‘দলিত, হরিজন, তফসিলি পরিষদের মানুষকে রাজনীতির নেতৃত্বে আসতে হবে’

1 week ago 1769

দলিত, হরিজন, তফসিলি পরিষদের মানুষকে তাদের নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য রাজনীতির নেতৃত্বে আসতে হবে। যদি রাজনীতি না আসেন তহালে রাজনৈতিক দলগুলো আপনাদের ভোটার হিসেবে দেখবে এবং ভোট আসলে শুধু গুরুত্ব দেবে তা ছাড়া আর তাদের দেখা মিলবে না। তাই চিরদিন এভাবে থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর বাংলামোটর জাতীয় নাগরিক কমিটির কার্যালয়ে যোগেন মন্ডলের ১২২তম জন্মদিন পালন উপলক্ষে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। এ আলোচনার সভার আয়োজন করে দলিত, হরিজন, তফসিলি পরিষদ ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, ড.আতিক মুজাহিদ, যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আলামিন, সহ-মুখপাত্র মুশফিক উস সালেহীন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও কূটনীতি বিষয়ক সম্পাদক আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, নির্বাহী সদস্য, সম্পাদক শ্রমিক সেল মো.মাজহারুল ইসলাম,দলিত, হরিজন ও তফসিলি পরিষদের আহ্বায়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য ভীম্পাল্লী ডেভিড রাজু, কেন্দ্রীয় সদস্য জয়নাল আবেদীন শিশির। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় সদস্য কৈলাশ চন্দ্র রবীদাস।

জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, আওয়ামী লীগ ভয়ংকর ধরনের অন্যায় করেছে।  আমরা যাদের উত্তরসূরী আওয়ামী লীগ তা মুছে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ হলো একটা কালপিঠ দল। এ দলটি যা করছে এদেশে অন্য কোনো দল করেনি। তারা তাদের মতো করে ইচ্ছামত ইতিহাস বলছে, সৃষ্টি করেছে। এদেশে ইতিহাসের কু তৈরি করেছে আওযামী লীগ।

এ দলটি বাংলাদশের ইতিহাস ছিনতাই করেছে।  যা কোনো শত্রুও করেনি।  এ দলটির বিরুদ্ধে এখনি আমরা কথা বলছি না তা না।  যখন থেকে আমরা বুদ্ধি ভিত্তিক রাজনীতি চর্চা করছি তখন থেকেই আমরা এটা শুরু করছি।

তিনি বলেন, দেশ যে ভাগ হয়েছে সেটা আমরা মূলত দেখি হিন্দু ও মুসলিম ফ্রেমে।  এ ফ্রেমের কারণে আমরা দেখি ভারতবর্শী বা দক্ষিণ এশিয়া। আমরা যার ওপর দাড়িয়ে আছি পাকিস্তান আন্দোলন।  আমরা যখনি পাকিস্তান আন্দোলন ধারণ করি এ কথা বললে তখন অনেকেই বলে- এ কথা বলার মানে কী।

ধীরে ধীরে সব ভুল বুঝাবুজির শেষ হবে। ’৪৭ সালের আন্দোলন হিন্দু মুসলিমদের  হিসেবে দেখবেন না। পাকিস্তান না হলে বাংলাদেশ হতো না।  বাংলাদেশের রাজনীতির চরিত্রের যারা নেতা তাদের মধ্যে একজন হলো যোগেন মন্ডল।  তিনি শুধু তফসিল পরিষদের নেতা বলে আমরা দেখি না।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপির রাজনীতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবর একটা সাউন্ডগ্রেনেডে বিছিন্ন হয়ে গেছেন।  আবার বলে নতুন করে তারা ফেব্রুয়ারি মাসে নতুন করে মাঠে নামবে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির এ নেতা বলেন, অনেকের কথা শুনি দলিত ও হরিজন বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। যান সেখানে কিন্তু দলীয়ভাবে দলিতদের রাজনীতি জায়গা দেবে না।  বিএনপি তথ্য রাজনীতির দল শুধু আপাদের ভোটার হিসেবে দেখবে।  কিন্তু জাতীয় নাগরিক কমিটি চায়, আপনারা রাজনীতি করে আপনারা নিজেরাই যোগেন মন্ডল হন এবং নিজেদের অধিকার নিজেরাই তৈরি করে নেন।  দলিতরা কিন্তু রাজনীতিতে নাই।

জোটবদ্ধ ভাবে হলেই আপনার অধিকার নিশ্চিত করতে পারবেন। রাজধানীতে তেলুগো সম্প্রদায় আছে এটাই অনেকে জানতো না।  আমরা সেখানে গিয়ে দেখছি বিএনপি পোস্টার লাগিয়েছে।  মুজিবাদী সংবিধানর বাদ দিয়ে নতুন করে সংবিধান করা হবে। তাতে সবার অধিকার সমান থাকবে।  যেটা মুজিবাদী সংবিধানে থাকবে না।

সংস্কার কমিশনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সংস্কার কমিশন তারা রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়ে বলেছে উচ্চ পরিষদ পাঁচজন থাকবে।  সেখানে মজলুম কমিউনিটির লোক থাকবে।  তারা প্রত্যেকটা দল ও জাতির গোত্রের কথা বলবে। অধিকারের কথা থাকবে। বিএনপিসহ কিছু দল যে দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছে। সেটা যদি হয় এবং সংস্কার যদি না হয়। যদি সংস্কার কমিশন সংস্কার বাস্তাবায়ন করতে না পারে তাহলে আগের মতো রয়ে যাবে এবং আপনাদের ভোটার হিসেবেই থেকে যেতে হবে। আপনাদের জন্য আপনারা গণপরিষদে যাবেন কথা বলবেন ও যা যা করা লাগে তা প্রশ্ন করবেন এবং নতুন সংবিধানে তা যুক্ত করতে হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা উল্লেখ করে  তিনি আরও বলেন, শ্রীলস্কার মতো রাষ্ট্র যদি মাত্র দুই বছরে শান্তিময় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।  সেখানে ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন বিশ্ববরেণ্য খ্যাতি সম্পন্ন ব্যক্তি।  যদিও তার মধ্যে নানা সময় আমরা টানাপোড়ন দেখতে পাচ্ছি।  কিছু দল সংসদ নির্বাচনের জন্য একো বিধিকিচ্ছি পরিস্থিতি তৈরি করছে।

ড.আতিক মুজাহিদ বলেন, ফ্যাসিবাদীরা দেশের স্বার্থে কিছু করেনি।  এদেশের ইতিহাস তাদের মতো করে সাজিয়েছে। তাই এ সংবিধান সংশোধন করত হবে। কারণ সংবিধান হলো মুজিববাদী।  এখন দেশের সব মানুষের অধিকার তুলে ধরার জন্য সংবিধান সংশোধন করত হবে।   দলিত, হরিজন, তফসিল পরিষদের মানুষ এ দেশে বসবাস করলেও তাদেরকে ভিন্নভাবে দেখা হয়।  তাই আপনাদেরকে নেতৃত্বে আসতে হবে।  নেতৃত্বে এসে নিজেদের অধিকার আদায় করতে হলে রাজনীতিতে আসতে হবে।

আব্দুল্লাহ আল আলামিন বলেন, বাংলাদেশে মানুষের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য মুজিববাদী সংবিধান বাতিল করতে হবে। নতুন করে সংবিধান করতে হবে। এদেশে যোগন মন্ডলের মতো নেতা তৈরি হয়ে নিজেদের অধিকারের দাবি তুলে আদায় করতে হবে।  আপনারা যদি অন্য কোনো রাজনৈতিক দলে ঝুঁকে যান তাহলে তারা আপনাদের  ভোটার হিসেবে দেখবে। তাই নিজেদের অধিকার নিতে হলে সংবিধানে নিজেদের অধিকার, কথা তুলে ধরতে হলে রাজনীতিতে আসতে হবে।

Read Entire Article