আমনের বাজারদরে উদ্বেগ উত্তরাঞ্চলের কৃষকদের
নভেম্বরের শুরুতে অকাল বৃষ্টিতে মাঠজুড়ে জলাবদ্ধতা, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া এবং ফলন কমে যাওয়ায় চরম সংকটে উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা। এর মধ্যে বাজারে আমন ধানের দামপতনে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে ওই অঞ্চলের কৃষকদের মধ্যে। রাজশাহী কৃষকরা জানান, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে অনেক ক্ষেত ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দেয় এবং ফলন হ্রাস পায়। এতে গত বছরের তুলনায় উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মতে, চলতি মাসের শুরুতে দুই দিনের বৃষ্টিপাতের ফলে রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ১৯ হাজার ৫৬৮ হেক্টর কৃষিজমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে আনুমানিক ১৩১ দশমিক ৩১ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য অনুসারে, ১ হাজার ৬৪৯ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে এবং আরও ১৩ হাজার ৮৬০ হেক্টর আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমন ধান সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ৫৮৫ হেক্টর জমির সম্পূর্ণ ধ্বংস এবং ১২ হাজার ৫০১ হেক্টর জমির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। কৃষকরা জানান, উৎপাদন কমে যাওয়ায় তারা উচ্চ দামের আশা করেছিলেন, কিন্তু বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি এবং ব্যবসায়ীদের চক
নভেম্বরের শুরুতে অকাল বৃষ্টিতে মাঠজুড়ে জলাবদ্ধতা, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া এবং ফলন কমে যাওয়ায় চরম সংকটে উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা। এর মধ্যে বাজারে আমন ধানের দামপতনে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে ওই অঞ্চলের কৃষকদের মধ্যে।
রাজশাহী কৃষকরা জানান, নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে অনেক ক্ষেত ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দেয় এবং ফলন হ্রাস পায়। এতে গত বছরের তুলনায় উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মতে, চলতি মাসের শুরুতে দুই দিনের বৃষ্টিপাতের ফলে রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ১৯ হাজার ৫৬৮ হেক্টর কৃষিজমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে আনুমানিক ১৩১ দশমিক ৩১ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য অনুসারে, ১ হাজার ৬৪৯ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে এবং আরও ১৩ হাজার ৮৬০ হেক্টর আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আমন ধান সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ৫৮৫ হেক্টর জমির সম্পূর্ণ ধ্বংস এবং ১২ হাজার ৫০১ হেক্টর জমির আংশিক ক্ষতি হয়েছে।
কৃষকরা জানান, উৎপাদন কমে যাওয়ায় তারা উচ্চ দামের আশা করেছিলেন, কিন্তু বাজারে সরবরাহ বৃদ্ধি এবং ব্যবসায়ীদের চক্রের কারণে কম দামে ফসল বিক্রি করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই তাদের।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্য অনুসারে, চলতি মৌসুমে রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৪ দশমিক ১০ লাখ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত প্রায় ৩১ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। ওইদিন স্থানীয় বাজারে প্রতি মণ মোটা ধান (ভেজা) ৯৫০ থেকে ১০৫০ টাকা এবং শুকনো ধান ১ হাজার থেকে ১, হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়েছে। যেখানে মিহি কাটারিভোগ ধান ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
কৃষকরা জানান, গত বছর তারা প্রতি মণ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বেশি পেয়েছেন।
তারা আরও জানান, সার, কীটনাশক, সেচ, পরিবহন এবং শ্রমিকের জন্য উৎপাদন খরচ বেড়েছে, যা তাদের আর্থিক চাপ বাড়িয়েছে।
দুর্গাপুর উপজেলার কৃষক সোহাগ ইসলাম বলেন, ফলন কম এবং দামও কম। আমাদের খরচ ক্রমাগত বাড়ছে, কিন্তু ধান বিক্রি করে উৎপাদন খরচও মেটানো যাচ্ছে না। ঋণ পরিশোধ করা খুবই কঠিন হচ্ছে।
তানোরের একজন পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক নূর মোহাম্মদ বলেন, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা ধান মজুত করছেন। যেহেতু ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিরা চাষের জন্য ঋণ নিয়েছিলেন, তাই তাদের ঋণ পরিশোধের জন্য ফসল বিক্রি করতে হবে। ব্যবসায়ীরা এটিকে সুযোগ হিসেবে নিচ্ছেন। এছাড়া সরকারের ক্রয়মূল্য কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত কৃষকদের উদ্বেগ আরও বাড়িছে।
রাজশাহী বিভাগের কৃষি বিপণন বিভাগের উপ-পরিচালক শাহানা আক্তার জাহান বলেন, বৃষ্টিপাতজনিত ক্ষতির কারণে বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ফলন কমে গেছে, তবে প্রাথমিক ফসল বাজারে পৌঁছালে দাম সাধারণত ওঠানামা করে।
তিনি বলেন, কৃষকরা যদি আরও কিছুদিন ফসল সংরক্ষণ করতে পারেন তবে তারা ভালো দাম পেতে পারেন।
কৃষকদের আশঙ্কা, যদি দাম শিগগির উন্নত না হয়, তাহলে অনেকেই ঋণের গভীরে ডুবে যাবেন এবং আসন্ন রবি মৌসুমের জন্য জমি প্রস্তুত করতে অসুবিধায় পড়বেন।
সাখাওয়াত হোসেন/এনএইচআর/জেআইএম
What's Your Reaction?