জুলাইয়ে গুমের শিকার নূর নবী জকসুতে লড়বেন শিবিরের প্যানেলে
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে প্রার্থী হয়েছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুম হওয়া শিক্ষার্থী নূর নবী। তিনি শিবিরের প্যানেল থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রবিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচতলায় এক সংবাদ সম্মেলনে ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ নামে এই প্যানেল ঘোষণা করা হয়। ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন নূর নবী। আন্দোলন চলাকালীন ১৯ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে ডিবির হাতে গ্রেফতার হন। এ সময় ডিবি অফিসে নির্যাতন চালিয়ে তার এক হাত ভেঙে দেওয়া হয়। পরে সাজানো মামলায় রিমান্ডের নামে আরও শারীরিক ও মানসিক নিপীড়নের মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাকে। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ১৭ আগস্ট সমন্বয়ক পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন তিনি। এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে রূপ নেওয়া নতুন দল বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হন। চলতি বছরের ২ আগস্ট মন্ত্রিপাড়ায় বসে সংগঠন চালানো, আর্থিক অসংগতি ও কোরামবাজ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে প্রার্থী হয়েছেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুম হওয়া শিক্ষার্থী নূর নবী। তিনি শিবিরের প্যানেল থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রবিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচতলায় এক সংবাদ সম্মেলনে ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ নামে এই প্যানেল ঘোষণা করা হয়।
২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন নূর নবী। আন্দোলন চলাকালীন ১৯ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে ডিবির হাতে গ্রেফতার হন। এ সময় ডিবি অফিসে নির্যাতন চালিয়ে তার এক হাত ভেঙে দেওয়া হয়। পরে সাজানো মামলায় রিমান্ডের নামে আরও শারীরিক ও মানসিক নিপীড়নের মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাকে।
৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ১৭ আগস্ট সমন্বয়ক পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন তিনি। এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে রূপ নেওয়া নতুন দল বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হন। চলতি বছরের ২ আগস্ট মন্ত্রিপাড়ায় বসে সংগঠন চালানো, আর্থিক অসংগতি ও কোরামবাজির মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগতসহ নানা অভিযোগ তুলে তিনি পদত্যাগ করেন। এছাড়া জবি শিক্ষার্থীদের যমুনার আন্দোলনসহ সব যৌক্তিক দাবি আদায়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।
নূর নবী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি কুমিল্লা। সর্বশেষ মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষায় সিজিপিএ ৪.০০ এর মধ্যে ৪.০০ পেয়ে ফের আলোচনায় আসেন।
এ বিষয়ে নূর নবী বলেন, ২০২৪ সালের শুক্রবার (১৯ জুলাই) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে তাকে তুলে নেয় ডিবি পুলিশ। এরপর আমাকে গুম করার চেষ্টা করা হয়। ডিবি অফিসে ইলেকট্রিক শক, ইনজেকশন পুশসহ নানাভাবে নির্যাতন করা হয়।
ছাত্রশিবিরের প্যানেল বেছে নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিবির সমর্থিত প্যানেল থেকে নির্বাচন করছি এটা সত্য। তবে আমি কোনো দলের পরিচয়ে নয়, দলের আদর্শ, বৈচিত্র্য ও লক্ষ্য দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই প্যানেলে শুধুই শিবিরের সমর্থক নন; আছেন জুলাইযোদ্ধা, মানবাধিকার কর্মী, পেশাদার ক্রীড়াবিদ, সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য দীর্ঘদিন কাজ করা নির্দলীয় শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন ধারা ও মতাদর্শের মানুষ। অর্থাৎ এটি একেবারেই একদম বহুমাত্রিক ও উন্মুক্ত একটি টিম।
নূর নবী আরও বলেন, আমি এই প্যানেল বেছে নিয়েছি তিনটি কারণে। প্রথমত, এই প্যানেলে মতাদর্শের চেয়ে যোগ্যতা, ভূমিকা, অভিজ্ঞতা ও দায়বদ্ধতাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমি যে ইতিহাস-গণতন্ত্রভিত্তিক কাজ করতে চাই- এই দল আমাকে সেই কাজের স্বাধীনতা, মর্যাদা ও নিরাপত্তা দিচ্ছে। দ্বিতীয়ত, জুলাই আন্দোলনের ত্যাগ, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের মূল্যবোধকে এ প্যানেল সম্মান করে। তৃতীয়ত, আমি দলীয় পরিচয়ের জন্য নয়, নিজের মূল্যবোধ, নিজের কাজের ভিশন এবং যারা আমাকে সৎভাবে কাজ করতে দেবে তাদের সঙ্গেই আছি। এই প্যানেল আমাকে সেই ব্যাপারে আস্থা দিয়েছে।
এর আগে, গত ৫ নভেম্বর ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১২ নভেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলে মোট ২৪৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেয়। ১৯ ও ২০ নভেম্বর বাছাই, ২৩ নভেম্বর প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। ২৪–২৬ নভেম্বর আপত্তি গ্রহণ ও নিষ্পত্তি সম্পন্ন হবে। ২৭ ও ৩০ নভেম্বর প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট এবং ৩ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। ৪, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সুযোগ থাকবে, যা পরদিন (৯ ডিসেম্বর) প্রকাশ করা হবে। এরপর ৯ থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে নির্বাচনি প্রচারণা। ২২ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ ও সেদিনই ভোট গণনা সম্পন্ন হবে। ২২ থেকে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
টিএইচকিউ/এমআরএম/এমএস
What's Your Reaction?