এশিয়ার একদিকে বৃষ্টি-বন্যা অন্যদিকে খরা, দুর্যোগে ওষ্ঠাগত প্রাণ

এশিয়ার একদিকে বৃষ্টি-বন্যা, অন্যদিকে চলছে তীব্র খরা। এমন বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক দুর্যোগে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে মানুষের প্রাণ। গত এক সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় ঝড়-বন্যা ও ভূমিধসে কমপক্ষে ১ হাজার ১০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, ইরানে আরও তীব্র হয়ে উঠেছে পানির সংকট। একসঙ্গে চার দেশে বন্যা ইন্দোনেশিয়ায় সুমাত্রা দ্বীপে ঘূর্ণিঝড় সেনইয়ারের প্রভাবে ভয়ংকর ভূমিধস ও বন্যা দেখা দিয়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এই দুর্যোগে অন্তত ৬০৪ জন নিহত হয়েছেন, নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৪৬০ জন। উদ্ধারকর্মীরা বন্যাকবলিত এলাকায় পৌঁছাতে হিমশিম খাচ্ছেন। কিছু মানুষ বেঁচে থাকার জন্য খাবার ও পানি চুরি করতে বাধ্য হচ্ছেন। থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে ১৭৬ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। এই দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২৮ লাখ মানুষ। স্থানীয় সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে এবং হেলিকপ্টার ব্যবহার করে খাবার ও চিকিৎসা সরবরাহ করছে। আরও পড়ুন>>এশিয়ায় হঠাৎ দুর্যোগের ঘনঘটা, দেশে দেশে বাড়ছে প্রাণহানিএশিয়ায় এক সপ্তাহেই হাজার মানুষের প্রাণ নিলো বিধ্বংসী বন্যানজিরবিহীন খরার কবলে ইরান, লোকশূন্য হতে পারে তেহরান শ্রীলঙ্কায় ঘূর্ণি

এশিয়ার একদিকে বৃষ্টি-বন্যা অন্যদিকে খরা, দুর্যোগে ওষ্ঠাগত প্রাণ

এশিয়ার একদিকে বৃষ্টি-বন্যা, অন্যদিকে চলছে তীব্র খরা। এমন বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক দুর্যোগে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে মানুষের প্রাণ। গত এক সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় ঝড়-বন্যা ও ভূমিধসে কমপক্ষে ১ হাজার ১০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, ইরানে আরও তীব্র হয়ে উঠেছে পানির সংকট।

একসঙ্গে চার দেশে বন্যা

ইন্দোনেশিয়ায় সুমাত্রা দ্বীপে ঘূর্ণিঝড় সেনইয়ারের প্রভাবে ভয়ংকর ভূমিধস ও বন্যা দেখা দিয়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এই দুর্যোগে অন্তত ৬০৪ জন নিহত হয়েছেন, নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৪৬০ জন। উদ্ধারকর্মীরা বন্যাকবলিত এলাকায় পৌঁছাতে হিমশিম খাচ্ছেন। কিছু মানুষ বেঁচে থাকার জন্য খাবার ও পানি চুরি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে ১৭৬ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। এই দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২৮ লাখ মানুষ। স্থানীয় সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে এবং হেলিকপ্টার ব্যবহার করে খাবার ও চিকিৎসা সরবরাহ করছে।

আরও পড়ুন>>
এশিয়ায় হঠাৎ দুর্যোগের ঘনঘটা, দেশে দেশে বাড়ছে প্রাণহানি
এশিয়ায় এক সপ্তাহেই হাজার মানুষের প্রাণ নিলো বিধ্বংসী বন্যা
নজিরবিহীন খরার কবলে ইরান, লোকশূন্য হতে পারে তেহরান

শ্রীলঙ্কায় ঘূর্ণিঝড় দিতওয়ার কারণে ৩৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে, নিখোঁজ রয়েছেন ৩৫২ জন। এক লাখ ৪৭ হাজার মানুষ অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে খাবার ও দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রদান করা হচ্ছে।

মালয়েশিয়ায় ঘূর্ণিঝড় সেনইয়ারের কারণে দুইজনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রায় ৩৪ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ইরানে তীব্র খরা

দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই চার দেশে প্রবল বৃষ্টি-বন্যা হলেও ঠিক বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে পশ্চিম এশিয়ার দেশ ইরানে। সেখানে তীব্র খরায় সীমাহীন দুর্ভোগে ভুগছে মানুষ। রাজধানী তেহরানের মূল জলাধারগুলো মাত্র ১১ শতাংশ পূর্ণ, আর আমির কাবির ও লাটিয়ান বাঁধ প্রায় শুকিয়েই গেছে।

প্রায় দুই কোটি মানুষ পানির জন্য চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। সরকারি উদ্যোগে পানি সংরক্ষণ, কৃত্রিম বৃষ্টি এবং আংশিক ছুটি ঘোষণা করা হলেও পরিস্থিতি এখনো সঙ্গীন।

দায়ী জলবায়ু পরিবর্তন

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এশিয়ায় চলমান এই বন্যা ও খরা জলবায়ু পরিবর্তনেরই প্রভাব। অতীতের তুলনায় এসব দুর্যোগ এখন বেশি ঘন ঘন, বেশি তীব্র এবং বেশি অপ্রত্যাশিতভাবে ঘটছে। এতে একদিকে যেমন প্রাণহানি বাড়ছে, অন্যদিকে কৃষি, বাসস্থান, অবকাঠামো এবং দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিও বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে পড়ছে। তাই শুধু তাৎক্ষণিক ক্ষতি কমানো নয়, দীর্ঘমেয়াদে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে সমন্বিত পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।

সূত্র: সিএনএন
কেএএ/

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow