উত্তর কোরিয়ার এজেন্ট সন্দেহে ১৮০০ চাকরির আবেদন আটকালো অ্যামাজন

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন উত্তর কোরিয়ার সন্দেহভাজন এজেন্টদের পাঠানো ১৮০০টিরও বেশি চাকরির আবেদন আটকে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির একজন শীর্ষ নির্বাহী। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। লিঙ্কডইনে দেওয়া এক পোস্টে অ্যামাজনের চিফ সিকিউরিটি অফিসার স্টিফেন শ্মিট জানান, উত্তর কোরিয়ার নাগরিকরা চুরি করা বা ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে রিমোট আইটি চাকরির জন্য আবেদন করার চেষ্টা করছিল। স্টিফেন শ্মিট বলেন, তাদের উদ্দেশ্য সাধারণত খুব স্পষ্ট- চাকরি পাওয়া, বেতন নেওয়া এবং সেই অর্থ উত্তর কোরিয়ার শাসকগোষ্ঠীর অস্ত্র কর্মসূচিতে পাঠানো। তিনি আরও যোগ করেন, এই প্রবণতা শুধু অ্যামাজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে পুরো প্রযুক্তি খাতজুড়েই ব্যাপক পরিসরে এমন ঘটনা ঘটছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ আগেই সতর্ক করেছিল যে, পিয়ংইয়ং-এর এজেন্টরা অনলাইনে নানা ধরনের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। স্টিফেন শ্মিট তার পোস্টে জানান, গত এক বছরে অ্যামাজনে উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের চ

উত্তর কোরিয়ার এজেন্ট সন্দেহে ১৮০০ চাকরির আবেদন আটকালো অ্যামাজন

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যামাজন উত্তর কোরিয়ার সন্দেহভাজন এজেন্টদের পাঠানো ১৮০০টিরও বেশি চাকরির আবেদন আটকে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির একজন শীর্ষ নির্বাহী। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিতে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়।

লিঙ্কডইনে দেওয়া এক পোস্টে অ্যামাজনের চিফ সিকিউরিটি অফিসার স্টিফেন শ্মিট জানান, উত্তর কোরিয়ার নাগরিকরা চুরি করা বা ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে রিমোট আইটি চাকরির জন্য আবেদন করার চেষ্টা করছিল।

স্টিফেন শ্মিট বলেন, তাদের উদ্দেশ্য সাধারণত খুব স্পষ্ট- চাকরি পাওয়া, বেতন নেওয়া এবং সেই অর্থ উত্তর কোরিয়ার শাসকগোষ্ঠীর অস্ত্র কর্মসূচিতে পাঠানো। তিনি আরও যোগ করেন, এই প্রবণতা শুধু অ্যামাজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে পুরো প্রযুক্তি খাতজুড়েই ব্যাপক পরিসরে এমন ঘটনা ঘটছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষ আগেই সতর্ক করেছিল যে, পিয়ংইয়ং-এর এজেন্টরা অনলাইনে নানা ধরনের প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে।

স্টিফেন শ্মিট তার পোস্টে জানান, গত এক বছরে অ্যামাজনে উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের চাকরির আবেদন প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বেড়েছে।

তিনি বলেন, এসব অপারেটিভ সাধারণত ‘ল্যাপটপ ফার্ম’ পরিচালনাকারীদের সঙ্গে কাজ করে। ল্যাপটপ ফার্ম বলতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কম্পিউটার বোঝানো হয়, যেগুলো বিদেশ থেকে দূরবর্তীভাবে পরিচালিত হয়।

অ্যামাজন চাকরির আবেদন যাচাই করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) টুল এবং নিজেদের কর্মীদের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই- এই দুই পদ্ধতির সমন্বয় ব্যবহার করেছে বলে জানান শ্মিট।

তার মতে, এই ধরনের প্রতারকদের কৌশল দিন দিন আরও জটিল হয়ে উঠছে।

স্টিফেন শ্মিট বলেন, অসৎ চক্রগুলো ফাঁস হওয়া লগইন তথ্য ব্যবহার করে দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয় থাকা লিঙ্কডইন অ্যাকাউন্ট হাইজ্যাক করছে, যাতে সেগুলো যাচাইকৃত বলে মনে হয়। তারা প্রকৃত সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের লক্ষ্য করে নিজেদের বিশ্বাসযোগ্য হিসেবে তুলে ধরছে। তিনি সন্দেহজনক চাকরির আবেদন কর্তৃপক্ষকে জানাতে প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

তিনি নিয়োগদাতাদের সতর্ক করে বলেন, উত্তর কোরিয়ার ভুয়া চাকরির আবেদনের কিছু লক্ষণ রয়েছে- যেমন ভুল ফরম্যাটে ফোন নম্বর দেওয়া, শিক্ষা-সংক্রান্ত তথ্যের সঙ্গে অসামঞ্জস্য থাকা ইত্যাদি।

চলতি বছরের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্র সরকার জানায়, তারা দেশজুড়ে অবৈধভাবে পরিচালিত ২৯টি ‘ল্যাপটপ ফার্ম’-এর সন্ধান পেয়েছে, যেগুলো উত্তর কোরিয়ার আইটি কর্মীরা চালাচ্ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ (ডিওজে) জানায়, এসব ফার্মে মার্কিন নাগরিকদের চুরি করা বা জাল পরিচয় ব্যবহার করে উত্তর কোরিয়ার নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেতে সহায়তা করা হতো।

এই ঘটনায় উত্তর কোরিয়ার অপারেটিভদের চাকরি নিশ্চিত করতে সহায়তাকারী মার্কিন দালালদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ গঠন করেছে ডিওজে।

গত জুলাই মাসে অ্যারিজোনার এক নারীকে আট বছরেরও বেশি কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তিনি ৩০০টির বেশি মার্কিন প্রতিষ্ঠানে উত্তর কোরিয়ার আইটি কর্মীদের রিমোট চাকরি পাইয়ে দিতে একটি ল্যাপটপ ফার্ম পরিচালনা করতেন।

ডিওজে জানায়, এই চক্রের মাধ্যমে ওই নারী এবং পিয়ংইয়ং মোট ১ কোটি ৭০ লাখ ডলার, যা ব্রিটিশ মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ২৬ লাখ পাউন্ড, অবৈধভাবে আয় করেছে।

সূত্র: বিবিসি

এসএএইচ

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow