কায়রোতে ডি-৮ মঞ্চে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের সাফল্য উপস্থাপন

মিশরের নতুন প্রশাসনিক রাজধানী নিউ কায়রোতে অনুষ্ঠিত প্রথম ডি-৮ স্বাস্থ্যমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে বাংলাদেশ তার স্বাস্থ্য খাতের সাফল্য, উদ্ভাবন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছে। এ উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর। তিনি সম্মেলনে জানান, আলমা-আতা ঘোষণার অন্যতম স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অনেক আগেই প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে জাতীয় স্বাস্থ্যব্যবস্থার কেন্দ্রে স্থান দিয়েছে। বর্তমানে দেশের ১৪ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক জনসাধারণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছে। এর ফলে মাতৃমৃত্যু ৭০ শতাংশ ও শিশুমৃত্যু ৬০ শতাংশ কমে এসেছে এবং গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩ বছর। যা সীমিত সম্পদের একটি দেশের জন্য বিশ্বমানের অর্জন বলে অভিহিত করেন তিনি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচি বর্তমানে ৯৫ শতাংশের বেশি কভারেজ ধরে রেখেছে, যা বৈশ্বিকভাবে সবচেয়ে সফল মডেলগুলোর একটি। এছাড়া দেশজুড়ে ৪০০টির বেশি এনসিডি কর্নার স্থাপন এবং ৩৫টি মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে অ-সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে বড় অগ্রগতি অর্জিত

কায়রোতে ডি-৮ মঞ্চে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের সাফল্য উপস্থাপন

মিশরের নতুন প্রশাসনিক রাজধানী নিউ কায়রোতে অনুষ্ঠিত প্রথম ডি-৮ স্বাস্থ্যমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে বাংলাদেশ তার স্বাস্থ্য খাতের সাফল্য, উদ্ভাবন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছে।

এ উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর।

তিনি সম্মেলনে জানান, আলমা-আতা ঘোষণার অন্যতম স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অনেক আগেই প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে জাতীয় স্বাস্থ্যব্যবস্থার কেন্দ্রে স্থান দিয়েছে। বর্তমানে দেশের ১৪ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক জনসাধারণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিচ্ছে। এর ফলে মাতৃমৃত্যু ৭০ শতাংশ ও শিশুমৃত্যু ৬০ শতাংশ কমে এসেছে এবং গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩ বছর। যা সীমিত সম্পদের একটি দেশের জন্য বিশ্বমানের অর্জন বলে অভিহিত করেন তিনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচি বর্তমানে ৯৫ শতাংশের বেশি কভারেজ ধরে রেখেছে, যা বৈশ্বিকভাবে সবচেয়ে সফল মডেলগুলোর একটি। এছাড়া দেশজুড়ে ৪০০টির বেশি এনসিডি কর্নার স্থাপন এবং ৩৫টি মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে অ-সংক্রামক রোগ প্রতিরোধে বড় অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে।
কমিউনিটি পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা অন্তর্ভুক্ত করা এবং টেলিহেলথ সেবা সম্প্রসারণকেও তিনি বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবে তুলে ধরেন।

অধ্যাপক জাফর বলেন, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আরও স্থিতিস্থাপক স্বাস্থ্যব্যবস্থা গঠনে কাজ করছে। সাম্প্রতিক যৌথ বাহ্যিক মূল্যায়ন (জেইই) শেষে নতুন পাঁচ বছরের জাতীয় স্বাস্থ্য নিরাপত্তা কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন চলছে। অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স মোকাবিলাতেও বাংলাদেশ নিবিড়ভাবে কাজ করছে‌ জানিয়ে প্রতিটি নাগরিকের জন্য শিগগিরই ইউনিক হেলথ আইডি চালুর ঘোষণা দেন তিনি।

তিনি জানান, বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প বর্তমানে দেশের ৯৮ শতাংশ চাহিদা পূরণ করছে এবং ১৬০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। যা আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবাজারে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করেছে।

ডি-৮ সদস্যদের জন্য বাংলাদেশের চারটি যৌথ উদ্যোগের প্রস্তাব করেন‌ অধ্যাপক জাফর। এগুলো হলো যৌথ গবেষণা, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও ভ্যাকসিন-ওষুধ উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ডি-৮ ফার্মাসিউটিক্যাল ও ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স; ডিজিটাল স্বাস্থ্য উদ্ভাবন ও তথ্যভিত্তিক রূপান্তরে যৌথ অগ্রযাত্রার জন্য ডি-৮ ডিজিটাল হেলথ কোলাবোর‍্যাটিভ; জলবায়ু অভিযোজন, জরুরি প্রস্তুতি ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের উদ্দেশ্যে জয়েন্ট ইনিশিয়েটিভ অন হেলথ সিস্টেম রেজিলিয়েন্স এবং রোহিঙ্গা সংকটে যৌথ সহায়তা।

বাংলাদেশ জানায়, মানবিক বিবেচনায় তারা এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গাকে পূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে, যা শুধু বাংলাদেশের নয়, বরং সমগ্র অঞ্চলের দায়িত্ব। এ বিষয়ে ডি-৮ সদস্যদের কারিগরি ও আর্থিক সহায়তার আহ্বান জানানো হয়।

বক্তব্যের শেষাংশে অধ্যাপক জাফর বলেন, কায়রোর এই বৈঠক হোক ডি-৮ সদস্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য সহযোগিতার নতুন যুগের সূচনা। জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আরও ন্যায্য, স্থিতিস্থাপক ও টেকসই স্বাস্থ্যব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারি।

আফছার হোসাইন/একিউএফ

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow