দুধ দিয়ে গোসল করে ‘পবিত্রতা’, কী বলে ইসলাম?

বিশেষ আনন্দ উদযাপন বা বাড়তি পবিত্রতা লাভের উদ্দেশে অনেকেই দুধ দিয়ে গোসল করেন। তারা মনে করেন, এর মাধ্যমে পূর্বের পাপ মোচন এবং নতুন জীবনের সূচনা ঘটে। তবে ইসলামি স্কলারদের মতে, এই ধরনের কাজ উদ্ভট, অপ্রয়োজনীয় ও কুসংস্কারমূলক ছাড়া আর কিছুই নয়। কেননা ইসলামে খাদ্যদ্রব্য হিসেবে দুধকে পবিত্র হিসেবে গণ্য করা হলেও, তা দিয়ে গোসল করাকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। কারণ এটি সরাসরি অর্থ ও খাদ্যের অপচয়। ইসলামিক স্কলাররা বলছেন, যদিও দুধ একটি পবিত্র খাবার, কিন্তু এর ব্যবহার অবশ্যই সঠিক স্থানে হতে হবে। গোসলের মতো কাজে দুধ ব্যবহার করলে এর সঠিক ব্যবহার হয় না, বরং অপচয় হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা অপচয়কারীদের সম্পর্কে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে আদমসন্তান, তোমরা খাও এবং পান করো, তবে অপচয় করো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ অপচয়কারীদের ভালোবাসেন না।’ (সুরা আরাফ: ৩১) অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, নিশ্চয়ই যারা অপচয় করে, তারা শয়তানের ভাই এবং শয়তান তার রবের প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ। (সুরা বনি ইসরাইল: ২৮) ইসলাম শেখায়, কোনো অর্জন বা সাফল্যে আনন্দিত হলে মুমিন বান্দার উচিত আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা (শুকরিয

দুধ দিয়ে গোসল করে ‘পবিত্রতা’, কী বলে ইসলাম?

বিশেষ আনন্দ উদযাপন বা বাড়তি পবিত্রতা লাভের উদ্দেশে অনেকেই দুধ দিয়ে গোসল করেন। তারা মনে করেন, এর মাধ্যমে পূর্বের পাপ মোচন এবং নতুন জীবনের সূচনা ঘটে। তবে ইসলামি স্কলারদের মতে, এই ধরনের কাজ উদ্ভট, অপ্রয়োজনীয় ও কুসংস্কারমূলক ছাড়া আর কিছুই নয়। কেননা ইসলামে খাদ্যদ্রব্য হিসেবে দুধকে পবিত্র হিসেবে গণ্য করা হলেও, তা দিয়ে গোসল করাকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। কারণ এটি সরাসরি অর্থ ও খাদ্যের অপচয়।

ইসলামিক স্কলাররা বলছেন, যদিও দুধ একটি পবিত্র খাবার, কিন্তু এর ব্যবহার অবশ্যই সঠিক স্থানে হতে হবে। গোসলের মতো কাজে দুধ ব্যবহার করলে এর সঠিক ব্যবহার হয় না, বরং অপচয় হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা অপচয়কারীদের সম্পর্কে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে আদমসন্তান, তোমরা খাও এবং পান করো, তবে অপচয় করো না, নিশ্চয়ই আল্লাহ অপচয়কারীদের ভালোবাসেন না।’ (সুরা আরাফ: ৩১)

অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, নিশ্চয়ই যারা অপচয় করে, তারা শয়তানের ভাই এবং শয়তান তার রবের প্রতি অতিশয় অকৃতজ্ঞ। (সুরা বনি ইসরাইল: ২৮)

ইসলাম শেখায়, কোনো অর্জন বা সাফল্যে আনন্দিত হলে মুমিন বান্দার উচিত আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা (শুকরিয়া) প্রকাশ করা। এ ক্ষেত্রে অপবিত্র থাকলে গোসল ও অজু করে পবিত্র হওয়ার পর শুকরিয়াস্বরূপ দুই রাকাত নফল নামাজ (সালাতুশ শোকর) আদায় করা যেতে পারে।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা আমাকে স্মরণ করো, তা হলে আমিও তোমাদের স্মরণ করব। আর তোমরা আমার নেয়ামতের শোকর আদায় করো, আমার অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো না।’ (সুরা বাকারা: ১৫২)

শুকরিয়ার নামাজের স্বতন্ত্র কোনো নিয়ম নেই, বরং অন্যান্য নফল নামাজের মতোই তা আদায় করতে হয়। (ফতোয়ায়ে মাহমুদিয়া: ৭/১২৫)।

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে আছে: ‘যা ইচ্ছা পানাহার করো এবং যা ইচ্ছা পরিধান কর, তবে শুধু দুটি বিষয় থেকে বেঁচে থাকো: অপচয় ও অহংকার।’ (সহীহ বুখারী)

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তোমাদের তিনটি কাজ অপছন্দ করেন: (১) অনর্থক কথাবার্তা বলা, (২) সম্পদ নষ্ট করা এবং (৩) অত্যধিক প্রশ্ন করা।’ (সহীহ মুসলিম)

সবশেষে বলা যায়, দুধ দিয়ে গোসল করে পাপ মোচনের ধারণাটি পুরোপুরি ভিত্তিহীন। বরং এটি আল্লাহর দেওয়া নিয়ামতের অপব্যবহার এবং অপচয়; যা ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। আনন্দ প্রকাশের সঠিক পথ হলো শুকরিয়া নামাজ আদায় করা। এ ছাড়া পবিত্রতা অর্জনের ও পরিষ্কার-পরিছন্নতার জন্য পানি ব্যবহার করাই হলো উত্তম পন্থা।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow