এখন থেকে রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিট (আরএফসিডি) হিসাবের ওপর বেঁধে দেওয়া সুদহার সীমা থাকছে না। এ সীমা তুলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে এ আমানতের সুদহার নির্ধারণ হবে।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতদিন সোফর রেটের সঙ্গে সর্বোচ্চ দেড় শতাংশ যুক্ত করে (৫.১৪+১.৫) গ্রাহকের সুদহার নির্ধারণ হয়ে আসছিল। এখন আর সেই সীমা থাকলো না। এতে ব্যাংকে ডলারের প্রবাহ বাড়বে। কারণ বিদেশফেতর যে কেউ ব্যাংকে ডলার রাখলে এখন আগের তুলনায় বেশি মুনাফা দাবি করতে পারবে। এর ফলে ঘরে ফেলে রাখা ডলার ব্যাংকে ফিরে আসবে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ থেকে দেওয়া প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আরএফসিডি হিসাবের বিপরিতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নির্ধারিত সুদহারের সীমা থাকবে না। এখন থেকে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সুদহার নির্ধারণ হবে।
গত বছরের ৩ ডিসেম্বর থেকে মানুষের ঘরে রাখা ডলার ব্যাংকে ফেরাতে আবাসিক বৈদেশিক মুদ্রা আমানত বা আরএফসিডি হিসাবের ওপর সুদসহ বাড়তি সুবিধা দেওয়ার সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপরই বাড়তি উদ্যোগ নিয়ে এই হিসাব খুলতে শুরু করে দি সিটিসহ কিছু ব্যাংক। বর্তমানে নগদ ডলারের বড় অংশ রয়েছে- ইস্টার্ণ, দি সিটি, ব্র্যাক, ডাচ্-বাংলা, প্রাইম, পূবালী, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড, এইচএসবিসি, ইসলামীসহ আরও কয়েকটি ব্যাংকে। ডলারের পাশাপাশি পাউন্ড, ইউরো, অস্ট্রেলিয়ান ডলার, কানাডিয়ান ডলার, সিঙ্গাপুরি ডলারেও আরএফসিডি হিসাব খোলা যায়।
দেশের বাইরে থেকে এসেছেন ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে এমন যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিক ব্যাংকে গিয়ে আরএফসিডি হিসাব খুলতে পারেন। তবে বিদেশ গেছেন তার প্রমাণপত্র অর্থাৎ পাসপোর্ট ও ভিসার নথিপত্র ব্যাংকে জমা দিতে হবে। প্রয়োজন হয় দুই কপি ছবি, নমিনি, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন)। এই হিসাবের বিপরীতে ব্যাংকগুলো চেক বই না দিয়ে ডেবিট কার্ড দেয়, যা থেকে খরচে কোনো অনুমোদন লাগে না।
প্রতিবার বিদেশ ভ্রমণের জন্য একজন ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত আরএফসিডি হিসাবে জমা রাখতে পারেন। যদি কেউ ১০ বার বিদেশ ভ্রমণ করে থাকেন, তিনি চাইলে তার হিসাবে কোনো নথিপত্র ছাড়াই এক লাখ ডলার জমা দিতে পারবেন। তবে ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রতিবার এর বেশি পরিমাণ ডলার জমা দিতে চাইলে তাকে বেশি ডলার দেশে আনার জন্য কাস্টমসের ঘোষণাপত্র জমা দিতে হবে।
দেশের ব্যাংকগুলো এই হিসাবের বিপরীতে ৭ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়, এই হিসাবে জমা অর্থের ওপর ব্যাংকগুলো বেঞ্চমার্ক রেটের সঙ্গে আরও অন্তত দেড় শতাংশ সুদ দেবে। সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেট (সোফর) এখন ৫ দশমিক ৩১ শতাংশ। সে অনুযায়ী আরএফসিডি হিসাবে সুদহার দাঁড়াবে ৬ দশমিক ৮১ শতাংশ।
ইএআর/ইএ