চার দিনেও গ্রেফতার হয়নি প্রবাসী হত্যা মামলার প্রভাবশালী আসামিরা
ঝিনাইদহে কম্পোডিয়া প্রবাসী মাহবুব হোসেন (৩৮) হত্যা মামলার প্রভাবশালী আসামিরা চারদিনেও গ্রেফতার হয়নি। অভিযোগ উঠেছে, রাজনৈতিক পরিচয় ও প্রভাব থাকায় আসামিরা রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। উল্টো হত্যাকাণ্ডের পর থেকে আসামিরা ভুক্তভোগী পরিবারকে নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এদিকে আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচার নিশ্চিতের দাবিতে মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী ও হত্যাকাণ্ডের শিকার প্রবাসীর পরিবারের সদস্যরা। নিহত মাহবুব হোসেন সদর উপজেলার পদ্মাকর ইউনিয়নের কালা-লক্ষ্মীপুর গ্রামের সাবদার হোসেনের ছেলে। জানা গেছে, জমির লিজ দেওয়াকে কেন্দ্র করে শনিবার (১৫ নভেম্বর) প্রবাসী যুবক মাহবুব হোসেনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে প্রতিপক্ষরা। পরে হাসপাতালে নিলে তার মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পদ্মাকর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবিকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়। গত রোববার (১৬ নভেম্বর) মামলাটি করেন নিহত প্রবাসীর ভাই রুবেল হোসেন। ঝিনাইদহ সদর থানায় দায়েরকৃত মামলায় ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়। স্থানীয়রা জানান, গ্রাম
ঝিনাইদহে কম্পোডিয়া প্রবাসী মাহবুব হোসেন (৩৮) হত্যা মামলার প্রভাবশালী আসামিরা চারদিনেও গ্রেফতার হয়নি। অভিযোগ উঠেছে, রাজনৈতিক পরিচয় ও প্রভাব থাকায় আসামিরা রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। উল্টো হত্যাকাণ্ডের পর থেকে আসামিরা ভুক্তভোগী পরিবারকে নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচার নিশ্চিতের দাবিতে মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী ও হত্যাকাণ্ডের শিকার প্রবাসীর পরিবারের সদস্যরা।
নিহত মাহবুব হোসেন সদর উপজেলার পদ্মাকর ইউনিয়নের কালা-লক্ষ্মীপুর গ্রামের সাবদার হোসেনের ছেলে।
জানা গেছে, জমির লিজ দেওয়াকে কেন্দ্র করে শনিবার (১৫ নভেম্বর) প্রবাসী যুবক মাহবুব হোসেনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে প্রতিপক্ষরা। পরে হাসপাতালে নিলে তার মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পদ্মাকর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবিকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়। গত রোববার (১৬ নভেম্বর) মামলাটি করেন নিহত প্রবাসীর ভাই রুবেল হোসেন। ঝিনাইদহ সদর থানায় দায়েরকৃত মামলায় ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, গ্রামে স্থানীয় বিএনপির সামাজিক দুটি পক্ষ রয়েছে। সামাজিক আধিপত্য বিস্তারের জন্য ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম ও যুবদল কর্মী জিয়ারুল ইসলামের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। হত্যাকাণ্ডের শিকার মাহবুব হোসেন জিয়ারুলের চাচাতো ভাই। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র পূর্বশত্রুতা ও জমির লিজ দেওয়া নিয়ে রবিউল ইসলাম রবি ও জিয়ারুল ইসলামের লোকজন সম্প্রতি প্রকাশ্যে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে জিয়ারুলের চাচাতো ভাই প্রবাসী মাহবুব হোসেনকে একা পেয়ে শনিবার সকালে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে প্রতিপক্ষের লোকজন।
ওই ঘটনায় মামলার পর সোমবার (১৭ নভেম্বর) প্রধান আসামি রবিউল ইসলামকে গ্রেফতার করে র্যাব। ঝিনাইদহ শহরের আদর্শপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার মূল আসামিরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।
অভিযোগ উঠেছে, আসামিরা পলাতক অবস্থায় থেকে বিভিন্ন উপায়ে ভুক্তভোগী পরিবার ও মামলার বাদীকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপপ্রয়োগ করছে। অন্যথায় ক্ষতির হুমকি দিয়ে আসছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝেও চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এদিকে চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের মূল আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়কের নতুন বাড়ি এলাকায় এ মানববন্ধন হয়। এসময় ব্যানার ফেস্টুন হাতে নিয়ে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী মানববন্ধনে অংশ নেন।
মানববন্ধনে হত্যাকাণ্ডের শিকার প্রবাসী মাহবুব হোসেনের বাবা সাবদার বিশ্বাস, স্ত্রী শম্পা খাতুন, ভাই রুবেল হোসেন, জেলা কৃষক দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মোহন জমাদ্দার, পদ্মাকর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আতিক হোসেন মল্লিক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
নিহতের স্ত্রী শম্পা খাতুন বলেন, একটি সালিশে যাওয়ার কথা বলে সকালে আমার স্বামী বাড়ি থেকে বের হন। এর কিছুক্ষণ পরেই শুনি ওরা আমার স্বামীকে কুপিয়ে মেরে ফেলেছে। আমার কোলে ৬ মাসের সন্তান। আমার সন্তানকে ওরা এতিম করে দিয়েছে। আমি অভিভাবকহীন হয়ে গিয়েছি। আমি এই হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
নিহতের চাচাতো ভাই ওয়ার্ড যুবদলের কর্মী জিয়ারুল ইসলাম বলেন, সামাজিকভাবে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের জন্য রবিউল ইসলামের নির্দেশে হুমায়ন কবির ও তার লোকজন মিলে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আমরা দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রবাসী মাহবুব হোসেন হত্যা মামলার ১ নম্বর আসামি রবিউল ইসলাম রবিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলার প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারেও অভিযান চলমান রয়েছে। এ ঘটনায় যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
শাহজাহান নবীন/এমএন/এমএস
What's Your Reaction?