খুলনায় বেসামাল বাজার, সবজি-পেঁয়াজ-আলুর দাম চড়া

4 days ago 9

 

খুলনার বাজারে লাগামহীন সবজির দাম। পেঁয়াজ, আলুর দামও চড়া। অনেক দোকানে আবার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে উচ্চ মূল্যে। দাম বাড়াতে চেষ্টা করা হচ্ছে কৃত্রিম সংকটের। ক্রেতা-বিক্রেতাদের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) মহানগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।

নতুন বাজার, গল্লামারি বাজার, মিস্ত্রিপাড়া বাজার, দৌলতপুর বাজার ও বয়রা বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি নতুন আলু ১০০ টাকা, পুরাতন আলু ৭৫ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১৩০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ টাকা, দেশি রসুন ২৬০ টাকা, চায়না রসুন ২৪০ টাকা, ফুলকপি ৭০-৭৫ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা, শালগম ৬৫-৭০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, শীতকালীন শীম ৮০ টাকা, বরবটি শিম ১০০ টাকা, কাঁচামরিচ ১২০ টাকা, বেগুন ৭০-৭৫ টাকা, টমেটো ১৬০ টাকা, ঝিঙে ৬০ টাকা, উচ্ছে ১০০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৫০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, লালশাক, পালং শাক, ঘিকাঞ্চন শাক ৪০-৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেক দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেলও নেই। মুদি দোকানিরা জানান, কোম্পানির চাল-ডাল, সুজি, হলুদ, মসলাসহ অন্যান্য পণ্য না নিলে বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতে পারছেন না দোকানিরা। আবার তেল কিনতে হচ্ছে বোতলে কোম্পানির লেখা মূল্যে। এমন বেধে দেওয়া শর্তের কারণে তেল রাখছেন না অনেক দোকানিরা। ফলে খুলনায় বোতলজাত তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের মূল্য ১৬৭ টাকা হলেও, দোকানে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা পর্যন্ত। আর খোলা তেলের দাম লিটারপ্রতি ১৮২-১৮৫ টাকা রাখা হচ্ছে।

এদিকে খুচরা সবজি বিক্রেতারা বলছেন, আমরা পাইকারি আড়ত থেকে সবজি কিনে নিয়ে এসে খুচরা বিক্রি করি। আমাদের সামান্য লাভ থাকে। বেশি দামে সবজি কিনতে হচ্ছে বলেই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

গল্লামারি বাজারের সবজি বিক্রেতা হানিফ হোসেন বলেন, শীতকালের অনেক শাক-সবজি উঠছে। এ সময় দাম কমে যায়। তবে এবছর এখনো দাম কমে নাই। পাইকারি বাজারেই দাম বেশি।

মুদি দোকানি স্বপন মণ্ডল বলেন, অন্যান্য প্রোডাক্ট না নিলে কোম্পানির লোকজন তেল দিতে চাচ্ছে না। অনেকে আবার তেল দিলেও বোতলের গায়ের দামেই আমাদের কাছে বিক্রি করছে। এগুলো নাকি কোম্পানি থেকে তাদের নির্দেশ দিয়েছে। আমি তো খুচরা বিক্রি করি।

নতুন বাজারে আসা ক্রেতা হাফিজুর রহমান বলেন, এখন শীত মৌসুম। বাজারে শীতকালীন সবজির অনেক সরবরাহ। কিন্তু দামই কমছে না। সেই সঙ্গে আলু পেঁয়াজের দামের অবস্থা গরম। তার সঙ্গে আবার সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর চক্রান্তও চলছে। অনেক দোকানে বোতলের তেলের দামও বেশি নিচ্ছে। আমরা সাধারণ মানুষ একেবারে জিম্মি হয়ে পড়েছি।

গৃহবধূ সাদিয়া আফরিন গল্লামারি বাজারে নিয়মিত আসেন। তিনি বলেন, এক সপ্তাহ ধরে সব কিছুর দামই বেড়েছে। ফুলকপি, শিম, সবজি কোনোটাই ৭০-৮০ টাকার নিচে নেই। সয়াবিন তেল ১ লিটার কিনতে হচ্ছে ১৮৫ টাকায়।

খুলনা জেলা প্রশাসনের গঠিত বিশেষ টাস্কফোর্স কমিটির আহ্বায়ক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপংকর দাশ বলেন, অভিযোগ পেলেই অভিযান পরিচালনা করছি। দ্রুতই বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেডএইচ/জেআইএম

Read Entire Article