কেন আমরা প্রয়োজন ছাড়াই কেনাকাটা করি

মানুষ স্বভাবতই ভোগবাদী। যার যত আছে, তার তত চাই। তাই আমরা কমবেশি সবাই নিজেদের প্রয়োজন না থাকলেও শুধু নিজের ভালো লাগা থেকে কোনো পছন্দের জিনিস কিনে থাকি। এর মধ্যে কেউ কেউ আবার ট্রেন্ডের সঙ্গে তাল মিলাতেই একের অধিক জিনিস কেনেন। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় সেগুলো তেমন একটা ব্যবহার করা হয় না। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে — কেন প্রয়োজন না থাকলেও জিনিস কিনে ফেলি? প্রয়োজন না থাকলেও কেনাকাটা করার অভ্যাসের অনেকগুলো মনস্তাত্ত্বিক ভিত্তি রয়েছে। যেমন কারও মন খারাপ থাকলে শপিং মলে যান এবং অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে নিয়ে আসেন। আবার কেউ একটা জামা কয়েকবার পরে ফেললে ভাবেন, ‘পুরোনো হয়ে গেছে’ অথবা ‘ওল্ড ফ্যাশন’।     ফলশ্রুতিতে নতুন কিছু কিনে আনেন। আবার কেউ কেউ আছেন যারা কোম্পানির চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে আর স্থির থাকতে পারেন না। সঙ্গে সঙ্গে কিনতে চলে যান। অনেকে আবার বিজ্ঞাপনে পণ্যের বিশাল ছাড় দেখে ভবিষ্যতে লাগবে ভেবে অগ্রিম পণ্য কিনে রেখে দেন, যা একেবারেই অপ্রয়োজনীয়। বিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী মাসলোয়ের ‘হায়ারার্কি অব হিউম্যান নিডস’ বইটিতে বলেছেন, তা হলো আমাদের আধুনিক জীবনে শারীরিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য খুব বেশি কিছু প্র

কেন আমরা প্রয়োজন ছাড়াই কেনাকাটা করি

মানুষ স্বভাবতই ভোগবাদী। যার যত আছে, তার তত চাই। তাই আমরা কমবেশি সবাই নিজেদের প্রয়োজন না থাকলেও শুধু নিজের ভালো লাগা থেকে কোনো পছন্দের জিনিস কিনে থাকি। এর মধ্যে কেউ কেউ আবার ট্রেন্ডের সঙ্গে তাল মিলাতেই একের অধিক জিনিস কেনেন

কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় সেগুলো তেমন একটা ব্যবহার করা হয় না। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে — কেন প্রয়োজন না থাকলেও জিনিস কিনে ফেলি?

প্রয়োজন না থাকলেও কেনাকাটা করার অভ্যাসের অনেকগুলো মনস্তাত্ত্বিক ভিত্তি রয়েছে। যেমন কারও মন খারাপ থাকলে শপিং মলে যান এবং অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে নিয়ে আসেন। আবার কেউ একটা জামা কয়েকবার পরে ফেললে ভাবেন, ‘পুরোনো হয়ে গেছে’ অথবা ‘ওল্ড ফ্যাশন’।

 

 

ফলশ্রুতিতে নতুন কিছু কিনে আনেন। আবার কেউ কেউ আছেন যারা কোম্পানির চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে আর স্থির থাকতে পারেন না। সঙ্গে সঙ্গে কিনতে চলে যান। অনেকে আবার বিজ্ঞাপনে পণ্যের বিশাল ছাড় দেখে ভবিষ্যতে লাগবে ভেবে অগ্রিম পণ্য কিনে রেখে দেন, যা একেবারেই অপ্রয়োজনীয়।

বিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী মাসলোয়ের ‘হায়ারার্কি অব হিউম্যান নিডস’ বইটিতে বলেছেন, তা হলো আমাদের আধুনিক জীবনে শারীরিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য খুব বেশি কিছু প্রয়োজন নেই। খাদ্য, আবাসন এবং পোশাক হলো বেঁচে থাকার মৌলিক উপকরণ।

তবে অনেক জিনিস আছে যা শারীরিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য নয়, কিন্তু সমাজে চলাচল করতে বা স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করতে থাকা ভালো। যেমন, সাবান — এটি আমাদের জীবনে থাকতে বাধ্য নয়, কিন্তু থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং সুপারিশকৃত, কারণ এটি স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতার জন্য অপরিহার্য।

অতিরিক্ত না কেনার অভ্যাস যেভাবে গড়ে তুলবেন —

১. আত্মনিয়ন্ত্রণ: বলা হয় নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ না থাকলে কোনো কিছুর ওপর নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব। কথাটি চিরন্তন সত্য। আমরা প্রয়োজন না থাকলেও অনেক অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে ফেলি, তার অন্যতম কারণ নিজের ওপর আত্মনিয়ন্ত্রণের অভাব। তাই অপ্রয়োজনীয় কিছু না কিনতে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণে জোর দিন।

 

 

২. ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয়: প্রয়োজন নেই তবুও কিনে ফেলার অভ্যাস আমাদের ভবিষ্যতে সঞ্চয় করার প্রবণতাকে কমিয়ে দেয়। কিন্তু নিজের ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করা অত্যন্ত জরুরি। এছাড়াও কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সঞ্চয়ের গুরুত্ব অনেক। তাই নিজের মতো সঞ্চয় করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

 

 

৩. কেন কিনছেন তার যৌক্তিক কারণ খুঁজুন: সাধারণত আমরা কিছু না ভেবেই অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে ফেলি। এই অভ্যাস থেকে বের হতে দরকার নিজেকে প্রশ্ন করার প্রবণতা। কোনো কিছু কেনার আগে কেন পণ্যটি কিনছেন বা কিনবেন — তার যৌক্তিক কারণ খুঁজে বের করুন। যদি কোনো যৌক্তিক কারণ না থাকে, তাহলে সেই পণ্য কিনবেন না। এটি অন্যতম কার্যকর পদ্ধতি।

৪. চটকদার বিজ্ঞাপন এড়িয়ে চলুন: মূলত বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আমরা যেকোনো পণ্য কিনতে অনেক প্রভাবিত হই। বাজারে নতুন নতুন পণ্যের আগমন ও বিশাল ছাড় কোনো পণ্য কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতার আগ্রহকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়। তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা অযাচিত পণ্য কিনে ফেলি। তাই অযাচিত পণ্য কেনার অভ্যাস থেকে দূরে থাকতে কোম্পানির চটকদার বিজ্ঞাপন এড়িয়ে চলুন, যা আমাদের অতিরিক্ত পণ্য কেনার অভ্যাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করবে।

তথ্যসূত্র: সাইকোলজি টুডে, সিমপ্লিসিটি রেলিশড্

সানজানা রহমান যুথী/এএমপি

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow