প্রতিদিনের এই ৫ অভ্যাস পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা কমিয়ে দেয়

পুরুষদের প্রজননস্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা আমাদের সমাজে এখনো অনেকটাই উপেক্ষিত। বিশেষ করে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাওয়া, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় অলিগোস্পার্মিয়া বলা হয়। এ বিষয়টি নিয়ে অনেক পুরুষই কথা বলতে লজ্জা বা সংকোচ বোধ করেন। অথচ কম শুক্রাণু সংখ্যা পুরুষের মানসিক শান্তি নষ্ট করার পাশাপাশি দাম্পত্য জীবন ও ভবিষ্যৎ পরিবার পরিকল্পনাকেও জটিল করে তুলতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, স্বাভাবিকের তুলনায় বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কম থাকলেই তাকে লো স্পার্ম কাউন্ট বলা হয়। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, শুক্রাণু বহনকারী নালির ত্রুটি, শিল্পকারখানার রাসায়নিক পদার্থ, ভারী ধাতুর সংস্পর্শ, টিউমার, সংক্রমণ কিংবা বীর্যপাতজনিত সমস্যাও এর পেছনে দায়ী হতে পারে। তবে এসবের পাশাপাশি কিছু দৈনন্দিন অভ্যাসও নীরবে শুক্রাণুর সংখ্যা কমিয়ে দেয়। লক্ষণ কী হতে পারে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে অনেক সময় যৌন আকাঙ্ক্ষা কমে যাওয়া, ইরেকশন ধরে রাখতে সমস্যা (ইরেকটাইল ডিসফাংশন), অণ্ডকোষে ব্যথা, ফোলা বা গাঁটের মতো অনুভূতি দেখা দিতে পারে। এমনকি মুখে বা শরীরে লোম কমে যাওয়ার লক্ষণও দেখা যায়। এর ফলে স্বাভাবিকভাবে সন্তান ধারণে সমস্যা হয়, যা পুরুষদের মধ্যে

প্রতিদিনের এই ৫ অভ্যাস পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা কমিয়ে দেয়

পুরুষদের প্রজননস্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা আমাদের সমাজে এখনো অনেকটাই উপেক্ষিত। বিশেষ করে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাওয়া, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় অলিগোস্পার্মিয়া বলা হয়। এ বিষয়টি নিয়ে অনেক পুরুষই কথা বলতে লজ্জা বা সংকোচ বোধ করেন। অথচ কম শুক্রাণু সংখ্যা পুরুষের মানসিক শান্তি নষ্ট করার পাশাপাশি দাম্পত্য জীবন ও ভবিষ্যৎ পরিবার পরিকল্পনাকেও জটিল করে তুলতে পারে।

চিকিৎসকদের মতে, স্বাভাবিকের তুলনায় বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কম থাকলেই তাকে লো স্পার্ম কাউন্ট বলা হয়। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, শুক্রাণু বহনকারী নালির ত্রুটি, শিল্পকারখানার রাসায়নিক পদার্থ, ভারী ধাতুর সংস্পর্শ, টিউমার, সংক্রমণ কিংবা বীর্যপাতজনিত সমস্যাও এর পেছনে দায়ী হতে পারে। তবে এসবের পাশাপাশি কিছু দৈনন্দিন অভ্যাসও নীরবে শুক্রাণুর সংখ্যা কমিয়ে দেয়।

লক্ষণ কী হতে পারে

শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে অনেক সময় যৌন আকাঙ্ক্ষা কমে যাওয়া, ইরেকশন ধরে রাখতে সমস্যা (ইরেকটাইল ডিসফাংশন), অণ্ডকোষে ব্যথা, ফোলা বা গাঁটের মতো অনুভূতি দেখা দিতে পারে। এমনকি মুখে বা শরীরে লোম কমে যাওয়ার লক্ষণও দেখা যায়। এর ফলে স্বাভাবিকভাবে সন্তান ধারণে সমস্যা হয়, যা পুরুষদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ায় এবং দাম্পত্য সম্পর্কে মানসিক চাপ সৃষ্টি করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সচেতন জীবনযাপন ও কিছু অভ্যাস পরিহার করলে এই ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব।

যে ৫টি দৈনন্দিন অভ্যাস শুক্রাণুর সংখ্যা কমাতে পারে

১. মাদক সেবন

অনেকেই শরীরচর্চা ও পেশি শক্ত করার জন্য অ্যানাবলিক স্টেরয়েড ব্যবহার করেন। কিন্তু এতে অণ্ডকোষ ছোট হয়ে যেতে পারে এবং শুক্রাণু উৎপাদন মারাত্মকভাবে কমে যায়। পাশাপাশি কোকেন বা গাঁজা সেবনও শুক্রাণুর সংখ্যা ও গুণগত মান দুটোই কমিয়ে দেয়। তাই প্রজননস্বাস্থ্য সুরক্ষায় মাদক থেকে দূরে থাকাই সবচেয়ে নিরাপদ।

২. নিয়মিত অ্যালকোহল গ্রহণ

প্রতিদিন বা অতিরিক্ত মদ্যপান পুরুষের প্রজননস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এটি শরীরে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমিয়ে দেয়, যার সরাসরি প্রভাব পড়ে শুক্রাণু উৎপাদনে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, যত দ্রুত সম্ভব অ্যালকোহল গ্রহণ কমানো বা বন্ধ করা।

৩. ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ধূমপায়ীদের শুক্রাণুর সংখ্যা অধূমপায়ীদের তুলনায় কম হয়। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য শুক্রাণুর ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং এর গতি ও সংখ্যা কমিয়ে দেয়। তাই ধূমপান ছাড়ার উদ্যোগ নেওয়া প্রজননস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

৪. অতিরিক্ত মানসিক চাপ

ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনের চাপ পুরুষের উর্বরতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ শরীরের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে, যা শুক্রাণু উৎপাদন ব্যাহত করে। হতাশা ও ডিপ্রেশন শুক্রাণুর ঘনত্বও কমাতে পারে। তাই মানসিক চাপ কমাতে যোগব্যায়াম, মেডিটেশন, কিংবা পছন্দের শখ—যেমন বই পড়া, বাগান করা, ছবি তোলা বা গান-বাজনায় সময় দেওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

৫. অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা

অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা পুরুষের হরমোনের স্বাভাবিক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে। এর ফলে শুক্রাণুর মান ও সংখ্যা দুটোই কমে যেতে পারে। সুষম খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে আদর্শ ওজন ধরে রাখা পুরুষের প্রজননস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সচেতন হলেই ঝুঁকি কমানো সম্ভব

শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাওয়া পুরুষ বন্ধ্যত্বের ঝুঁকি বাড়ালেও বিষয়টি এখনো আমাদের সমাজে ট্যাবু হিসেবেই রয়ে গেছে। চিকিৎসকরা বলছেন, লজ্জা বা সংকোচ ঝেড়ে ফেলে এ বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনই পারে পুরুষদের প্রজননস্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে।

সচেতন অভ্যাস, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও মানসিক সুস্থতাই ভবিষ্যতের সুস্থ পরিবার গঠনের প্রথম শর্ত—এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্র : দ্য হেলথ সাইট

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow