নীরবে আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে যে ১২ অভ্যাস

আমরা সবাই সুস্থ ও সুখী থাকতে চাই, আর এর জন্য সাধারণত ভালো অভ্যাস গড়ে তোলা দরকার। আপনি যদি নিয়মিত প্রোটিন, ফল এবং সবজি খেয়ে থাকেন এবং সক্রিয় জীবনযাপন করেন, তাহলে আপনি অনেকটাই এগিয়ে। তবুও বিভিন্ন কারণে আমরা অনেকেই কিছু অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসে জড়িয়ে পড়ি—সময় কম, ব্যস্ত জীবন, সুবিধা বা কখনো শুধু আলসেমি।  এসব অভ্যাস স্বল্পমেয়াদে খুব বড় ক্ষতি না করলেও, দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াতে পারে যদি ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ না করা হয়। বর্তমানে ডাক্তাররা আমাদের যে অভ্যাসগুলোকে সবচেয়ে ক্ষতিকর বলে জানিয়েছেন, চলুন সেসব জেনে নিই।  অল্প পরিমাণেও অ্যালকোহল পান করা হেমাটোলজিস্ট ও অনকোলজিস্ট ড. সঞ্জয় জুনেজা বলেন, যে কোনো পরিমাণ অ্যালকোহলই স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়, এমনকি ক্যানসারের ঝুঁকিও। তিনি বলেন, ‘অনেকে ভাবেন শুধু বেশি পান করলেই ক্ষতি হয়, কিন্তু অল্প পানেও ঝুঁকি বাড়ে, বিশেষ করে স্তনের ক্যানসার।’ যথেষ্ট ফল ও সবজি না খাওয়া ড. জুনেজা বলেন, উদ্ভিজ্জ খাবার কম খেলে আমাদের অন্ত্রে থাকা উপকারী জীবাণুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা রোগ প্রতিরোধে বড় ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে ফাইবার হজম উন্নত করে, প্রদাহ কমায় এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগ থেক

নীরবে আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে যে ১২ অভ্যাস

আমরা সবাই সুস্থ ও সুখী থাকতে চাই, আর এর জন্য সাধারণত ভালো অভ্যাস গড়ে তোলা দরকার। আপনি যদি নিয়মিত প্রোটিন, ফল এবং সবজি খেয়ে থাকেন এবং সক্রিয় জীবনযাপন করেন, তাহলে আপনি অনেকটাই এগিয়ে।

তবুও বিভিন্ন কারণে আমরা অনেকেই কিছু অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসে জড়িয়ে পড়ি—সময় কম, ব্যস্ত জীবন, সুবিধা বা কখনো শুধু আলসেমি। 

এসব অভ্যাস স্বল্পমেয়াদে খুব বড় ক্ষতি না করলেও, দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াতে পারে যদি ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ না করা হয়। বর্তমানে ডাক্তাররা আমাদের যে অভ্যাসগুলোকে সবচেয়ে ক্ষতিকর বলে জানিয়েছেন, চলুন সেসব জেনে নিই। 

অল্প পরিমাণেও অ্যালকোহল পান করা

হেমাটোলজিস্ট ও অনকোলজিস্ট ড. সঞ্জয় জুনেজা বলেন, যে কোনো পরিমাণ অ্যালকোহলই স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়, এমনকি ক্যানসারের ঝুঁকিও। তিনি বলেন, ‘অনেকে ভাবেন শুধু বেশি পান করলেই ক্ষতি হয়, কিন্তু অল্প পানেও ঝুঁকি বাড়ে, বিশেষ করে স্তনের ক্যানসার।’

যথেষ্ট ফল ও সবজি না খাওয়া

ড. জুনেজা বলেন, উদ্ভিজ্জ খাবার কম খেলে আমাদের অন্ত্রে থাকা উপকারী জীবাণুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যা রোগ প্রতিরোধে বড় ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে ফাইবার হজম উন্নত করে, প্রদাহ কমায় এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগ থেকে রক্ষা করে বলে জানান তিনি।

মাঝে মধ্যে ধূমপান করা

ধূমপান যে কোনো মাত্রায় ক্ষতিকর—ফুসফুস, গলা, পেটসহ নানা ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। ‘ধূমপানের কোনো নিরাপদ মাত্রা নেই; অল্প বা সামাজিকভাবে ধূমপান করলেও ক্ষতি হয়,’ বলেন ড. জুনেজা। ‘হুক্কাও এর মধ্যে পড়ে, কখনো কখনো আরও খারাপ।’

নাক ডাকা উপেক্ষা করা

ড. টনিয়া ফার্মার বলেন, নাক ডাকা নির্দোষ মনে হলেও এটি ‘স্লিপ অ্যাপনিয়ার’ লক্ষণ হতে পারে, যা উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্ট্রোক এমনকি আকস্মিক মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়।

নাকের স্প্রে ও ডিকনজেস্ট্যান্ট নিয়মিত ব্যবহার করা

ড. ফার্মারের মতে, আফরিন বা নিওসাইনেফ্রিনের মতো স্প্রে নিয়মিত ব্যবহার করলে ‘রিবাউন্ড কনজেশন’ হয়—স্প্রে বন্ধ করলেই নাক আরও বেশি বন্ধ হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘এর বদলে ফ্লোনেজ বা নাসাকোর্টের মতো ন্যাজাল স্টেরয়েড ব্যবহার করা ভালো।’ 

দীর্ঘ সময় বসে থাকা

যারা ডেস্ক জব করেন, তারা দিনে অনেকক্ষণ বসে থাকেন। ড. জেনিফার ব্রাউন বলেন, দিনে ৮ ঘণ্টা বা তার বেশি বসে থাকা হৃদরোগ ও স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ায়। ‘কাজের সময় সামান্য দাঁড়িয়ে থাকা বা হাঁটাই স্বাস্থ্য অনেকটাই ভালো রাখে।’

ঠিকমতো ঘুম না হওয়া

ড. লিলি জনস্টন বলেন, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে শুধু ক্লান্তি নয়—রক্তচাপ বাড়ে, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স খারাপ হয়, স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বাড়ে।

নিয়মিত ডাক্তার দেখানো এড়িয়ে যাওয়া

ড. জনস্টন জানান, বার্ষিক চেকআপ না করলে উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে চিনি বেশি থাকা বা কোলেস্টেরল সমস্যার মতো বিষয়গুলো বছরের পর বছর অজানা থেকে যায়। তিনি বলেন, ‘এসব নীরব ঘাতক প্রথমে কোনো লক্ষণ দেখায় না; কিন্তু ধীরে ধীরে ধমনি ক্ষতিগ্রস্ত করে। নিয়মিত চেকআপে সমস্যা খুব আগেই ধরা পড়ে।’

একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ব্যবহার করা

ড. ব্রাউন বলেন, শুধু পরিবেশ নয়, আমাদের শরীরেও প্লাস্টিকের ক্ষতি হয়। ‘মাইক্রোপ্লাস্টিক আমাদের শরীরে, এমনকি মস্তিষ্কেও জমা হতে পারে। তাই কাচের কনটেইনার বা স্টেইনলেস স্টিলের বোতল ব্যবহার করাই ভালো।’

অতিরিক্ত চিনিযুক্ত পানীয় পান করা

ড. ব্রাউনের মতে, সোডা, এনার্জি ড্রিংক বা প্যাকেটজাত জুস নিয়মিত পান করা খুব ক্ষতিকর। এগুলোতে শুধু ফাঁকা ক্যালোরি থাকে যা ক্ষুধা মেটায় না; বরং ডায়াবেটিস ও স্থূলতার ঝুঁকি বাড়ায়। তিনি বলেন, ‘যতটা সম্ভব পানি পান করাই ভালো।’

কানে কম শোনা বিষয়টি অবহেলা করা

যদি বারবার কাউকে কথা পুনরায় বলতে বলতে হয় বা টিভির ভলিউম বাড়াতে হয়, তবে এটি অবহেলা করবেন না। ড. ফার্মার জানান, প্রথম দিকের হিয়ারিং লস উপেক্ষা করলে মস্তিষ্কের ওপর চাপ বাড়ে, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা ও মানসিক সক্ষমতা কমার ঝুঁকি বাড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, চিকিৎসাহীন হিয়ারিং লস ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

ব্যায়াম না করা

ড. অ্যালেক্স ম্যাকডোনাল্ড বলেন, ব্যস্ততার কারণে অনেকেই ব্যায়াম বাদ দেন, কিন্তু শারীরিক কার্যকলাপ স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি। লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করা বা গাড়ি একটু দূরে পার্ক করাও প্রতিদিনের স্টেপ বাড়াতে সাহায্য করে।

সূত্র : Good Housekeeping

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow