গাজার অর্ধেক নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার ইঙ্গিত ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর

গাজার অর্ধেক নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার ইঙ্গিত দিলো ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। রোববার (৭ ডিসেম্বর) এই ইঙ্গিত দেন ইসরায়েলি বাহিনীর প্রধান বা চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জমির। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমে আল-জাজিরা জানায়, গাজায় অবস্থানরত ইসরায়েলি সৈন্যদের সঙ্গে আলাপকালে ইয়াল জমির বলেন, গাজার ভেতরে যে জায়গা পর্যন্ত আমাদের সেনাবাহিনী পিছু হটেছে, সেটিই এখন ফিলিস্তিনিদের অধিকৃত বাকি অঞ্চল থেকে গাজাকে বিচ্ছিন্ন রাখার করার কার্যকর সীমান্ত হিসেবে কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিশাল এলাকার ওপর কার্যত নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে ও তারা তাদের এই অবস্থান ধরে রাখতে চায়। তার এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয় যে গাজা উপত্যকার ভেতরে ইসরায়েল যেভাবে ‘হলুদ রেখা’ নামে পরিচিত সীমারেখা বরাবর নিজেদের অবস্থান স্থাপন করেছে, সেটিই কার্যত নতুন এক সীমান্তে রূপ নিচ্ছে। ইয়াল জমিরের ভাষায়, এটি একদিকে অগ্রবর্তী নিরাপত্তা বেষ্টনী, অন্যদিকে চলমান সামরিক কর্মকাণ্ডের একটি সক্রিয় ক্ষেত্র। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী ইসরায়েলি বাহিনী এই রেখার পেছনে অবস্থান নিয়েছে, যা বাস্তবে গাজাকে দুই ভাগে বিভ

গাজার অর্ধেক নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার ইঙ্গিত ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর

গাজার অর্ধেক নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার ইঙ্গিত দিলো ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। রোববার (৭ ডিসেম্বর) এই ইঙ্গিত দেন ইসরায়েলি বাহিনীর প্রধান বা চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জমির।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমে আল-জাজিরা জানায়, গাজায় অবস্থানরত ইসরায়েলি সৈন্যদের সঙ্গে আলাপকালে ইয়াল জমির বলেন, গাজার ভেতরে যে জায়গা পর্যন্ত আমাদের সেনাবাহিনী পিছু হটেছে, সেটিই এখন ফিলিস্তিনিদের অধিকৃত বাকি অঞ্চল থেকে গাজাকে বিচ্ছিন্ন রাখার করার কার্যকর সীমান্ত হিসেবে কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিশাল এলাকার ওপর কার্যত নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে ও তারা তাদের এই অবস্থান ধরে রাখতে চায়।

তার এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয় যে গাজা উপত্যকার ভেতরে ইসরায়েল যেভাবে ‘হলুদ রেখা’ নামে পরিচিত সীমারেখা বরাবর নিজেদের অবস্থান স্থাপন করেছে, সেটিই কার্যত নতুন এক সীমান্তে রূপ নিচ্ছে।

ইয়াল জমিরের ভাষায়, এটি একদিকে অগ্রবর্তী নিরাপত্তা বেষ্টনী, অন্যদিকে চলমান সামরিক কর্মকাণ্ডের একটি সক্রিয় ক্ষেত্র। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী ইসরায়েলি বাহিনী এই রেখার পেছনে অবস্থান নিয়েছে, যা বাস্তবে গাজাকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে।

ইসরায়েলি সেনাপ্রধান বলেন, গাজা উপত্যকার বিস্তৃত অংশে আমাদের অপারেশনাল নিয়ন্ত্রণ রয়েছে ও আমরা সেই প্রতিরক্ষা রেখাগুলোতেই অবস্থান করবো। হলুদ রেখাটি এক নতুন সীমান্ত, যা আমাদের সম্প্রদায়ের জন্য সামনের প্রতিরক্ষার রেখা ও সামরিক কার্যক্রমের একটি সক্রিয় ক্ষেত্র।

এদিকে, ইসরায়েলের এই অবস্থান যে সাময়িক নয় ও ইচ্ছাকৃতভাবে সীমান্ত পুনর্নির্ধারণের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে, তা আরও স্পষ্ট হয়েছে দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের তথ্য থেকে। পত্রিকাটি জানিয়েছে, গত অক্টোবরে ইসরায়েলি সামরিক কমান্ড গাজার ভেতরে অবস্থান করা যুদ্ধবিরতির ‘হলুদ রেখা’কে শক্তভাবে স্থাপন ও আনুষ্ঠানিকভাবে চিহ্নিত করার নির্দেশ দেয়। সেখানে আউটপোস্ট স্থাপন, দুইতলা বালির বাঁধ, কাঁটাতার, হলুদ কংক্রিট মার্কার বসানোর পাশাপাশি ড্রোন ও সাঁজোয়া ইউনিট মোতায়েন করা হয়েছে।

গাজা সিটির পূর্বে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া শুজাইয়া এলাকাজুড়ে নজরদারি করা এক ইসরায়েলি আউটপোস্টও ঘুরে দেখেছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই আউটপোস্টে রয়েছে কাঁটাতার ঘেরা দুইতলা বালির বাঁধ, তার নিচ দিয়ে যাতায়াতযোগ্য দুইটি বালির রাস্তা ও আকাশে টহলরত ড্রোন।

এছাড়া দখলদার বাহিনী এই যুদ্ধবিরতির সীমারেখার পাশে হলুদ রঙে করা নতুন কংক্রিট ব্লক বসাচ্ছে। সামরিক কর্মকর্তাদের বরাতে পত্রিকাটি জানায়, চিহ্নিতকরণ কাজের মাত্র ১০ থেকে ২০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমান আউটপোস্টগুলোর পাশাপাশি নতুন অবস্থান তৈরি করে রেখাটির নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা হচ্ছে, যেখানে বালির বাঁধের পেছনে সৈন্য ও ট্যাঙ্ক মোতায়েন রয়েছে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের আগের একটি প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছিল, গাজাকে দুই ভাগে বিভক্ত করা এবং হলুদ রেখার পেছনের অঞ্চলগুলো পুনর্নির্মাণের প্রস্তাব প্রথম উত্থাপন করেছিলেন মার্কিন বিশেষ দূত জ্যারেড কুশনার ও মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স।

এদিকে, তথাকথিত যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকার পরও গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শিশুসহ শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। চলতি বছরের ১০ ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৩৭০ থেকে ৩৭৫ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন ও দৈনিক গড়ে আটজন বেসামরিক মানুষ নিহত হচ্ছেন।

সূত্র: আল-জাজিরা

এসএএইচ

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow