পাহাড়ি নারীদের তৈরি পিনন-হাদির কদর দেশ পেরিয়ে বিদেশে

পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী পোশাক ‘পিনন-হাদি’ এখন কেবল সংস্কৃতির প্রতীক নয়, এটি পাহাড়ি নারীদের স্বাবলম্বী হওয়ার প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম এমনকি বিদেশেও এর চাহিদা বাড়ায় ব্যবসার দ্রুত প্রসার লাভ করছে। তবে এই ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তারা সরকারি ঋণ ও সহযোগিতা না পাওয়ার কারণে পুঁজির সংকটে ভুগছেন। জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন ভাষাভাষীর পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর রয়েছে। এসব জনগোষ্ঠীর রয়েছে নিজস্ব ভাষা, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। পাহাড়ি এসব জনগোষ্ঠী নারীদের প্রধান ঐতিহ্যবাহী পোশাক পিনন-হাদি। ছোট বড় বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি পাহাড়ের প্রধান উৎসব বিজু, বৈসু, সাংগ্রাই, বিহু উপলক্ষে পাহাড়ি নারীদের পছন্দের তালিকায় প্রথমে থাকে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের পরিচয় বহন করা এই পোশাক। পাহাড়ি নারীদের ঐতিহ্যবাহী এই পরিধেয় বস্ত্রের চাহিদা দিনদিন বাড়ছে। রাঙ্গামাটি শহরের বনরুপা বাজারে সপ্তাহে দুই দিন শনি ও বুধবারে জমজমাট বাজার বসে পিনন-হাদির। খুচরা ও পাইকারি দামে বিক্রি হয় নারীদের এই পোশাক। হাটের দিন ভোরে দূরদূরান্ত থেকে নানা ডিজাইনের পিনন-হাদি নিয়ে বিক্রি ক

পাহাড়ি নারীদের তৈরি পিনন-হাদির কদর দেশ পেরিয়ে বিদেশে

পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী পোশাক ‘পিনন-হাদি’ এখন কেবল সংস্কৃতির প্রতীক নয়, এটি পাহাড়ি নারীদের স্বাবলম্বী হওয়ার প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম এমনকি বিদেশেও এর চাহিদা বাড়ায় ব্যবসার দ্রুত প্রসার লাভ করছে। তবে এই ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তারা সরকারি ঋণ ও সহযোগিতা না পাওয়ার কারণে পুঁজির সংকটে ভুগছেন।

জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন ভাষাভাষীর পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর রয়েছে। এসব জনগোষ্ঠীর রয়েছে নিজস্ব ভাষা, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। পাহাড়ি এসব জনগোষ্ঠী নারীদের প্রধান ঐতিহ্যবাহী পোশাক পিনন-হাদি। ছোট বড় বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি পাহাড়ের প্রধান উৎসব বিজু, বৈসু, সাংগ্রাই, বিহু উপলক্ষে পাহাড়ি নারীদের পছন্দের তালিকায় প্রথমে থাকে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের পরিচয় বহন করা এই পোশাক।

পাহাড়ি নারীদের ঐতিহ্যবাহী এই পরিধেয় বস্ত্রের চাহিদা দিনদিন বাড়ছে। রাঙ্গামাটি শহরের বনরুপা বাজারে সপ্তাহে দুই দিন শনি ও বুধবারে জমজমাট বাজার বসে পিনন-হাদির। খুচরা ও পাইকারি দামে বিক্রি হয় নারীদের এই পোশাক। হাটের দিন ভোরে দূরদূরান্ত থেকে নানা ডিজাইনের পিনন-হাদি নিয়ে বিক্রি করতে আসেন বিক্রেতারা। চাহিদা বাড়তে থাকায় ঢাকা -চট্টগ্রামের গণ্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে বিদেশেও। ঐতিহ্যবাহী এই পোশাকের বিক্রি করে স্বাবলম্বী হচ্ছে পাহাড়ি নারীরা।

পাহাড়ি নারীদের তৈরি পিনন-হাদির কদর দেশ পেরিয়ে বিদেশে

সম্প্রতি রাঙ্গামাটির বনরুপা বাজার ঘুরে দেখা যায়, নানা ডিজাইনের সারি সারি পিনন-হাদি বিক্রি করছেন নারী বিক্রেতারা। একজোড়া পিনন-হাদির দাম সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতা শতাব্দী চাকমা ও পহেলী চাকমা বলেন, আমরা সকালে ঘাগড়া থেকে এসেছি। এখানে কম দামে পিনন-হাদি পাওয়া যায় তাই কিনতে আসেছি।

পাহাড়ি নারীদের তৈরি পিনন-হাদির কদর দেশ পেরিয়ে বিদেশে

বিক্রেতা তিশা চাকমা বলেন, প্রতিটি পিনন-হাদির ডিজাইন ও কাপড়ের কোয়ালিটির ওপর দাম নির্ভর করে। একটা পিনন-হাদি সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।

বিক্রেতা শ্যামলী চাকমা বলেন, পাহাড়ি নারী কারিগরের মাধ্যমে বুনন করে আমরা সপ্তাহে দুই দিন বাজারে এনে বিক্রি করি। মোটামুটি ভালো বিক্রি হয়। অনেকে পাইকারি দরে কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে নিয়ে যায়। বিশেষ করে যেসব দেশে চাকমা কমিউনিটির লোকজন বসবাস করে।

পাহাড়ি নারীদের তৈরি পিনন-হাদির কদর দেশ পেরিয়ে বিদেশে

নির্মলা চাকমা বলেন, এই পিনন-হাদি বিক্রি করে আমরা আর্থিকভাবে যেমন স্বাবলম্বী হচ্ছি। অন্যদিকে আমাদের যে ঐতিহ্য সেটা টিকিয়ে রাখছি। বিজু ও বিয়েসহ বিভিন্ন সামাজিক উৎসবে পিননের চাহিদা বেশি থাকে। তবে আমাদের ব্যবসা করতে অনেক অর্থের দরকার হয়। কিন্তু আমরা কোনো সরকারি সহযোগিতা বা কোনো ঋণ পাই না। নিজেদের জমানো টাকা আর নানাজনের থেকে ধারদেনা করে ব্যবসা চালাতে হয়।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন রাঙ্গামাটি জেলা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক ইসমাইল হোসেন বলেন, এই ধরনের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য যে প্রণোদনামূলক বিনা সুদে ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে সেই প্রকল্প বন্ধ রয়েছে। যার কারণে তাদেরকে ঋণ দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তবে তারা চাইলে আমরা তাদেরকে ঋণের জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংকে সুপারিশ করতে পারি।

আরমান খান/এমএন/জেআইএম

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow