আসামিরা গ্রেফতার না হলে উপাচার্য কার্যালয় ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহ হত্যা মামলার আসামিদের আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে গ্রেফতার না করলে উপাচার্য কার্যালয় ঘেরাও ও রেড কার্ডের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে একাত্মতা পোষণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন জিয়া পরিষদ, গ্রীন ফোরাম ও সাদা দল। এছাড়া শাখা ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ও জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার নেতারা মানববন্ধনে অংশ নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বোরহান কবির বলেন, ‘প্রশাসন এখনো সাজিদের খুনিদের আইনের আওতায় আনতে পারেনি। আমরা জানতে চাই আর কতদিন তদন্ত চলবে? কতদিন আমাদের এভাবে আশ্বাস দেওয়া হবে? আমরা আর কোনো আশ্বাসে থাকতে চাই না। এই মাসের ১৭ তারিখ সাজিদ আব্দুল্লাহ হত্যার ৫ মাস পূর্ণ হবে। এর মধ্যে প্রশাসন খুনিদেরকে গ্রেপ্তার করে না পারলে সেদিনই আমরা ভিসির কার্যালয় ঘেরাও করব। ১৭ তারিখই শেষ দিন।’ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, সাজিদের হত্যার প্রায় পাঁচ মাস হতে চলছে। ভিসেরা রিপোর্টসহ সব রিপোর্ট
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহ হত্যা মামলার আসামিদের আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে গ্রেফতার না করলে উপাচার্য কার্যালয় ঘেরাও ও রেড কার্ডের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
এতে একাত্মতা পোষণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন জিয়া পরিষদ, গ্রীন ফোরাম ও সাদা দল। এছাড়া শাখা ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ও জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার নেতারা মানববন্ধনে অংশ নেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বোরহান কবির বলেন, ‘প্রশাসন এখনো সাজিদের খুনিদের আইনের আওতায় আনতে পারেনি। আমরা জানতে চাই আর কতদিন তদন্ত চলবে? কতদিন আমাদের এভাবে আশ্বাস দেওয়া হবে? আমরা আর কোনো আশ্বাসে থাকতে চাই না। এই মাসের ১৭ তারিখ সাজিদ আব্দুল্লাহ হত্যার ৫ মাস পূর্ণ হবে। এর মধ্যে প্রশাসন খুনিদেরকে গ্রেপ্তার করে না পারলে সেদিনই আমরা ভিসির কার্যালয় ঘেরাও করব। ১৭ তারিখই শেষ দিন।’
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, সাজিদের হত্যার প্রায় পাঁচ মাস হতে চলছে। ভিসেরা রিপোর্টসহ সব রিপোর্ট অনুযায়ী সাজিদ আব্দুল্লাহকে হত্যা করা হয়েছে এটা প্রমাণিত। কিন্তু কোন ভয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসন সাজিদের খুনিদের গ্রেফতার করতে পারছে না? সাজিদের হত্যাকারীদের বিচার করতে না পারলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লাল কার্ড দেখাতে আমরা বাধ্য হব।
গ্রীন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির সদস্য ছিলাম আমি। আমরা নির্ধারিত সময়ে সর্বোচ্চ পরিশ্রম করে রিপোর্ট জমা দিয়েছি। ভেবেছিলাম রিপোর্ট দেওয়ার পরে দ্রুত একটি সুষ্ঠু সমাধান হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, বিচার দাবিতে এখনো ছাত্রদেরকে আন্দোলনে নামতে হচ্ছে। পাঁচ মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পরও সিআইডি কেন প্রকৃত সত্য সামনে আনতে পারছে না? আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানাচ্ছি।
জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির আহ্বায়ক ছিলাম আমি। দ্রুত সময়ের মধ্যেই রিপোর্ট জমা দিয়েছি। কিন্তু ৬ মাস পার হলেও খুনিদের গ্রেফতারে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিশ্বাসের সংকট তৈরি করেছে। সাজিদের হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত ইবির পবিত্র মাটি কলঙ্কমুক্ত হবে না। এত দীর্ঘ সময় লাগার পেছনে কারো ব্যক্তিগত স্বার্থ বা নেপথ্যে প্রভাব থাকতে পারে।
সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান বলেন, সাজিদ ছিলেন জুলাই অভ্যুত্থানের অগ্রনায়ক। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো চিহ্নিত ফ্যাসিস্টদের পদে রেখে বৈষম্যমূলকভাবে চলছে। শিক্ষক সমাজ এক বছর ধৈর্য ধরে পর্যবেক্ষণ করেছে, তবে এখন আর ধৈর্য ধরে রাখা সম্ভব নয়। সাজিদ আব্দুল্লাহ হত্যার ১৪৫ দিন পার হলেও তদন্তে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। যা প্রশাসনের ইচ্ছাকৃত বিলম্ব হতে পারে। চিহ্নিত ব্যক্তিদের আড়াল করার জন্য প্রশাসন গড়িমসি করছে, এটি প্রশাসনের ব্যর্থতা।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন, ইউট্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হোসেন, সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান, গ্রীন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ, সদস্যসচিব মাসুদ রুমি মিথুন, ছাত্রশিবির সেক্রেটারি ইউসুব আলী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক এস এম সুইট, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত এবং জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার সেক্রেটারি এস এম শামীমসহ অন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হল পুকুর থেকে আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ বর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদের লাশ উদ্ধার করা হয়। ভিসেরা রিপোর্ট অনুযায়ী সাজিদকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
ইরফান উল্লাহ/এনএইচআর/এমএস
What's Your Reaction?