বাড়ি তো নয় পাখির বাসা ভেন্না পাতার ছানি

‘বাড়ি তো নয় পাখির বাসা ভেন্না পাতার ছানি, একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি’কবি জসিম উদ্দিনের আসমানী কবিতার এ চিত্রই যেন দেখা গেলো মাগুরার মহম্মদপুরে। উপজেলার সূর্যকুন্ড গ্রামের বাসিন্দা আমানুল্লাহ ফকিরের থাকার ঘরটি কবিতার পঙ্‌ক্তি মনে করিয়ে দেয়। ওই গ্রামের হতদরিদ্র আমানুল্লাহ ফকির এমনই পলিথিনের ছাউনি দেওয়া ছোট এক মাটির ঘরে প্রায় ১০ বছর ধরে বাস করছেন। শীতের মৌসুমে যখন অনেকে ঘর গরম রাখতে রুম হিটার, দামি কম্বল, লেপ ও চাদরে নিজেদের উষ্ণ রাখছেন তখন আমানুল্লাহ ফকিরের নেই মাথা গোঁজার মতো একটি শক্ত ঘরও। তিনি অন্তত ১০ বছর ধরে মাটির দেওয়াল তুলে কোনোরকম আশ্রয়স্থল বানিয়েছেন। আরও পড়ুন:চিকিৎসা বন্ধ, হুইলচেয়ারে বসেই চলছে শাওনের জীবিকার লড়াইতরুণ আশিকের দুটি কিডনিই বিকল, সাহায্যের আবেদনদুই মেয়ের চিকিৎসায় কিডনি বিক্রি চান হতভাগা বাবা সেই ঘরের ছাউনি করা হয়েছে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে আনা পুরোনো পলিথিন দিয়ে। হাড় কাঁপানো শীতের মাঝেও রাতে ঘুমানোর জন্য তার রয়েছে মাত্র কয়েকটি ছেঁড়া বস্তা আর একটি কাপড়। রান্নার জন্য নেই কোনো পাতিল বা চুলা। নেই জ্বালানি বা পানি খাওয়ার মতো একটি মগও। অন্যের বাড়ির দরজায় হাত প

বাড়ি তো নয় পাখির বাসা ভেন্না পাতার ছানি

‘বাড়ি তো নয় পাখির বাসা ভেন্না পাতার ছানি, একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি’কবি জসিম উদ্দিনের আসমানী কবিতার এ চিত্রই যেন দেখা গেলো মাগুরার মহম্মদপুরে। উপজেলার সূর্যকুন্ড গ্রামের বাসিন্দা আমানুল্লাহ ফকিরের থাকার ঘরটি কবিতার পঙ্‌ক্তি মনে করিয়ে দেয়। ওই গ্রামের হতদরিদ্র আমানুল্লাহ ফকির এমনই পলিথিনের ছাউনি দেওয়া ছোট এক মাটির ঘরে প্রায় ১০ বছর ধরে বাস করছেন।

শীতের মৌসুমে যখন অনেকে ঘর গরম রাখতে রুম হিটার, দামি কম্বল, লেপ ও চাদরে নিজেদের উষ্ণ রাখছেন তখন আমানুল্লাহ ফকিরের নেই মাথা গোঁজার মতো একটি শক্ত ঘরও। তিনি অন্তত ১০ বছর ধরে মাটির দেওয়াল তুলে কোনোরকম আশ্রয়স্থল বানিয়েছেন।

আরও পড়ুন:
চিকিৎসা বন্ধ, হুইলচেয়ারে বসেই চলছে শাওনের জীবিকার লড়াই
তরুণ আশিকের দুটি কিডনিই বিকল, সাহায্যের আবেদন
দুই মেয়ের চিকিৎসায় কিডনি বিক্রি চান হতভাগা বাবা

সেই ঘরের ছাউনি করা হয়েছে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে আনা পুরোনো পলিথিন দিয়ে। হাড় কাঁপানো শীতের মাঝেও রাতে ঘুমানোর জন্য তার রয়েছে মাত্র কয়েকটি ছেঁড়া বস্তা আর একটি কাপড়। রান্নার জন্য নেই কোনো পাতিল বা চুলা। নেই জ্বালানি বা পানি খাওয়ার মতো একটি মগও। অন্যের বাড়ির দরজায় হাত পেতে পাওয়া খাবারই তার জীবনের একমাত্র অবলম্বন।

বাড়ি তো নয় পাখির বাসা ভেন্না পাতার ছানি

স্থানীয়রা জানান, আমানুল্লাহ ফকিরের দুটি সন্তান রয়েছে। দুজনকেই বিয়ে দিয়েছেন। তারা নিজেদের মতো সংসার চালাতেই হিমশিম খান। তারপরও বাবাকে যতটুকু পারে দেখভালের চেষ্টা করে। কিন্তু সামর্থ্য না থাকায় বাবার ভাঙা ঘর ঠিক করে দিতে পারছেন না তারা।

আরও পড়ুন:
শেষ বয়সে খুপরিতে দিন কাটছে প্রবাসীর, পাশে নেই স্ত্রীসহ স্বজনরা
উপার্জনের শেষ সম্বল দুই গরু চুরি হওয়ায় নিঃস্ব বৃদ্ধা জরিনা বেগম
টিউমারে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে মা-ছেলের জীবন

বড় ছেলে মো.সাইম ফকির বলেন, আমরা দুই ভাই পাশেই আলাদাভাবে থাকি। আমাদের সাধ্যমতো যার জায়গা থেকে বাবাকে খাবার দেওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু অভাবের জন্য হয়ে ওঠে না। অল্প উপার্জনে আমাদের সংসার চলে না। বাবা অনেকদিন আলাদা থাকেন, আলাদা চলেন। আমরা চেষ্টা করি তাকে দেখার।

বাড়ি তো নয় পাখির বাসা ভেন্না পাতার ছানি

ছোট ছেলে মো. ইমরান ফকির বলেন, আমরা জন্মগতভাবেই খুব দরিদ্র, এখন আমরা বড় হয়েছি কিন্তু ভাগ্যে পরিবর্তন ঘটেনি। যা ইনকাম করি সেই টাকা নিয়ে সংসার চলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। যথাসাধ্য চেষ্টা করি বাবাকে খাবার ও সহযোগিতা করতে। সরকার অনেককে সাহায্য সহযোগিতা করে, কিন্তু বাবা সেই সুবিধা পান না।

সূর্যকুন্ড গ্রামের বাসিন্দা আজিবর মুনসী বলেন, আমানুল্লাহ ফকিরে দুটি ছেলে রয়েছে। তারা বিবাহিত, আলাদা থাকে। তিনি অন্তত ১০ বছর যাবৎ মাটির দেওয়াল তুলে নিজেই নিজের মতো করে একটি আশ্রয় বানিয়েছেন। ঘুমানোর জন্য কিছুটা জায়গা রয়েছে তবে রান্নার জন্য জায়গা নেই। ছেলেদের সংসার চলে না, কোনোরকম দিনমজুরির কাজের জন্য কেউ তাকে নিতে চায় না। তিনি আমানুল্লাহ ফকিরের সহযোগিতায় সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

মো. মিনারুল ইসলাম জুয়েল/এমএন/জেআইএম

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow