কামিন্সের পরামর্শেই ওপেনিংয়ে নামেন হেড

পার্থের প্রথম অ্যাশেজ টেস্টে যেন সবকিছুই ঘটল চোখের পলকে—ইংল্যান্ডের স্বল্প লিড, অস্ট্রেলিয়ার পেস ঝড়, তারপর আরও অবাক করা এক সিদ্ধান্ত। ইনজুরিতে ছিটকে যাওয়া উসমান খাজারার জায়গায় হঠাৎ ওপেনিংয়ে উঠে এলেন ট্রাভিস হেড। ড্রেসিংরুমের ভেতর এক ‘ক্যাজুয়াল’ আলোচনা থেকে জন্ম নেওয়া সেই ভাবনা দুই দিনের টেস্টেই ম্যাচ-পরিবর্তনকারী সিদ্ধান্তে রূপ নিল। ৬৯ বলে সেঞ্চুরি, মাত্র ৮৩ বলে ১২৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস—এতেই শেষ হয়ে গেল ইংল্যান্ডের প্রতিরোধ। তবে কীভাবে এল সেই সিদ্ধান্ত? অস্ট্রেলিয়ার ইনজুরিতে থাকা অধিনায়ক প্যাট কামিন্স প্রথম ধারণাটা দেন—ইংল্যান্ডের শর্ট-বল পরিকল্পনার মোকাবিলায় নতুন ওপেনিং জুটি চেষ্টা করা যায় কি না। মাথা তুললেন হেড, কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ডও রাজি। আর মাঠের দায়িত্বে থাকা স্টিভ স্মিথ তো শোনামাত্রই বললেন, “যা, নিজের মতো খেল—গো ফর ইউর লাইফ।” হেড পরে হাসতে হাসতেই বললেন, “দুই বছর ধরেই নাকি ঠিক করেছিলাম! সত্যি বলতে, আমাকে এটা করতে বললে কখনো সমস্যা নেই। কয়েকটা নাম ঘুরেফিরে এসেছিল—মার্নাসও ওপেন করতে পারত। কিন্তু পরিকল্পনা ছিল পরিষ্কার—শুরুতেই আক্রমণ।” হেড ঠিক হাজার গজ দূর থেকেই জানতেন ইংল্য

কামিন্সের পরামর্শেই ওপেনিংয়ে নামেন হেড

পার্থের প্রথম অ্যাশেজ টেস্টে যেন সবকিছুই ঘটল চোখের পলকে—ইংল্যান্ডের স্বল্প লিড, অস্ট্রেলিয়ার পেস ঝড়, তারপর আরও অবাক করা এক সিদ্ধান্ত। ইনজুরিতে ছিটকে যাওয়া উসমান খাজারার জায়গায় হঠাৎ ওপেনিংয়ে উঠে এলেন ট্রাভিস হেড। ড্রেসিংরুমের ভেতর এক ‘ক্যাজুয়াল’ আলোচনা থেকে জন্ম নেওয়া সেই ভাবনা দুই দিনের টেস্টেই ম্যাচ-পরিবর্তনকারী সিদ্ধান্তে রূপ নিল। ৬৯ বলে সেঞ্চুরি, মাত্র ৮৩ বলে ১২৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংস—এতেই শেষ হয়ে গেল ইংল্যান্ডের প্রতিরোধ।

তবে কীভাবে এল সেই সিদ্ধান্ত? অস্ট্রেলিয়ার ইনজুরিতে থাকা অধিনায়ক প্যাট কামিন্স প্রথম ধারণাটা দেন—ইংল্যান্ডের শর্ট-বল পরিকল্পনার মোকাবিলায় নতুন ওপেনিং জুটি চেষ্টা করা যায় কি না। মাথা তুললেন হেড, কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ডও রাজি। আর মাঠের দায়িত্বে থাকা স্টিভ স্মিথ তো শোনামাত্রই বললেন, “যা, নিজের মতো খেল—গো ফর ইউর লাইফ।”

হেড পরে হাসতে হাসতেই বললেন, “দুই বছর ধরেই নাকি ঠিক করেছিলাম! সত্যি বলতে, আমাকে এটা করতে বললে কখনো সমস্যা নেই। কয়েকটা নাম ঘুরেফিরে এসেছিল—মার্নাসও ওপেন করতে পারত। কিন্তু পরিকল্পনা ছিল পরিষ্কার—শুরুতেই আক্রমণ।”

হেড ঠিক হাজার গজ দূর থেকেই জানতেন ইংল্যান্ড কী করতে যাচ্ছে—অবিরাম বাউন্সার, শর্ট লেংথের ঝড়।

“শুরুতেই ওরা পরীক্ষা নেবে জানতাম। বাতাসের দিকটা কাজে লাগিয়ে খেলেছি, জায়গা বানিয়েছি। প্রথম ২০ বল ঠিকমতো বুঝতেই পারছিলাম না কী হচ্ছে,”—বললেন তিনি।

কিন্তু যখন বুঝলেন, তখন পুরো পার্থ স্টেডিয়ামই দেখল ‘বাজবল’-এর বিপরীতমুখী এক পাল্টা আঘাত। ৩৬ বলে ফিফটি, তারপর আরও দ্রুত গতি, ১৬ চার, ৪ ছক্কা—ইংলিশ পেসাররা শুধু দেখল বল কোথায় যাচ্ছে।

হেড নিজেই জানতেন না সেঞ্চুরি হবে কিনা। “গতকাল ব্যাটিংটা দারুণ কঠিন মনে হয়েছিল। এখানে আগেও কিছু ৯০ করেছি, নষ্টও করেছি। তাই শতকের কথা ভাবিনি।”

টেস্টটা মোটে ১১৩ ওভার স্থায়ী হয়েছে—৩০ উইকেট, মাত্র ৪৬৮ রান। দুই দলের পেসাররা তাণ্ডব চালিয়েছেন। মিচেল স্টার্ক পুরো ম্যাচে নিয়েছেন ১০ উইকেট, স্কট বোল্যান্ডের এক স্পেলেই ইংল্যান্ডের ৬৫-১ থেকে ৮৮-৬।

৪০ রানের লিড নিয়ে ২০৫ রানের লক্ষ্য দেয় ইংল্যান্ড। আর সেই লক্ষ্য তাড়ায়ই অস্ট্রেলিয়ার ‘মোমেন্টাম চালিত’ সিদ্ধান্ত—ওপেনিংয়ে হেড। তিনি আঘাত হানেন শুরু থেকেই, আউট হওয়ার আগেই ম্যাচ প্রায় নিশ্চিত। ৫১ রানে অপরাজিত মার্নাস আর অধিনায়ক স্মিথ মিলে শেষ করেন রানতাড়া—স্কোরবোর্ডে ২০৫/২।

হেডের ভাষায়, “এখনও প্রক্রিয়া করতে পারছি না—এই দুই দিন যেন চোখের পলকে। সিরিজ শুরুর এমন শুরু সত্যিই বিশেষ।”

স্টেডিয়ামের দর্শকদের জন্য অবশ্য একটু মনঃখারাপ মন্তব্যও করলেন তিনি—
“কালকেও যারা টিকিট কিনেছিল, তাদের জন্য একটু খারাপ লাগছে!”

এখন সামনে ব্রিসবেনের গ্যাব্বা—৪ ডিসেম্বর শুরু হবে দ্বিতীয় টেস্ট। অস্ট্রেলিয়া ১-০তে এগিয়ে, আর ট্রাভিস হেড এই সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম বড় অস্ত্র হয়ে উঠলেন এক ঝলকেই।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow