চাঁদপুরে খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা

শীত নামতেই জমে উঠেছে চাঁদপুরের গ্রামীণ জনপদ। গ্রামবাংলার শীত মানেই খেজুরের রস সংগ্রহ। সেই দৃশ্যই যেন জানান দিচ্ছে, কিছু ঐতিহ্য এখনো জীবন্ত ও প্রাণবন্ত। ভোরে মাটির হাঁড়িতে ঝরে পড়া খেজুরের রসের মিষ্টি সুবাস যেন জানিয়ে দেয় গ্রামবাংলার চিরচেনা ঐতিহ্য এখনো টিকে আছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে চলছে গাছিদের ব্যস্ততা। খেজুর গাছে নল বসিয়ে রস সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার দেওয়ানজীকান্দি গ্রামের অভিজ্ঞ গাছি মো. গোলাম হোসেন প্রধান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের অভিজ্ঞ গাছি হিসেবে রস সংগ্রহ করছেন। তিনি বলেন, ‘আগের মতো খেজুর গাছ আর দেখা যায় না। তবুও যে গাছগুলো আছে; সেগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চেষ্টা করছি। অগ্রহায়ণ থেকে মাঘ পর্যন্ত রস সংগ্রহ চলে। দুপুরের পর থেকে গাছ প্রস্তুত করে নল বসাই। রাতভর ফোঁটা ফোঁটা রস এসে হাঁড়ি ভরে যায়। ভোরে গিয়ে রস সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করি। তবে আগের মতো রস পাওয়া যায় না।’ স্থানীয় জহির উদ্দিন ও আবুল কালাম বলেন, ‘অনভিজ্ঞ গাছিদের ভুল পদ্ধতিতে গাছ কাটার কারণে অনেক গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে খেজুরের রসের উৎপাদনও কমে এসেছে। একসময় শীত এলে গাছিদের ঘরে শিশু থেকে

চাঁদপুরে খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা

শীত নামতেই জমে উঠেছে চাঁদপুরের গ্রামীণ জনপদ। গ্রামবাংলার শীত মানেই খেজুরের রস সংগ্রহ। সেই দৃশ্যই যেন জানান দিচ্ছে, কিছু ঐতিহ্য এখনো জীবন্ত ও প্রাণবন্ত। ভোরে মাটির হাঁড়িতে ঝরে পড়া খেজুরের রসের মিষ্টি সুবাস যেন জানিয়ে দেয় গ্রামবাংলার চিরচেনা ঐতিহ্য এখনো টিকে আছে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে চলছে গাছিদের ব্যস্ততা। খেজুর গাছে নল বসিয়ে রস সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার দেওয়ানজীকান্দি গ্রামের অভিজ্ঞ গাছি মো. গোলাম হোসেন প্রধান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের অভিজ্ঞ গাছি হিসেবে রস সংগ্রহ করছেন। তিনি বলেন, ‘আগের মতো খেজুর গাছ আর দেখা যায় না। তবুও যে গাছগুলো আছে; সেগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে চেষ্টা করছি। অগ্রহায়ণ থেকে মাঘ পর্যন্ত রস সংগ্রহ চলে। দুপুরের পর থেকে গাছ প্রস্তুত করে নল বসাই। রাতভর ফোঁটা ফোঁটা রস এসে হাঁড়ি ভরে যায়। ভোরে গিয়ে রস সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করি। তবে আগের মতো রস পাওয়া যায় না।’

স্থানীয় জহির উদ্দিন ও আবুল কালাম বলেন, ‘অনভিজ্ঞ গাছিদের ভুল পদ্ধতিতে গাছ কাটার কারণে অনেক গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে খেজুরের রসের উৎপাদনও কমে এসেছে। একসময় শীত এলে গাছিদের ঘরে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার ভিড় লেগে থাকতো। এখন সেই দৃশ্য বিরল হলেও গ্রামের মানুষের আগ্রহ এখনো কমেনি।’

jagonews

আরও পড়ুন
ঝিনাইদহে খেজুর রস সংগ্রহে বেড়েছে গাছিদের ব্যস্ততা 
ঘাস থেকে গুড় তৈরি করে স্বাবলম্বী খাদিজা বেগম 

এদিকে রস সংগ্রহের পর গ্রামবাসী তৈরি করেন ক্ষীর, পায়েস, পিঠা, নাড়ুসহ শীতের ঐতিহ্যবাহী খাবার। আত্মীয়-স্বজনকে আপ্যায়নের সময় এসব খাবার এখনো শীতের আনন্দ দ্বিগুণ করে। মতলব উত্তর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ২৭৭.৫০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের উপজেলায় বর্তমানে প্রায় ২ হাজার ১৭৭টি খেজুর গাছ আছে। এরমধ্যে অধিকাংশ গাছেই রস সংগ্রহের কাজ চলমান।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী বলেন, ‌‘খেজুর রস সংগ্রহ গ্রামীণ জীবনের ঐতিহ্যমণ্ডিত পেশা। তবে অনভিজ্ঞ গাছিদের ভুল পদ্ধতিতে গাছ কাটার কারণে অনেক গাছ ঝরে যাচ্ছে, যা উদ্বেগের বিষয়। নতুন গাছি ও কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিলে এবং সরকারি উদ্যোগে ব্যাপকভাবে খেজুর গাছ রোপণ শুরু হলে ঐতিহ্য শুধু টিকেই থাকবে না বরং আয় ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।’

শরীফুল ইসলাম/এসইউ

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow