ করা বা অনুমোদন ছাড়া বসবাসকারী বিদেশিদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া আরও দ্রুততর করবে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) মন্ত্রিসভায় নতুন এই আইনের অনুমোদন দেওয়ার পর্তুগাল সরকার জানায়, এই আইন দেশটিতে অবৈধ প্রবেশ, ভিসার নিয়ম লঙ্ঘন ও আশ্রয় ব্যবস্থার অপব্যবহার ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্সি মন্ত্রী আন্তোনিও লাইতাঁও আমারো সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই আইনটি নিয়ম ভঙ্গকারীদের লক্ষ্য করে করা হয়েছে, নির্বিচারে নয়। এটি শুধু তাদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, যারা ‘অবৈধভাবে পর্তুগালে প্রবেশ করেছেন ও অবস্থান করছেন। মন্ত্রী জানান, এটি একটি ‘ভারসাম্যপূর্ণ ও সংযত’ আইন, যার লক্ষ্য পূর্ববর্তী অবস্থার জটিলতা দূর করা, বিশেষ করে অভিবাসন ও সীমান্ত সেবা (এসইএফ) বিলুপ্ত করে দেওয়ার পর সৃষ্ট বিলম্ব, দুর্ব্যবহারযোগ্য নিয়ম ও অকার্যকর প্রতিষ্ঠান নিয়ে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা সমাধান করা। লাইতাঁও আমারো জানান, ২০২৩ সালে পর্তুগাল ইউরোপের য

অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে কঠোর হচ্ছে পর্তুগাল, নতুন আইন অনুমোদন

অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে কঠোর হতে চলেছে ইউরোপের দেশ পর্তুগাল। দেশটি এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি নতুন আইন চালু করেছে। এর মাধ্যমে দেশটির সরকার অবৈধভাবে প্রবেশ করা বা অনুমোদন ছাড়া বসবাসকারী বিদেশিদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া আরও দ্রুততর করবে।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) মন্ত্রিসভায় নতুন এই আইনের অনুমোদন দেওয়ার পর্তুগাল সরকার জানায়, এই আইন দেশটিতে অবৈধ প্রবেশ, ভিসার নিয়ম লঙ্ঘন ও আশ্রয় ব্যবস্থার অপব্যবহার ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্সি মন্ত্রী আন্তোনিও লাইতাঁও আমারো সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই আইনটি নিয়ম ভঙ্গকারীদের লক্ষ্য করে করা হয়েছে, নির্বিচারে নয়। এটি শুধু তাদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, যারা ‘অবৈধভাবে পর্তুগালে প্রবেশ করেছেন ও অবস্থান করছেন।

মন্ত্রী জানান, এটি একটি ‘ভারসাম্যপূর্ণ ও সংযত’ আইন, যার লক্ষ্য পূর্ববর্তী অবস্থার জটিলতা দূর করা, বিশেষ করে অভিবাসন ও সীমান্ত সেবা (এসইএফ) বিলুপ্ত করে দেওয়ার পর সৃষ্ট বিলম্ব, দুর্ব্যবহারযোগ্য নিয়ম ও অকার্যকর প্রতিষ্ঠান নিয়ে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা সমাধান করা।

লাইতাঁও আমারো জানান, ২০২৩ সালে পর্তুগাল ইউরোপের যেসব দেশে বিদেশি নাগরিক ফেরত পাঠানোর হার সবচেয়ে কম ছিল, তাদের মধ্যে অন্যতম। সনাক্ত হওয়া মামলার ৫ শতাংশেরও কম ফেরত পাঠানো হয়, যা তার ভাষায় কোনোভাবেই ঠিক হয়নি।

নতুন আইন সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি ‘ভারসাম্যপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ’ নিশ্চিত করবে ও মানবাধিকারকে সর্বোচ্চ সম্মান রেখে নিয়ম সংশোধন করবে। প্রতিরক্ষা অধিকার, আপিলের সুযোগ, অনুপাতিকতা, আইনি প্রতিনিধিত্ব ও বিশেষ করে শিশুদের মতো ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীর সুরক্ষাসহ সব অধিকার বজায় রাখা হবে।

তিনি আরও জানান, যেসব দেশে ফেরত পাঠালে নিপীড়নের ঝুঁকি থাকে, সেসব দেশে কাউকে ফেরত না পাঠানোর নীতিও এই আইনের মাধ্যমে পুরোপুরিভাবে রক্ষা করা হবে।

নতুন ব্যবস্থায় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়াগুলো দ্রুত করা, আশ্রয়প্রার্থনা ব্যবস্থার অপব্যবহার ও সময়ক্ষেপণের কৌশল বন্ধ করা। এছাড়া আটক করার বিকল্প ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে, যেমন- উন্মুক্ত কারাগারে আটক রাখা, যা এরই মধ্যে ইউরোপের কিছু দেশে পরীক্ষামূলকভাবে চালু রয়েছে। লাইতাঁওয়ের মতে, এই আইন পর্তুগালকে ‘ইউরোপের মধ্যম মাত্রার নিয়ন্ত্রিত মানদণ্ডে’ স্থাপন করবে।

তিনি জানান, ডিসেম্বর মাসজুড়ে প্রস্তাবটি জনমত যাচাইয়ের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে, এরপর সংসদে উপস্থাপন করা হবে। দুই সপ্তাহের মধ্যে জাতীয় অভিবাসন ও আশ্রয় কাউন্সিলের বৈঠকও আহ্বান করা হবে।

লাইতাঁও আমারোর বক্তব্যে এটা পরিষ্কার যে পর্তুগাল ‘অভিবাসন নীতি ছাড়া দেশ’ বা ‘নিয়ন্ত্রণহীন উন্মুক্ত দরজার নীতি’ থেকে এগিয়ে এসে এখন এমন এক রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে, যেখানে ‘নিয়ম ও নিয়ন্ত্রণে দৃঢ়, আবার একই সঙ্গে অধিকারের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল ও মানবিক’ অভিবাসন নীতি কার্যকর রয়েছে।

সূত্র: দ্য পর্তুগাল নিউজ

এসএএইচ

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow