ডুবে মৃত্যু রোধে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে

পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে পৃথিবীব্যাপী অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনটিউবেটর (জিএইচএআই)-এর অ্যাসোসিয়েট ভাইস প্রেসিডেন্ট (কমিউনিকেশন) জেনিফার প্যাটারসন। মিশরের পর্যটন নগরী শারম আল-শেখের একটি হোটেলে জিএইচএআই আয়োজিত ‘দ্য আনটোল্ড স্টোরি অব ড্রাউনিং প্রিভেনশন: এ ওয়ার্কশপ ফর জার্নালিস্ট’ শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এ কথা জানান। দুই দিনব্যাপী ওয়ার্কশপের বুধবার (১৯ নভেম্বর) ছিল প্রথম দিন। জেনিফার প্যাটারসন বলেন, পানিতে ডুবে মৃত্যু পৃথিবীব্যাপী একটি বড় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। আমরা সবাই একযোগে কাজ করলে এই মৃত্যু অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। সচেতনতা সৃষ্টিসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নীতি-নির্ধারকদের এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে সাংবাদিকরা ভূমিকা রাখতে পারেন। তিনি বলেন, পানিতে ডুবে মৃত্যু রোধে পৃথিবীব্যাপী সাংবাদিকরা যেন তাদের ভূমিকাকে আরও জোরালো করতে পারেন, সেজন্য এই ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়েছে। আশা করছি এই ওয়ার্কশপের মাধ্যমে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টরা নিজেদের আরও সমৃদ্ধ করতে পারবেন। কর্মশালায় ‘গ্লোবাল বার্ডেন, রিস্ক ফ্যাক্টর্স, হু/ওয়ার অ্যান্ড অ্যাক্টর

ডুবে মৃত্যু রোধে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে

পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে পৃথিবীব্যাপী অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনটিউবেটর (জিএইচএআই)-এর অ্যাসোসিয়েট ভাইস প্রেসিডেন্ট (কমিউনিকেশন) জেনিফার প্যাটারসন।

মিশরের পর্যটন নগরী শারম আল-শেখের একটি হোটেলে জিএইচএআই আয়োজিত ‘দ্য আনটোল্ড স্টোরি অব ড্রাউনিং প্রিভেনশন: এ ওয়ার্কশপ ফর জার্নালিস্ট’ শীর্ষক কর্মশালায় তিনি এ কথা জানান।

দুই দিনব্যাপী ওয়ার্কশপের বুধবার (১৯ নভেম্বর) ছিল প্রথম দিন।

জেনিফার প্যাটারসন বলেন, পানিতে ডুবে মৃত্যু পৃথিবীব্যাপী একটি বড় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। আমরা সবাই একযোগে কাজ করলে এই মৃত্যু অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। সচেতনতা সৃষ্টিসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের নীতি-নির্ধারকদের এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে সাংবাদিকরা ভূমিকা রাখতে পারেন।

তিনি বলেন, পানিতে ডুবে মৃত্যু রোধে পৃথিবীব্যাপী সাংবাদিকরা যেন তাদের ভূমিকাকে আরও জোরালো করতে পারেন, সেজন্য এই ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হয়েছে। আশা করছি এই ওয়ার্কশপের মাধ্যমে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টরা নিজেদের আরও সমৃদ্ধ করতে পারবেন।

কর্মশালায় ‘গ্লোবাল বার্ডেন, রিস্ক ফ্যাক্টর্স, হু/ওয়ার অ্যান্ড অ্যাক্টরস: ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন’ শিরোনামে উপস্থাপনা দেন জিএইচএআই-এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার লেক্সি বুলিক।

ডুবে মৃত্যু রোধে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে

তিনি তার উপস্থাপনায় বলেন, প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ৩ লাখ মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়। ৫ বছরের নিচের শিশু মোট ডুবে মৃত্যুর প্রায় এক-চতুর্থাংশ। ১–৪ বছর বয়সী শিশুদের মৃত্যুর চতুর্থ এবং ৫–১৪ বছর বয়সী শিশুদের মৃত্যুর তৃতীয় শীর্ষ কারণ হলো পানিতে ডুবে মৃত্যু।

মোট ডুবে মৃত্যুর ৯২ শতাংশ ঘটে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে জানিয়ে তিনি বলেন, শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা তুলনামূলকভাবে বেশি ঝুঁকির মুখে থাকে, কারণ তাদের ঝুঁকি মূল্যায়নের সক্ষমতা কম এবং সাঁতার ও পানি-নিরাপত্তা দক্ষতাও অপর্যাপ্ত। প্রাপ্তবয়স্কের সক্রিয় তত্ত্বাবধান ছাড়া পানি সংস্পর্শে এলে শিশুদের ডুবে যাওয়ার ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, পুরুষের ডুবে মৃত্যুর হার নারীদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এর কারণ হলো পানির কাছে তাদের বেশি যাতায়াত ও ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ—যেমন একা সাঁতার কাটতে যাওয়া, মদ্যপ অবস্থায় সাঁতার কাটা, কিংবা বোট চালানো।

‘ডুবে যাওয়ার ঝুঁকি দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপর অসমভাবে প্রভাব ফেলে। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে স্নান, কাপড় ধোয়া বা পানি সংগ্রহের জন্য পুকুর, নদী, খাল বা খোলা কূপ ব্যবহার করতে হয়—এ ধরনের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড মানুষের পানির সংস্পর্শ বাড়ায় এবং ডুবে যাওয়ার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে।’

প্রতি বছর আনুমানিক ৩২ হাজার জেলে মৃত্যুবরণ করেন জানিয়ে লেক্সি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে চরম আবহাওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে যাওয়ায় জেলেদের কাজের পরিবেশ আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।

‘অনিয়মিত বা ঝুঁকিপূর্ণ পথে অভিবাসনের চেষ্টা করা মানুষরা প্রায়ই বিশাল জলরাশি অতিক্রম করতে বাধ্য হন—যেখানে তারা অতিঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। এসব যাত্রায় ব্যবহৃত নৌযানগুলো সাধারণত অতিরিক্ত যাত্রীবাহী, নিরাপত্তাহীন, প্রয়োজনীয় সরঞ্জামবিহীন এবং অপ্রশিক্ষিত চালকদের দ্বারা পরিচালিত হয়, যা ডুবে মৃত্যুর ঝুঁকি আরও বাড়ায়।’ উপস্থাপনায় উল্লেখ করেন তিনি।

ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রাক-প্রাথমিক বয়সী শিশুদের জন্য পানির বাইরে নিরাপদ স্থান—যেমন ডে-কেয়ার সেন্টার এবং সক্ষম যত্নদাতা নিশ্চিত করা। পুকুর, খাল, নদী বা কূপের চারপাশে বেড়া বা অনুরূপ বাধা স্থাপন করে অনিয়ন্ত্রিত প্রবেশ রোধ করা। সাঁতার শেখানো, পানি সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা এবং নিরাপদ আচরণ শেখানো। ঘটনাস্থলে উপস্থিত মানুষকে নিরাপদে উদ্ধার করার কৌশল ও সিপিআর শেখানো।

ডুবে মৃত্যু রোধে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে

এছাড়া ওয়ার্কশপে ‘ক্রস কাটিং ইমপ্লিমেন্টেশন স্ট্রাটেজিস অ্যান্ড ভিয়েতনাম কেস স্টাডি’, ‘বাংলাদেশ কেস স্টাডি’, ‘দ্য ইম্পর্টেন্স অব ডাটা কালেকশন’ এর ওপর উপস্থাপনা দেওয়া হয়।

‘দ্য রিয়েলিটি অব ড্রাউনিং ইন ইজিপ্ট: চ্যালেঞ্জেস অব প্রিভেনশন, ডাটা, রিপোর্টিং অ্যান্ড কোর্ডিনেটেড অ্যাফোর্ডস’ শিরোনামে ইজিপশিয়ান ডাইভিং অ্যান্ড লাইভ সেভিং ফেডারেশন একটি উপস্থাপনা দেয়।

ওয়ার্কশপে বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, উগান্ডা, যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিপাইন, মিশরসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকরা অংশ নেন।

জিএইচএআই-এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার জিয়াং বোই, সিনিয়র প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট ক্যারোলিন ইয়াং, উগান্ডার মিডিয়া হেড অনিয়াম চার্লস, কমিউনিকেশন এক্সপার্ট লোপা ঘোষ, বাংলাদেশের কান্ট্রি লিড মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস উপস্থিত ছিলেন।

আরএমএম/ইএ/এএসএম

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow