ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির রেকর্ড পতন

টানা দুর্বল বিদেশি বিনিয়োগ প্রবাহ ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির অনিশ্চয়তায় ভারতীয় রুপি মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (আরবিআই) হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছে। মঙ্গলবার রুপি ডলারের বিপরীতে ০.২৮ শতাংশ দুর্বল হয়ে ৮৯.৭৯৭৫–এ পৌঁছায়, যা আগের সর্বনিম্ন রেকর্ড ৮৯.৭৫৭৫–কে ছাড়িয়ে যায়। এক পর্যায়ে এটি ৮৯.৮৫–এ নেমে আসে এবং ৯০ ছোঁয়ার ঝুঁকিতে পড়লে আরবিআই বাজারে হস্তক্ষেপ করে। দেশটির অর্থনীতি সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে এবং মূল্যস্ফীতিও কম, যা সাধারণত মুদ্রাকে শক্তিশালী রাখে। কিন্তু এসব ইতিবাচক মৌলিক ভিত্তি উপেক্ষা করে বিনিয়োগকারীরা নজর দিচ্ছেন দুর্বল বৈদেশিক প্রবাহের দিকে। বিদেশি পোর্টফোলিও ও বিনিয়োগ প্রবাহ কম থাকায় এবং দেশের বাণিজ্য ঘাটতি ক্রমাগত বাড়ায় রুপির ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়েছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, বাড়তি বাণিজ্য ঘাটতির কারণে চলতি অর্থবছর ভারতের চলতি হিসাবে ঘাটতি আরও বাড়বে। এইচএসবিসি জানিয়েছে, চলতি অর্থবছর ভারতের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ঘাটতি জিডিপির ১.৪ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে, যা গত বছ

ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির রেকর্ড পতন

টানা দুর্বল বিদেশি বিনিয়োগ প্রবাহ ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির অনিশ্চয়তায় ভারতীয় রুপি মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক (আরবিআই) হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছে।

মঙ্গলবার রুপি ডলারের বিপরীতে ০.২৮ শতাংশ দুর্বল হয়ে ৮৯.৭৯৭৫–এ পৌঁছায়, যা আগের সর্বনিম্ন রেকর্ড ৮৯.৭৫৭৫–কে ছাড়িয়ে যায়। এক পর্যায়ে এটি ৮৯.৮৫–এ নেমে আসে এবং ৯০ ছোঁয়ার ঝুঁকিতে পড়লে আরবিআই বাজারে হস্তক্ষেপ করে।

দেশটির অর্থনীতি সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে এবং মূল্যস্ফীতিও কম, যা সাধারণত মুদ্রাকে শক্তিশালী রাখে। কিন্তু এসব ইতিবাচক মৌলিক ভিত্তি উপেক্ষা করে বিনিয়োগকারীরা নজর দিচ্ছেন দুর্বল বৈদেশিক প্রবাহের দিকে।

বিদেশি পোর্টফোলিও ও বিনিয়োগ প্রবাহ কম থাকায় এবং দেশের বাণিজ্য ঘাটতি ক্রমাগত বাড়ায় রুপির ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়েছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, বাড়তি বাণিজ্য ঘাটতির কারণে চলতি অর্থবছর ভারতের চলতি হিসাবে ঘাটতি আরও বাড়বে।

এইচএসবিসি জানিয়েছে, চলতি অর্থবছর ভারতের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ঘাটতি জিডিপির ১.৪ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে, যা গত বছর ছিল ০.৬ শতাংশ।

এমইউএফজি ব্যাংক বলছে, সামগ্রিক মৌলিক অবস্থান রুপির আরও দুর্বলতার ইঙ্গিত দেয়। তাই ধীরে ধীরে রুপিকে ৯০-এর উপরে যেতে আরবিআই অনুমতি দিতে পারে।

এ বছর এখন পর্যন্ত বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতীয় শেয়ারবাজার থেকে প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার তুলে নিয়েছেন, যা রুপির ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করেছে।

এর পাশাপাশি আমদানিকারকরা ভবিষ্যতে আরও রুপি দুর্বল হবে ধরে আগেভাগে ডলার কিনে হেজিং বাড়িয়েছেন, যা বাজারে ডলারের চাহিদা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিপরীতে রপ্তানিকারকরা ভালো রেটের আশায় মুদ্রা রূপান্তর বিলম্বিত করছেন।

যুক্তরাষ্ট্র–ভারত বাণিজ্য চুক্তি হয়নি—এটিও রুপির মনোভাবের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। অনেক বিশ্লেষক যে উন্নতির আশা করেছিলেন, তা হয়নি।

ট্রেডাররা জানান, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আরবিআই নিয়মিতভাবে বাজারে হস্তক্ষেপ করছে। আগে ৮৮.৮০ স্তরটি রক্ষা করা হলেও তা ভেঙে যাওয়ার পর রুপির ওপর আরও অবমূল্যায়নের চাপ সৃষ্টি হয়েছে, যা মঙ্গলবার ৯০-এর কাছাকাছি নিয়ে গেছে।

সূত্র: রয়টার্স

এমএসএম

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow