চাকরি হচ্ছে না? এই ২ আমলে দ্রুত মিলবে সমাধান

আজকের বাস্তবতায় একটি ভালো চাকরি পাওয়া যেন অনেকের কাছেই সোনার হরিণের মতো। শিক্ষিত-অশিক্ষিত—সব শ্রেণির মানুষই কর্মসংস্থানের আশায় ছুটে চলেছেন প্রতিনিয়ত। চাকরির খোঁজে বছরের পর বছর কেটে যায়, হতাশা আর দুশ্চিন্তায় অনেকেই দিশাহারা হয়ে পড়েন। জীবিকার তাগিদে পরিবার-পরিজনের মুখে হাসি ফোটাতে চাওয়া এই মানুষগুলো পাড়ি দেন নানা পথ, তবু কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য মেলে না সহজে। তবে মুসলমান হিসেবে আমাদের অবশ্যই বিশ্বাস রাখতে হবে, রিজিকের মালিক একমাত্র আল্লাহতায়ালা। তিনিই আমাদের জীবনের যাবতীয় প্রয়োজন পূরণ করেন, আর তিনিই আমাদের জন্য উত্তম সময় ও উপায়ে রিজিকের ব্যবস্থা করেন। তাই চাকরির জন্য সাধ্যের সবটুকু চেষ্টা করার পাশাপাশি সর্বশক্তিমান আল্লাহর দরবারে হাত তুলে দোয়া করা চাই। তাঁর কাছে সাহায্য চাইলে, তিনি চাহিদা ও প্রয়োজন মোতাবেক পথ খুলে দেবেন ইনশাআল্লাহ। বর্তমানে ইন্টারনেটে চাকরি লাভের নানা আমল বা দোয়া ঘুরে বেড়াচ্ছে, যেগুলোর অধিকাংশই নির্ভরযোগ্য দলিলবিহীন। তাই কালবেলার পাঠকদের জন্য কোরআন শরিফে বর্ণিত একটি বিশুদ্ধ দোয়া-আমলের কথা জানিয়েছেন রাজধানীর জামিয়া ইকরার ফাজিল মুফতি ইয়াহইয়া শহিদ। এটি চাকরিপ্রত্যাশীদের জন্য হতে

চাকরি হচ্ছে না? এই ২ আমলে দ্রুত মিলবে সমাধান
আজকের বাস্তবতায় একটি ভালো চাকরি পাওয়া যেন অনেকের কাছেই সোনার হরিণের মতো। শিক্ষিত-অশিক্ষিত—সব শ্রেণির মানুষই কর্মসংস্থানের আশায় ছুটে চলেছেন প্রতিনিয়ত। চাকরির খোঁজে বছরের পর বছর কেটে যায়, হতাশা আর দুশ্চিন্তায় অনেকেই দিশাহারা হয়ে পড়েন। জীবিকার তাগিদে পরিবার-পরিজনের মুখে হাসি ফোটাতে চাওয়া এই মানুষগুলো পাড়ি দেন নানা পথ, তবু কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য মেলে না সহজে। তবে মুসলমান হিসেবে আমাদের অবশ্যই বিশ্বাস রাখতে হবে, রিজিকের মালিক একমাত্র আল্লাহতায়ালা। তিনিই আমাদের জীবনের যাবতীয় প্রয়োজন পূরণ করেন, আর তিনিই আমাদের জন্য উত্তম সময় ও উপায়ে রিজিকের ব্যবস্থা করেন। তাই চাকরির জন্য সাধ্যের সবটুকু চেষ্টা করার পাশাপাশি সর্বশক্তিমান আল্লাহর দরবারে হাত তুলে দোয়া করা চাই। তাঁর কাছে সাহায্য চাইলে, তিনি চাহিদা ও প্রয়োজন মোতাবেক পথ খুলে দেবেন ইনশাআল্লাহ। বর্তমানে ইন্টারনেটে চাকরি লাভের নানা আমল বা দোয়া ঘুরে বেড়াচ্ছে, যেগুলোর অধিকাংশই নির্ভরযোগ্য দলিলবিহীন। তাই কালবেলার পাঠকদের জন্য কোরআন শরিফে বর্ণিত একটি বিশুদ্ধ দোয়া-আমলের কথা জানিয়েছেন রাজধানীর জামিয়া ইকরার ফাজিল মুফতি ইয়াহইয়া শহিদ। এটি চাকরিপ্রত্যাশীদের জন্য হতে পারে আলোর দিশারি। বিশ্বাস ও ভরসার সঙ্গে এই আমল করলে আল্লাহতায়ালা দ্রুত উত্তম রিজিকের দ্বার খুলে দেবেন। চাকরি লাভের কোরআনি আমল এই দোয়াটি আল্লাহর নবী মুসাও (আ.) করেছিলেন। দোয়াটি হলো, رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ উচ্চারণ : রাব্বি ইন্নি লিমা- আনজালতা ইলাইয়া মিন খাইরিন ফাকির। অর্থ : হে আমার পালনকর্তা, তুমি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ পাঠাবে, আমি সেটার মুখাপেক্ষী। (সুরা আল-কাসাস : ২৪) চাকরি পেতে তাসবিহ পাঠ ভালো চাকরি লাভের জন্য আল্লাহর গুণবাচক নামের আমল করা এবং বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা চাই। আর রাব্বুল আলামিনের গুণবাচক নামগুলোর একটি হলো, يَا وَهَّابُ উচ্চারণ : ইয়া ওয়াহহাবু অর্থ : কোনোরূপ প্রতিদান ব্যতীত অধিক দানকারী। উলামা হজারাতের দাবি, যারা এসব আমল বেশি বেশি করবেন; আল্লাহতায়ালা তাদের রিজিকে বরকত দান করবেন। তাদের কোনো অভাব-অনটন ও প্রয়োজন থাকলে দ্রুত সবকিছুর সমাধান দেবেন। প্রসঙ্গত, ইসলামের মহান নবী হজরত মুসা (আ.) ফেরাউনের রোষানলে পড়ে মিসর ছেড়ে মাদায়িন শহরে গিয়ে পৌঁছান।কিন্তু সেখানে তার কোনো আশ্রয়ের কিংবা জীবিকার কোনো সংস্থান ছিল না। সেই ঘটনা উল্লেখ করে সুরা কাসাসে রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘যখন তিনি মাদইয়ান অভিমুখে রওয়ানা হলেন, তখন বললেন, আশা করা করছি আমার পালনকর্তা আমাকে সরল পথ দেখাবেন। যখন তিনি মাদইয়ানের কূপের ধারে পৌঁছলেন, তখন কূপের কাছে একদল লোককে পেলেন, যারা পশুদের পানি পান করানোর কাজে ব্যস্ত ছিল। আর তাদের পেছনে দুইজন নারীকেও দেখলেন—তারা তাদের পশুগুলোকে আগলিয়ে রাখছে। তিনি (মুসা) বললেন, তোমাদের কী ব্যাপার? তারা বললেন, রাখালরা ওদের পশুগুলোকে নিয়ে সরে না গেলে আমরা আমাদের পশুগুলোকে পানি পান করাতে পারি না। আর আমাদের বাবা অশীতিপর বৃদ্ধ।’ ( আয়াত : ২২-২৩) এরপরের আয়াতেই মুসা (আ.)-এর কাজ চেয়ে আল্লাহর মুখাপেক্ষী হওয়ার বিনীত নিবেদনের কথা বলা হয়েছে— ‘অতঃপর মুসা তাদের (দুই নারীর) জন্তুদের পানি পান করালেন। এরপর তিনি ছায়ার দিকে ফিরে গেলেন এবং বললেন, হে আমার পালনকর্তা, তুমি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ অবতীর্ণ করবে, আমি সেটার মুখাপেক্ষী।’ (আয়াত : ২৪) অর্থাৎ আমার আশ্রয়, কাজ ও কর্মসংস্থান দরকার। আর তুমি আমার জন্য যে কাজ বা জীবিকার ব্যবস্থা করবে, আমি সেটারই মুখাপেক্ষী। ভালো চাকরি ও উত্তম কর্মসংস্থান পেতে যে এ দোয়া কার্যকরী, তা পরের আয়াতেই বর্ণিত ঘটনায় প্রমাণিত। আল্লাহ বলেন, ‘তখন (ওই) দুই নারীর একজন লজ্জাজড়িত পদে তার কাছে এসে বলল, আপনি যে আমাদের পশুগুলোকে পানি পান করিয়েছেন, তার পারিশ্রমিক দেওয়ার জন্য আমার বাবা আপনাকে ডাকছেন। অতঃপর মুসা (আ.) তার কাছে এসে সব ঘটনা বর্ণনা করলে বৃদ্ধ বলেন, ‘ভয় করো না, তুমি জালিম সম্প্রদায়ের কবল থেকে বেঁচে গেছ। ওদের (দুই নারীর) একজন বলল, হে আব্বা! আপনি একে মজুর-কর্মী হিসেবে নিযুক্ত করুন। কারণ, আপনার চাকর-মজুর হিসেবে নিশ্চয়ই সে (মুসা) উত্তম হবে, শক্তিশালী ও বিশ্বস্ত হবে।’ (আয়াত : ২৫-২৬) হজরত মুসা (আ.) এভাবেই দোয়া ও অন্যকে সহযোগিতা করার মাধ্যমে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে উত্তম কর্মক্ষেত্র, জীবিকা এবং আশ্রয় লাভ করেছিলেন। সুতরাং যারা ভালো চাকরি বা কর্মসংস্থান খুঁজছেন, তাদের উচিত সার্বিক চেষ্টার পাশাপাশি আল্লাহর কাছে এসব আমলের মাধ্যমে সহযোগিতা কামনা করা।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow