এক নজরে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি স্বাধীন রাষ্ট্র যার সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। রাজধানী ঢাকা এবং প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র চট্টগ্রাম। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা এবং ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। দেশটির ভূপ্রকৃতি নদীনির্ভর এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ। সুন্দরবন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন ও রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রধান আবাসস্থল। এছাড়া রয়েছে চা বাগানের সবুজ পাহাড়, পাহাড়পুর ও মহাস্থানগড়ের প্রাচীন নগরসভ্যতার নিদর্শন এবং উপকূলীয় অঞ্চলের বৈচিত্র্যময় জীববৈচিত্র্য। জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। রাষ্ট্রভাষা বাংলা, যা দেশের সংস্কৃতি শিল্প সাহিত্য এবং সামষ্টিক পরিচয়ের মূলভিত্তি। বাংলাদেশের সমাজ বহুধারায় গঠিত, যেখানে মুসলমানদের পাশাপাশি হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টানসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও জাতিগত গোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করে। মুদ্রার নাম টাকা। অর্থনীতির আকার বর্তমানে প্রায় ৪৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং মাথাপিছু আয় প্রায় ২৮২০ মার্কিন ডলার। দেশের পরিবহন খাতে রয়েছে ২৬ হাজার কিলোমিটারের বেশি সড়কপথ, প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার রেলপথ এবং ৮

এক নজরে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি স্বাধীন রাষ্ট্র যার সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ। রাজধানী ঢাকা এবং প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র চট্টগ্রাম। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা এবং ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।

দেশটির ভূপ্রকৃতি নদীনির্ভর এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ। সুন্দরবন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন ও রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রধান আবাসস্থল। এছাড়া রয়েছে চা বাগানের সবুজ পাহাড়, পাহাড়পুর ও মহাস্থানগড়ের প্রাচীন নগরসভ্যতার নিদর্শন এবং উপকূলীয় অঞ্চলের বৈচিত্র্যময় জীববৈচিত্র্য।

জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। রাষ্ট্রভাষা বাংলা, যা দেশের সংস্কৃতি শিল্প সাহিত্য এবং সামষ্টিক পরিচয়ের মূলভিত্তি। বাংলাদেশের সমাজ বহুধারায় গঠিত, যেখানে মুসলমানদের পাশাপাশি হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টানসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও জাতিগত গোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করে। মুদ্রার নাম টাকা।

অর্থনীতির আকার বর্তমানে প্রায় ৪৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং মাথাপিছু আয় প্রায় ২৮২০ মার্কিন ডলার। দেশের পরিবহন খাতে রয়েছে ২৬ হাজার কিলোমিটারের বেশি সড়কপথ, প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার রেলপথ এবং ৮ হাজার কিলোমিটারের বেশি নৌপথ, যা নদীমাতৃক ভূপ্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে।

পর্যটনের জন্য শ্রীমঙ্গল, রাঙ্গামাটি, কাপ্তাই এবং কক্সবাজার গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য। আর জাতীয় ইতিহাসের সাক্ষী ময়নামতি, মহাস্থানগড় এবং পাহাড়পুর আজও অতীতের সভ্যতা স্মরণ করিয়ে দেয়।

২০২৪ সালে দ্য ইকোনমিস্ট বাংলাদেশকে কান্ট্রি অব দ্য ইয়ার ঘোষণা করে, যা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী শাসনের পতনের স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত হয়। সেই গণঅভ্যুত্থানের সময়, নতুন প্রজন্মের চোখে যে স্বপ্ন জ্বলে উঠেছিল, সেই স্বপ্নের কিছুটা অংশ দুর্নীতির চক্রে ম্লান হয়ে গেছে। কিন্তু এই ভয়াবহ ঢেউ যদি আমরা সাহস, সংহতি এবং নৈতিকতার ঢাল দিয়ে সামলাতে পারি, তবে বাংলাদেশকে আমি দেখতে পারি একটি প্রাণবন্ত জাতি হিসেবে, যেখানে নাগরিকেরা শুধু অধিকার নয় দায়িত্বও বোধ করে, যেখানে স্বপ্ন আর বাস্তবতার মধ্যে সেতু স্থাপন হয় এবং যেখানে প্রতিটি নদী, প্রতিটি পাহাড়, প্রতিটি গ্রাম ও শহর একসাথে এগিয়ে আসে সুশাসন, ন্যায় এবং মানবিকতার পথে। এই দেশ হবে এমন এক শক্তিশালী বাংলাদেশ, যেখানে রাজনৈতিক সচেতনতা, সামাজিক সমতা এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতা মিলেমিশে একটি নতুন যুগের জন্ম দেবে।

বাংলাদেশ এমন এক নতুন ভবিষ্যতের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে যেখানে সংকট এবং সম্ভাবনা দুটিই পথ দেখাতে পারে। দেশটির ভৌগোলিক সৌন্দর্য তার প্রাণশক্তি এবং তার জনগণের দৃঢ়তা মিলেই আজকের বাংলাদেশকে গঠন করেছে। এখন প্রশ্ন হলো এই বাংলাদেশ কোন দিকে এগোবে এবং কী ধরনের বাংলাদেশ ভবিষ্যতে নিজেকে দেখতে চায়। জনগণের নৈতিক চেতনা এবং রাজনৈতিক সচেতনতা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অভাবনীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে যা রাষ্ট্রকাঠামোকে পুনর্গঠনের একটি বিরল সুযোগ এনে দিয়েছে। স্বাধীনতার পর প্রথমবার জনতার কণ্ঠস্বর রাষ্ট্রের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে।

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তিনটি বড় ভিত্তির ওপর রাষ্ট্রের নিজস্ব পুনর্বিন্যাস অর্থনীতির স্থায়িত্ব এবং নতুন খাতের উত্থান এবং সামাজিক ন্যায়বোধ মানবিক মূল্যবোধ এবং নাগরিক মর্যাদার প্রতিষ্ঠা। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা স্বাধীন বিচারব্যবস্থা এবং আত্মমর্যাদাসম্পন্ন জনগণ আগামী বছরের বাংলাদেশকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে।

বাংলাদেশের টিকে থাকার শক্তি তার মানুষ। নদীমাতৃক ভূপ্রকৃতি যুবসমাজের শক্তি প্রবাসী আয়ের ধারাবাহিকতা খাদ্য উৎপাদনের সক্ষমতা ডিজিটাল অগ্রগতি এগুলো বাংলাদেশের স্থায়িত্বের ভিত্তিকে শক্তিশালী করে। তবে জলবায়ু পরিবর্তন রাজনৈতিক অস্থিরতা ব্যাংকিং দুর্বলতা এবং দুর্নীতির মতো বাধাগুলো কাটিয়ে উঠতে না পারলে দেশকে বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। তাই টিকে থাকার মূল শর্ত হলো সুশাসন নীতি স্থিতিশীলতা এবং মানবিক মূল্যবোধনির্ভর রাষ্ট্র পরিচালনা।

যে আন্দোলন স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে সেটি ছিল নৈতিক পুনর্জাগরণ। বাংলাদেশের মানুষ ঘোষণা দিয়েছে যে তাদের রাষ্ট্র হবে মানবিকতা সমতা স্বাধীনতা এবং সামাজিক ন্যায়ের ভিত্তিতে দাঁড়ানো একটি রাষ্ট্র। নতুন প্রজন্ম বিশ্বাস করে রাষ্ট্র মানে মানুষের মর্যাদা ক্ষমতার প্রয়োগ মানে দায়িত্ব এবং ন্যায় বিচার মানে প্রতিশোধ নয় বরং সাম্য। এই নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিই আগামী দিনের বাংলাদেশকে পরিচালিত করবে।

বাংলাদেশ চায় একটি নিরাপদ স্বচ্ছ মানবিক এবং সমতা ভিত্তিক রাষ্ট্র যেখানে মানুষ চাকরি পাবে শিক্ষা সবার জন্য হবে স্বাস্থ্যসেবা সহজ হবে রাজনীতি সেবার স্থান হবে এবং যেখানে নাগরিক পরিচয় হবে সম্মান। বাংলাদেশ এমন একটি ভবিষ্যৎ চায় যেখানে সুন্দরবন রক্ষা পায় নদী পুনর্জাগরিত হয় কৃষি আরও শক্তিশালী হয় এবং পর্যটন বিশ্বে নতুন পরিচয় গড়ে তোলে। মানুষ এমন একটি বাংলাদেশ চায় যার উন্নয়ন মাটির সঙ্গে সংযুক্ত এবং যার স্বপ্ন বাস্তবতার সঙ্গে সংলাপ করে।

বাংলাদেশের ভবিষ্যতের সবচেয়ে বড় শক্তি হবে তার শিক্ষা ব্যবস্থা। প্রকৃত শিক্ষা মানুষের চিন্তা নৈতিকতা সৃজনশীলতা এবং মানবিক পুরুষার্থ গড়ে তুলবে এবং ক্রিকেটিভ শিক্ষা অর্থাৎ আধুনিক দক্ষতা প্রযুক্তি নির্ভর জ্ঞান বিজ্ঞান উদ্ভাবন এবং কর্মসংস্থানমুখী প্রশিক্ষণ তৈরি করবে নতুন কর্মশক্তি। এই দুই ধারার সমন্বিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের বিশাল জনসংখ্যা পরিণত হতে পারে রূপান্তরমুখী কর্মশক্তিতে যারা শুধু দেশের অর্থনীতিকে নয় বরং বিশ্ব অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে। যদি বাংলাদেশ এমন একটি শিক্ষা কাঠামো গড়ে তুলতে পারে যা মানুষের মেধাকে কার্যকর দক্ষতায় রূপান্তরিত করবে এবং সেই দক্ষতা আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা তৈরি করতে সক্ষম হবে তাহলে বাংলাদেশ হয়ে উঠবে বিশ্ব ভাজন জাতি যার কর্মদক্ষতা মানবিকতা এবং জ্ঞান দিয়ে বিশ্বকে নতুনভাবে অবাক করবে।

বাংলাদেশ তার অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করতে পারে যদি কূটনীতিকে মানবিকতা ভিত্তিক অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতার দিকে ধাবিত করে। দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা রক্ষা মানবিক সংকট মোকাবিলা জলবায়ু নিরাপত্তা এবং সমুদ্রভিত্তিক সহযোগিতায় বাংলাদেশ নেতৃত্ব গ্রহণের সক্ষমতা রাখে।

বাংলাদেশ আগামী পাঁচ বছরে প্রযুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষেত্রে বড় অগ্রগতি অর্জন করতে পারে। তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষা উদ্যোক্তা সংস্কৃতি এবং স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করতে পারলে বাংলাদেশ শুধু আঞ্চলিক নয় বৈশ্বিক প্রযুক্তি মানচিত্রে নিজ অবস্থান প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।

জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশের জন্য হুমকি হলেও এটি সুযোগও। নবায়নযোগ্য শক্তি নদী পুনরুদ্ধার সবুজ অর্থনীতি চাষাবাদের পরিবর্তনশীল ধরণ এবং উপকূলীয় উন্নয়ন নীতি বাংলাদেশকে ভবিষ্যতের টেকসই রাষ্ট্রে রূপান্তর করতে পারে।

সঠিক প্রশিক্ষণ সঠিক দক্ষতা এবং আন্তর্জাতিক মানের কর্মনৈতিকতা যদি বাংলাদেশ অর্জন করতে পারে তাহলে দেশের তরুণ প্রজন্ম বৈশ্বিক চাকরি বাজারে প্রতিযোগিতার শক্তিশালী শক্তিতে পরিণত হবে এবং এশিয়ার সবচেয়ে কর্মক্ষম মানবসম্পদ গড়ে তুলবে।

বাংলাদেশ শান্তি মানবিকতা পরিবেশ রাজনীতি এবং আঞ্চলিক বাণিজ্যে যদি ইতিবাচক ভূমিকা ধরে রাখতে পারে তাহলে দক্ষিণ এশিয়ার নতুন নেতৃত্ব হিসেবে আবির্ভূত হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।

বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি তার মানুষ। নেতৃত্ব যদি এই জনশক্তিকে সৎভাবে কাজে লাগাতে পারে এবং রাজনীতিকে নৈতিকতা ও জবাবদিহিতার ভিত্তিতে পুনর্গঠন করতে পারে তবে এই দেশ দক্ষিণ এশিয়ার নতুন শক্তির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে। তাই নতুন নেতৃত্ব তৈরি করা, জনগণের ওপর আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া শুধু রাজনৈতিক প্রয়োজন নয় বরং বাংলাদেশের ভৌগোলিক বাস্তবতা এবং বৈশ্বিক ভবিষ্যতের জন্য একটি অপরিহার্য জাতীয় দায়িত্ব।

এতক্ষনে জানা গেলো এক নজরে বাংলাদেশকে। এখন জেনে নেওয়া যাক এক নজরে বাংলাদেশিকে।

আমরা সবাই রাজনীতি নিয়ে সারাক্ষণ ব্যস্ত। সারাক্ষণ রাজনীতি নিয়ে কথা বলতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আমরা নিজেদের কোনো দোষ খুঁজে পাই না, আমরা মনে করি ‘যত দোষ নন্দ ঘোষের’। আমরা ভুল শিকার করতে রাজি নই। আমরা ঘুষ দিতে এবং নিতে পছন্দ করি। তেল মারা আমাদের জাতীয় চরিত্র। তেল মারতে মারতে ইলিশ মাছ, যা মূলত সাগরের এবং পরে পদ্মা নদীর মাছ, আমরা বসকে খুশি করতে সেটা নিজেদের পুকুর থেকে ধরে এনে তাকে দিয়ে থাকি। আমাদের কিছু করার নেই বললে ভুল হবে; গুজব রটানো, ‘পরো চর্চা এবং পরো নিন্দা’ করতে করতেই আমাদের সময় শেষ হয়ে যায়।

আমাদের জাতীগত মনোভাব অনেকটা জোয়ার-ভাটার মতো, কারণ বাংলাদেশ জোয়ার-ভাটার দেশ। এই জোয়ার এই ভাটা। আমাদের মনের ভাবও অনেকটা সেই রকম। আমরা কখন সত্য কথা বলি, কখন ইয়ারকি করি, কখন মিথ্যা বলি, কখন মন থেকে বলি বা কথার কথা বলি, সেটা বোঝা কঠিন।

হাডুডু আমাদের জাতীয় খেলা। খেলার মূল উদ্দেশ্য হলো প্রতিদ্বন্দ্বিকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে না দেওয়া, টেনে ধরে রাখা; বাস্তবতাও ঠিক তেমনি। আমাদের দেশে ইউরোপের মতো গাছের পাতা সব একসাথে ঝরে পড়ে না; পাতা ঝরে, পাতা গজায়। আমাদের স্বভাবও ঠিক তেমনি; কিছু একটা ঘটলে চলতে থাকে প‍্যাচাল, প্যাচালের শেষ নেই; সকাল, সন্ধ্যা, রাত একই প্যাচাল।

আমরা মনে মনে ভাবি বেশি, প্রকাশ করি কম। চিঠির প্রেমে এখনও মগ্ন, সরাসরি বলি না; ইনিয়ে-বিনিয়ে কথা বলতে পছন্দ করি প্রেমের ক্ষেত্রে। আবহাওয়া যেমন, এই বৃষ্টি, এই রোদ, আমরাও ঠিক তেমন। এই মুহূর্তে ঝগড়া, পরের মুহূর্তে মিল। আমাদের ঈমান খুব শক্তিশালী, আবার একই সাথে বেঈমানও বটে, চগলখোর এবং নেমক হারামও। যদি কখনও কারো উপকার করেছেন, তখন বুঝবেন কত ‘ধানে কত চাল’। কারণ হঠাৎ যদি সাহায্য করা বন্ধ করেন, খেলা তখনই শুরু হয়, আপনার মতো খারাপ মানুষ পৃথিবীতে আর নেই।

আমরা জানি পৃথিবী ঘোরে, বিধায় আমরাও মানুষকে ঘোরাতে পছন্দ করি। এটা আমাদের জাতীয় অভ্যাস। বিশেষ করে টাকা ধার দিলে বোঝা যায় কীভাবে ঘোরানো হয়, ঘোরানো কত প্রকার এবং কি কি। আমরা দুর্নীতিকে নীতি হিসেবে ব্যবহার করি, যখন ব্যক্তি স্বার্থ জড়িত। আমরা বেশি মিথ্যা কথা বলি কেউ টাকা ধার চাইতে আসলে। এটা আমরা জানি বলেই ধারটা চাই, বেশির ভাগ সময় মসজিদের মধ্যে। আপনি যে জিনিসটা না চাইতে পাবেন, সেটা হলো উপদেশ। যে ভিক্ষা করে, সেই ভিকারিও আপনাকে নানাভাবে উপদেশ দেবে। আপনি অসুস্থ? সমস্যা? পরামর্শের প্রয়োজন? ঠিকানা বাংলাদেশ। দোওয়ার দরকার, ভাগ্যের পরিবর্তন প্রয়োজন? একজন ভিক্ষুককে সাহায্য করুন; দেখবেন আপনার জন্য সুপারিশ করবে আল্লাহর কাছে, যেন তিনি আপনাকে সম্পদের পাহাড় দিয়ে দেন।

এত কিছুর পরও সত্য কথা বলতে আমরা মাল খারাপ না; দেখবেন আমাদের দাড়ি পেকে সাদা হয়ে গেছে, কারণ কি জানেন? ভালো হবার সময় আমাদের আছে।

রহমান মৃধা, গবেষক এবং লেখক, প্রাক্তন পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
[email protected]

এমআরএম/জেআইএম

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow