নির্বাচনে অতিরিক্ত ব্যয়সহ অনিয়ম: জাবেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক
নির্বাচনি প্রচারে প্রতিটি প্রার্থীকে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করার অনুমতি দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিধি ভঙ্গ করে ১ কোটি টাকার বেশি বা নির্ধারিত ব্যয়ের চারগুন অতিরিক্ত ব্যয় করেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও চট্টগ্রাম ১৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। সম্প্রতি নির্বাচন ও মেয়ের বিয়েতে আকাশচুম্বি ব্যয়, ব্যবসায়ীদের কাছ ঝণ নিয়ে আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগে জাবেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর জাবেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অর্থ আত্মসাৎ, পাচার, ঘুস নেওয়া, ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে সাবেক এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ১১টি মামলা করেছে দুদক। তার দেশে-বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দের আদেশও দিয়েছেন আদালত। দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেছেন, অর্থ পাচার ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে জাবেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধান কর্মকর্তা আইন ও বিধি অনুযায়ী কাজ করছেন। সাইফুজ্জামান চৌধুরী ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের আনোয়ারা থানায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আখতারুজ্জামান চৌধুরী ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা। বাবার মাধ্য
নির্বাচনি প্রচারে প্রতিটি প্রার্থীকে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করার অনুমতি দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিধি ভঙ্গ করে ১ কোটি টাকার বেশি বা নির্ধারিত ব্যয়ের চারগুন অতিরিক্ত ব্যয় করেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও চট্টগ্রাম ১৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।
সম্প্রতি নির্বাচন ও মেয়ের বিয়েতে আকাশচুম্বি ব্যয়, ব্যবসায়ীদের কাছ ঝণ নিয়ে আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগে জাবেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর জাবেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অর্থ আত্মসাৎ, পাচার, ঘুস নেওয়া, ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে সাবেক এই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ১১টি মামলা করেছে দুদক। তার দেশে-বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দের আদেশও দিয়েছেন আদালত।
দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বলেছেন, অর্থ পাচার ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে জাবেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধান কর্মকর্তা আইন ও বিধি অনুযায়ী কাজ করছেন।
সাইফুজ্জামান চৌধুরী ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের আনোয়ারা থানায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আখতারুজ্জামান চৌধুরী ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা। বাবার মাধ্যমে রাজনীতিতে সক্রিয় হন সাইফুজ্জামান। সাবেক এই মন্ত্রী ইউসিবিএলের নির্বাহী কমিটি এবং দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান আরামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান ছিলেন।
২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই ভোটে, ১ লাখ ৮৭ হাজার ৯২৫ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জাবেদ। নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৮৬৪ জন। জাবেদ ছাড়াও আরও ৬ প্রার্থী ওই ভোটে অংশ নিয়েছিলেন। এর আগে একাদশ ও দশম সংসদ নির্বাচনেও একই আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাইফুজ্জামান ২৫ লাখ ৬৪ হাজার টাকা খরচ করেছেন। জাগো নিউজের হাতে আসা তথ্য-উপাত্ত বলছে, ২০২৩ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনি ব্যয় শুরু করেন সাইফুজ্জামান।
আরমিট গ্রুপের দুই কর্মকর্তা সায়েম ভাই ও দোলন মজুমদারের মাধ্যমে এই ব্যয় করেন সাইফুজ্জামান।
ওই ব্যয়ের বিবরণী বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২৩ সালে ১০ ডিসেম্বর সেন্টার কমিটি বাবদ ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং নির্বাচনি ডিজিটাল পিকচার বাবদ ১০ লাখ টাকা খরচ করেন তিনি।
২০২৩ ও ২০২৪ সালের বিভিন্ন সময়ে জনসভা বাবদ ৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা, প্রিন্টিং ব্যয় বাবদ ২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, নির্বাচনি তার প্রধান কার্যালয় বাবদ ১০ লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ করেছেন।
দুদক সূত্র ও বিভিন্ন নথি ঘেটে দেখা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদে ২৫ লাখ টাকা নয়, তিনি ব্যয় করেছেন মোট ১ কোটি ২৮ লাখ ৩৬২ টাকা। ভোটের মাঠে তার হয়ে এই ব্যয় করেন দোলন মজুমদার, সায়েম ভাই ও আরাফাত নামের তিন ব্যক্তি, যারা আরামিট গ্রুপের কর্মকর্তা।
নথি ঘেটে দেখা যায়, ভোটে তিনি স্টেশনারি বাবদ ব্যয় করেন ৭৪ হাজার টাকা, ট্যাক্সি খরচ বা যাতায়াত খরচ বাবদ ২ লাখ টাকা, সেন্টার খরচ বাবদ ৩৫ লাখ টাকা, অন্য বিভিন্ন খরচ বাবদ ১৩ লাখ টাকা খরচ করেন।
এছাড়া, সুগ্রীব মজুমদারের নামের এক ব্যক্তি তার হয়ে ২০২৩ সালে ১৯ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ২ লাখ ৮৬ হাজার টাকা নির্বাচন বাবদ ব্যয় করেন।
দুদকের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান বলেন, জাবেদের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে একাধিক মামলা করছে দুদক। সেইসব মামলা অনুসন্ধান বা চার্জশিট পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগের বিষয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
এসব বিষয়ে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
দুদক সূত্রে আরও জানা যায়, মেয়ের বিয়েতে প্রায় ২৫ কোটি খরচ করেছেন জাবেদ। ভারতে ওই জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ের আয়োজন করেন তিনি। বিয়ের খরচ করতে পাশ্ববর্তী দেশটিতে কোটি টাকা পাচার করেছেন জাবেদ, এমন অভিযোগও রয়েছে।
এসএম/এএমএ
What's Your Reaction?