চোরের ভয়ে নথি নিতে হয় বাড়িতে, বৃষ্টিতে ভিজে যায় সবকিছু

জরাজীর্ণ কক্ষ। আসবাবপত্র অপ্রতুল। জানালা-দরজা নেই। কোনোটির পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে। আবার কোনোটির দেওয়াল টিন দিয়ে ঘেরা। এভাবে বছরের পর বছর ঝুঁকি নিয়েই চলছে ডাকঘরের কার্যক্রম। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাদারীপুরের বেশিরভাগ ডাকঘরই ঝুকিপূর্ণ। ঝুকিপূর্ণ অফিসেই চলছে কার্যক্রম। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা থাকলেও কোনো উন্নতি হয়নি। মাদারীপুর জেলায় ৮৪টি ডাকঘর আছে। এরমধ্যে ২৭টি ডাকঘরের জন্য বরাদ্দ করা জমি রয়েছে। কিন্তু জমি বরাদ্দ থাকলেও নিজস্ব ভবন আছে মাত্র ১৬টির। বাকি ৬৮টি ডাকঘরের কার্যক্রম চলছে ভাড়া করা ভবনে। এই ভাড়া করা বেশিরভাগ ভবনগুলোর অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ। কিছু পরিত্যক্ত ভবনেও চলছে ডাকঘরের কার্যক্রম। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মধ্যে রয়েছে মাদারীপুরের চরমুগরিয়া এলাকার ডাকঘর, কুলপদ্বি এলাকার ডাকঘর, পুরানবাজার এলাকার ডাকঘর, মস্তফাপুর এলাকার ডাকঘর। সূত্রমতে, মাদারীপুর সদর উপজেলার চরমুগরিয়া এলাকায় রয়েছে উপ-ডাকঘর। এটি ব্রিটিশ আমলে জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখার অধীনে নির্মাণ করা হয়। এরপর আর তেমন একটা সংস্কারের কাজ হয়নি। বছরের পর বছর এভাবেই পড়ে আছে। এই ডাকঘর থেকে ১৫টি ইউনিয়নের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। ডাকঘর ভবনটি থেকে প

চোরের ভয়ে নথি নিতে হয় বাড়িতে, বৃষ্টিতে ভিজে যায় সবকিছু

জরাজীর্ণ কক্ষ। আসবাবপত্র অপ্রতুল। জানালা-দরজা নেই। কোনোটির পলেস্তারা খসে খসে পড়ছে। আবার কোনোটির দেওয়াল টিন দিয়ে ঘেরা। এভাবে বছরের পর বছর ঝুঁকি নিয়েই চলছে ডাকঘরের কার্যক্রম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাদারীপুরের বেশিরভাগ ডাকঘরই ঝুকিপূর্ণ। ঝুকিপূর্ণ অফিসেই চলছে কার্যক্রম। দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থা থাকলেও কোনো উন্নতি হয়নি।

মাদারীপুর জেলায় ৮৪টি ডাকঘর আছে। এরমধ্যে ২৭টি ডাকঘরের জন্য বরাদ্দ করা জমি রয়েছে। কিন্তু জমি বরাদ্দ থাকলেও নিজস্ব ভবন আছে মাত্র ১৬টির। বাকি ৬৮টি ডাকঘরের কার্যক্রম চলছে ভাড়া করা ভবনে। এই ভাড়া করা বেশিরভাগ ভবনগুলোর অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ। কিছু পরিত্যক্ত ভবনেও চলছে ডাকঘরের কার্যক্রম।

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের মধ্যে রয়েছে মাদারীপুরের চরমুগরিয়া এলাকার ডাকঘর, কুলপদ্বি এলাকার ডাকঘর, পুরানবাজার এলাকার ডাকঘর, মস্তফাপুর এলাকার ডাকঘর।

সূত্রমতে, মাদারীপুর সদর উপজেলার চরমুগরিয়া এলাকায় রয়েছে উপ-ডাকঘর। এটি ব্রিটিশ আমলে জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখার অধীনে নির্মাণ করা হয়। এরপর আর তেমন একটা সংস্কারের কাজ হয়নি। বছরের পর বছর এভাবেই পড়ে আছে। এই ডাকঘর থেকে ১৫টি ইউনিয়নের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। ডাকঘর ভবনটি থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে। জায়গায় জায়গায় রড বেরিয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল। একটু বৃষ্টি হলেই অফিসের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পানিতে ভিজে যায়।

আরও পড়ুন:
প্রেমের চিঠি এখন অতীত, যা আসে আইনি-তালাক নোটিশ

মাদারীপুরের কুলপদ্বি এলাকার ডাকঘরটি টিনের তৈরি। দরজা-জানালাও ঠিকমতো লাগানো যায় না। চোরের ভয়ে কর্মচারীরা অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সঙ্গে করে বাসায় নিয়ে যান। পুরানবাজারের ডাকঘরের চিত্রও একই।

চরমুগরিয়া এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ শাহজাহান খান বলেন, ‘আমি বহু বছর ধরেই এই চরমুগরিয়া এলাকার ডাকঘরটির এই অবস্থা দেখে আসছি। জরাজীর্ণ ভবনেই যুগের পর যুগ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। কোনো উন্নতি হয়নি।’

পুরানবাজার এলাকার বাসিন্দা সোহাগ হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘মাদারীপুর শহরের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র হচ্ছে পুরানবাজার। এখানকার ডাকঘরেরও জরাজীর্ণ অবস্থা।’

চোরের ভয়ে নথি নিতে হয় বাড়িতে, বৃষ্টিতে ভিজে যায় সবকিছু

কুলপদ্বি এলাকার বাসিন্দা পলাশ হোসেন। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ বছর ধরে টিনের ঘরেই ডাকঘরের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এই ডাকঘরের জানালার কপাট নেই। দরজাও ভাঙা।’

মাদারীপুরের চরমুগরিয়ার উপ-ডাকঘরের পোস্টমাস্টার আব্দুস সামাদ ফকির জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের এই ভবনটি অনেক আগেই ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এই ভবন থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে। একটু বৃষ্টি হলেই ভেতরে পানি ঢুকে যায়। ঝুঁকির মধ্যেই আমাদের সব কাজ করতে হচ্ছে।’

শহরের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র পুরানবাজার ডাকঘরের পোস্টমাস্টার মেহেদুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে কোনো নিরাপত্তা নেই। বৃষ্টি হলে টিনের চালা দিয়ে চুইয়ে ভেতরে পানি পড়ে। গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ভিজে যায়। আলমারিও ভাঙা। অনেক সময় চোরের ভয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র সঙ্গে করে বাড়িতে নিয়ে যেতে হয়।’

এ বিষয়ে মাদারীপুর প্রধান ডাকঘরের পরিদর্শক মো. জিহাদুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘নতুন ভবন নির্মাণ করতে একাধিকবার আঞ্চলিক অফিসকে জানানো হয়েছে। তারা বিষয়টি আমলেই নিচ্ছেন না। আমরা চাই দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ করা হোক। নতুন ভবন নির্মাণ হলে কার্যক্রমও অনেক বেড়ে যাবে।’

এসআর/এমএস

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow