এইচআইভি পজিটিভ হলেই জীবন এখন আর থেমে যায় না
এইচআইভি শব্দটি শুনলেই আমাদের সমাজে এখনো ভয়, লজ্জা আর নানা ভুল ধারণার দেয়াল দাঁড়িয়ে যায়। অনেকেই মনে করেন, এই রোগ ধরা পড়া মানেই জীবন শেষ। কিন্তু চিকিৎসা–বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক অগ্রগতি পুরো চিত্রটাই বদলে দিয়েছে। এখন এইচআইভি শনাক্ত হলেও একজন রোগী ঠিকমতো চিকিৎসা নিলে স্বাভাবিক মানুষের মতোই দীর্ঘ ও সুস্থ জীবন কাটাতে পারেন। চিকিৎসকরা বলছেন, আজকের এই অগ্রগতির মূল চাবিকাঠি হলো অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি (এআরটি)। একসময় যেখানে রোগীদের দিনে ১০–১৫টি ওষুধ খেতে হতো, সেখানে এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে একটি মাত্র ওষুধ একজন এইচআইভি আক্রান্ত রোগীর জীবন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম। নিয়মিত এআরটি নিলে ভাইরাল লোড এতটাই কমে যায় যে রক্ত পরীক্ষায় ভাইরাস প্রায় ধরা পড়ে না। এটাকেই বলা হয় আনডিটেকটেবল বা আনট্রান্সমিটেবল। অর্থাৎ ভাইরাস শনাক্ত না হলে যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে অন্যকে সংক্রমণ দেওয়ার ঝুঁকিও প্রায় শূন্য। এ উন্নতি শুধু চিকিৎসাকেই বদলায়নি, বদলে দিয়েছে রোগী ও সমাজের ধারণা। আগে যেখানে এইচআইভি মানেই ছিল জীবন থেমে যাওয়া, সেখানে এখন এই চিকিৎসা রোগটিকে ‘নিয়ন্ত্রিত দীর্ঘমেয়াদি অসুখ’এ রূপ দিয়েছে। এটি এখন ডায়াবেটিস, উচ্চ র
এইচআইভি শব্দটি শুনলেই আমাদের সমাজে এখনো ভয়, লজ্জা আর নানা ভুল ধারণার দেয়াল দাঁড়িয়ে যায়। অনেকেই মনে করেন, এই রোগ ধরা পড়া মানেই জীবন শেষ। কিন্তু চিকিৎসা–বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক অগ্রগতি পুরো চিত্রটাই বদলে দিয়েছে।
এখন এইচআইভি শনাক্ত হলেও একজন রোগী ঠিকমতো চিকিৎসা নিলে স্বাভাবিক মানুষের মতোই দীর্ঘ ও সুস্থ জীবন কাটাতে পারেন।
চিকিৎসকরা বলছেন, আজকের এই অগ্রগতির মূল চাবিকাঠি হলো অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি (এআরটি)। একসময় যেখানে রোগীদের দিনে ১০–১৫টি ওষুধ খেতে হতো, সেখানে এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে একটি মাত্র ওষুধ একজন এইচআইভি আক্রান্ত রোগীর জীবন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম। নিয়মিত এআরটি নিলে ভাইরাল লোড এতটাই কমে যায় যে রক্ত পরীক্ষায় ভাইরাস প্রায় ধরা পড়ে না। এটাকেই বলা হয় আনডিটেকটেবল বা আনট্রান্সমিটেবল।
অর্থাৎ ভাইরাস শনাক্ত না হলে যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে অন্যকে সংক্রমণ দেওয়ার ঝুঁকিও প্রায় শূন্য।
এ উন্নতি শুধু চিকিৎসাকেই বদলায়নি, বদলে দিয়েছে রোগী ও সমাজের ধারণা। আগে যেখানে এইচআইভি মানেই ছিল জীবন থেমে যাওয়া, সেখানে এখন এই চিকিৎসা রোগটিকে ‘নিয়ন্ত্রিত দীর্ঘমেয়াদি অসুখ’এ রূপ দিয়েছে। এটি এখন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ কিংবা থাইরয়েডের মতোই নিয়মিত চিকিৎসা–নির্ভর একটি অবস্থা।
বাংলাদেশে চিকিৎসা ও গোপনীয়তা
বাংলাদেশে সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এখন গোপনীয়তা রক্ষা করে এইচআইভি পরীক্ষা ও এআরটি নেওয়ার সুযোগ আছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—
>> লক্ষণ না থাকলেও পরীক্ষা
এইচআইভি সাধারণত শুরুতে কোনো লক্ষণ দেখায় না। ফলে দেরি করে ধরা পড়লে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে গিয়ে এইডসের দিকে এগোতে পারে। কিন্তু সময়মতো ধরা পড়লে এআরটি রোগীকে পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দেয়।
>> বিয়ে, সন্তান—সবই সম্ভব
অনেকে এখনো ধরে নেন, এইচআইভি পজিটিভ হলে বিয়ে বা সন্তান নেওয়া অসম্ভব। এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে এআরটি নেওয়ার সময় দম্পতি নিরাপদে সন্তান নেওয়া, স্বাভাবিক যৌন জীবন বজায় রাখা — সবই সম্ভব।
>> সচেতনতাই সবচেয়ে বড় ঢাল
এইচআইভি একটি স্বাস্থ্যগত অবস্থা। মানুষ লজ্জা পায়, টেস্ট করতে ভয় পায়, তাই রোগটি অজান্তে ছড়িয়ে পড়ে। তাই আজ, ১ ডিসেম্বর, বিশ্ব এইডস দিবস বার্তা দেয় — ভুল ধারণা নয়, সচেতনতা, পরীক্ষা ও নিয়মিত চিকিৎসাই নিরাপদ ভবিষ্যৎ।
সূত্র: ইউএনএইডস ২০২৩ রিপোর্ট; বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা–হিভি গ্লোবাল আপডেট ২০২৪; সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)–এইচআইভি ট্রিটমেন্ট গাইডলাইন ২০২৪
এএমপি/এমএস
What's Your Reaction?