প্রেগন্যান্সিতে বেবির গ্রোথ স্লো: শনাক্ত হলে করণীয়
গর্ভাবস্থায় বেবির ওজন বা বৃদ্ধি যদি গর্ভকাল অনুযায়ী স্বাভাবিকের তুলনায় কম দেখা যায়, তখন এটিকে ফিটাল গ্রোথ রেস্ট্রিকশন বা ‘বেবির গ্রোথ স্লো’ বলা হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থা, যা মা ও শিশুর উভয়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। অভিজ্ঞ গাইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন সঠিক সময়ে ধরা পড়লে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গ্রোথ উন্নত করা সম্ভব। রোববার ফেসবুক স্টাটাসে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. সাবরিনা সুলতানা মিষ্টি জানিয়েছেন, বেবির গ্রোথ স্লো হওয়ার কারণগুলোর মধ্যে বেশি দেখা যায়-প্লাসেন্টার অকার্যকারিতা, উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস, মায়ের রক্তস্বল্পতা, পুষ্টির অভাব, থাইরয়েড সমস্যা, ইনফেকশন এবং ধূমপান বা তামাক ব্যবহারের প্রভাব। আল্ট্রাসাউন্ডে FGR ধরা পড়লে কী করবেন?ডা. সাবরিনা বলেন, প্রথম করণীয় হলো দ্রুত একজন অভিজ্ঞ গাইনি চিকিৎসকের কাছে যাওয়া। পরিস্থিতি মূল্যায়নে টার্গেটেড আল্ট্রাসাউন্ড, ডপলার স্টাডি, বেবির বায়োমেট্রি, পানির পরিমাণ, প্লাসেন্টার অবস্থা এবং আম্বিলিকাল আর্টারি ডপলার পরীক্ষা করা খুব জরুরি। এসব রিপোর্টই চিকিৎসার মূল দিক ন
গর্ভাবস্থায় বেবির ওজন বা বৃদ্ধি যদি গর্ভকাল অনুযায়ী স্বাভাবিকের তুলনায় কম দেখা যায়, তখন এটিকে ফিটাল গ্রোথ রেস্ট্রিকশন বা ‘বেবির গ্রোথ স্লো’ বলা হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থা, যা মা ও শিশুর উভয়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
অভিজ্ঞ গাইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন সঠিক সময়ে ধরা পড়লে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গ্রোথ উন্নত করা সম্ভব।
রোববার ফেসবুক স্টাটাসে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. সাবরিনা সুলতানা মিষ্টি জানিয়েছেন, বেবির গ্রোথ স্লো হওয়ার কারণগুলোর মধ্যে বেশি দেখা যায়-প্লাসেন্টার অকার্যকারিতা, উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস, মায়ের রক্তস্বল্পতা, পুষ্টির অভাব, থাইরয়েড সমস্যা, ইনফেকশন এবং ধূমপান বা তামাক ব্যবহারের প্রভাব।
আল্ট্রাসাউন্ডে FGR ধরা পড়লে কী করবেন?
ডা. সাবরিনা বলেন, প্রথম করণীয় হলো দ্রুত একজন অভিজ্ঞ গাইনি চিকিৎসকের কাছে যাওয়া। পরিস্থিতি মূল্যায়নে টার্গেটেড আল্ট্রাসাউন্ড, ডপলার স্টাডি, বেবির বায়োমেট্রি, পানির পরিমাণ, প্লাসেন্টার অবস্থা এবং আম্বিলিকাল আর্টারি ডপলার পরীক্ষা করা খুব জরুরি। এসব রিপোর্টই চিকিৎসার মূল দিক নির্ধারণ করে।
মায়ের স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণ জরুরি, অনেক সময় মায়ের শারীরিক সমস্যা বেবির গ্রোথ কমিয়ে দেয়। যেমন—
রক্তচাপ বেশি হলে নিয়মিত BP মনিটরিং ও ওষুধ
ডায়াবেটিস থাকলে সুগার কন্ট্রোল
রক্তস্বল্পতা কমাতে আয়রন ও ফোলেট
থাইরয়েড সমস্যা হলে নিয়মিত ওষুধ
এসব নিয়ন্ত্রণ না করলে শিশুর গ্রোথ বাড়ানো সম্ভব নয়।
পুষ্টি—গ্রোথ উন্নতির মূল চাবিকাঠি
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিন পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার না খেলে বেবির ওজন বাড়তে দেরি হয়। এজন্য ডিম, দুধ, মাছ-মাংস-ডাল, সবজি, ফল, বাদাম, দই এবং প্রয়োজন হলে প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কম পরিমাণে বারবার খাওয়া, পর্যাপ্ত পানি পান এবং যথেষ্ট বিশ্রাম খুব গুরুত্বপূর্ণ।
বাম কাতে বিশ্রাম কেন জরুরি?
বাম কাতে শোয়া অবস্থায় প্লাসেন্টায় রক্তসঞ্চালন বাড়ে, ফলে বেবি বেশি অক্সিজেন ও পুষ্টি পায়-যা গ্রোথ উন্নত করে।
ওষুধ নিয়মিত খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ
ডা. সাবরিনা বলেন, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফোলিক অ্যাসিড, প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট এবং প্রয়োজন হলে অ্যাসপিরিন-এসব ওষুধ গ্রোথ সাপোর্ট করতে সাহায্য করে। চিকিৎসকের নির্দেশনা ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়।
ক্ষতিকর অভ্যাস সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে হবে
ধূমপান, তামাক, অ্যালকোহল, অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং রাত জাগা-এসব অভ্যাস সরাসরি শিশুর গ্রোথে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
নিয়মিত গ্রোথ মনিটরিং জরুরি
সাধারণত প্রতি ১–২ সপ্তাহে বেবির গ্রোথ, ডপলার এবং NST পরীক্ষা করা হয়। কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয়।
কখন হাসপাতালে ভর্তি হতে হতে পারে?
যদি বেবির পানি কমে যায়, ডপলারে রক্তপ্রবাহে সমস্যা দেখা দেয়, বেবির নড়াচড়া কমে যায় বা মায়ের BP খুব বেড়ে যায়-তাহলে হাসপাতালে ভর্তি রেখে পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন হতে পারে।
ডেলিভারির সময় নির্ধারণ কীভাবে হয়?
৩৬–৩৭ সপ্তাহের পরও যদি গ্রোথ না বাড়ে বা ডপলার খারাপ হয়-তাহলে অনেক সময় বেবির নিরাপত্তার জন্য আগেই ডেলিভারির সিদ্ধান্ত নিতে হয়। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করে মা ও শিশুর অবস্থার ওপর।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভয় বা দুশ্চিন্তা নয়-নিয়মিত ফলোআপই FGR ব্যবস্থাপনার মূল চাবিকাঠি। সময়মতো শনাক্ত হলে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিশুর গ্রোথ উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নতি করা সম্ভব।
এসইউজে/এমআরএম
What's Your Reaction?