বিএনপিতে যোগ দেওয়া সেলিমকে নিয়ে বাংলাদেশ এলডিপি নেতাদের অভিযোগ

বাংলাদেশ এলডিপি বিলুপ্তির ক্ষমতা কারও নেই বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এম এ বাশার। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর তোপখানা রোডে মেট্রো লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। গত ৮ ডিসেম্বর ‘বাংলাদেশ এলডিপি বিলুপ্তি‘ করে শাহাদাত হোসেন সেলিমের বিএনপিতে যোগদানের প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্যে এম এ বাশার বলেন, বাংলাদেশ এলডিপির সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রতারণা করে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ২০১৯ সালের অক্টোবরে বালাদেশ এলডিপি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল একটি লক্ষ্য নিয়ে— এই দেশে বিশ্বাসঘাতকতা নয়, আদর্শ টিকিয়ে রাখার রাজনীতি ফিরিয়ে আনা। এই দেশে জাতীয়তাবাদের মশালকে আরও উঁচুতে তুলে ধরা। সেই পথ থেকে আমরা কখনো সরে যাইনি। শুরুতে শাহাদত হোসেন সেলিম মহাসচিব এবং আব্দুল করিম আব্বাসী কে চেয়ারম্যান করে আমাদের দলের যাত্রা শুরু হয়। তৎকালীন ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ শুরু করি। এরপর ২০২২ সালে ১২ দলীয় জোট গঠন করা হয়। এর প্রধান হন মোস্তফা জামান হায়দার, মুখপাত্র সৈয়দ মোহাম্মদ

বিএনপিতে যোগ দেওয়া সেলিমকে নিয়ে বাংলাদেশ এলডিপি নেতাদের অভিযোগ

বাংলাদেশ এলডিপি বিলুপ্তির ক্ষমতা কারও নেই বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এম এ বাশার। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর তোপখানা রোডে মেট্রো লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

গত ৮ ডিসেম্বর ‘বাংলাদেশ এলডিপি বিলুপ্তি‘ করে শাহাদাত হোসেন সেলিমের বিএনপিতে যোগদানের প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এতে লিখিত বক্তব্যে এম এ বাশার বলেন, বাংলাদেশ এলডিপির সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রতারণা করে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ২০১৯ সালের অক্টোবরে বালাদেশ এলডিপি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল একটি লক্ষ্য নিয়ে— এই দেশে বিশ্বাসঘাতকতা নয়, আদর্শ টিকিয়ে রাখার রাজনীতি ফিরিয়ে আনা। এই দেশে জাতীয়তাবাদের মশালকে আরও উঁচুতে তুলে ধরা। সেই পথ থেকে আমরা কখনো সরে যাইনি। শুরুতে শাহাদত হোসেন সেলিম মহাসচিব এবং আব্দুল করিম আব্বাসী কে চেয়ারম্যান করে আমাদের দলের যাত্রা শুরু হয়। তৎকালীন ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ শুরু করি। এরপর ২০২২ সালে ১২ দলীয় জোট গঠন করা হয়। এর প্রধান হন মোস্তফা জামান হায়দার, মুখপাত্র সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম (চেয়ারম্যান, কল্যাণ পার্টি), সমন্বয়ক হিসেবে এহসানুল হুদা (চেয়ারম্যান, জাতীয় দল) কাজ শুরু করেন। ১২ দলীয় জোট বিএনপির সঙ্গে রাজপথে শুরু থেকেই ছিল, আজও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।

তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন, ২০২৪-এর ডামি ইলেকশনে ১২ দল ছেড়ে চলে যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহীম। তারপর তাকে বহিষ্কার করা হয়। শাহাদত হোসেন সেলিমকে জোটের মুখপাত্র করা হয়।

বাশার বলেন, ২০২৪ সালেই আমাদের দলের চেয়ারম্যান আব্দুল করিম আব্বাসী বয়সজনিত কারণে দলের প্রধানের দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করায় শাহাদত হোসেন সেলিমকে দলীয় প্রধান করা হয়। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, দলের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম কোনো আলোচনা ছাড়া, কোনো সভা ছাড়া, নিজের ব্যক্তিগত ইচ্ছায় গত ৮ ডিসেম্বর বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি এলডিপিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন!

তিনি আরও বলেন, আমি স্পষ্ট ভাষায় বলছি— দল বিলুপ্ত করার ক্ষমতা কোনো ব্যক্তির নেই। যে দলে শত শত নেতাকর্মী আছে, যারা প্রাণ দিয়ে আদর্শ ধরে রেখেছে— সেই দলকে একজন মানুষ বিলুপ্ত করার ক্ষমতা রাখেন না। আমরা তার নিজের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। তিনি যে চিন্তা-চেতনা থেকে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন, সেটার জন্য তার প্রতি আমাদের সহানুভূতি থাকবে। ভবিষ্যতে তিনি আরও ভালো করুন, সেই শুভকামনা তার প্রতি রেখে আমরা জানাচ্ছি দল বিলুপ্ত করা কোনোভাবেই আদর্শিক নয়। এটি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত ছিল তার। বাংলাদেশ এলডিপি তার জায়গাতেই আছে বাংলাদেশ এলডিপি ততদিন থাকবে— যত দিন এই দেশে জাতীয়তাবাদের একজন মানুষও বেঁচে থাকবে। আমি দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করছি— ব্যক্তি নয়, আদর্শই আমাদের পরিচয়।

এম এ বাশার বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমি আজ একটি কথাই পরিষ্কার করতে চাই, বাংলাদেশ এলডিপি বিলুপ্ত হয়নি, হবে না, হতে পারে না। ব্যক্তি পাল্টাবে কিন্তু আদর্শ কখনো বদলায় না। আমরা জাতীয়তাবাদের শক্তির অংশ ছিলাম, আছি এবং থাকব।

তিনি আরও বলেন, যত বাধাই আসুক, যত প্রলোভনই আসুক। আজ যারা চলে গিয়েছেন, তারা চলে যাক। কিন্তু বাংলাদেশ এলডিপি থেকে একজন প্রকৃত কর্মীকেও সরানো যাবে না। আমরা আমাদের আদর্শ নিয়ে সামনে এগিয়ে যাব— আরও শক্তি নিয়ে, আরও দৃঢ় প্রত্যয়ে। আর এই আদর্শ আমরা পেয়েছি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া থেকে।

আমরা যেখানেই থাকি, আমরা জাতীয়তাবাদী শক্তির সাথেই থাকব। কোনো বিশেষ সুবিধার জন্য নিজের গোষ্ঠীর সঙ্গে প্রতারণা করব না। আজ যদি আমরা কোনো প্রতারণা করি, তাহলে পরে এই আমরাই বৃহৎ স্বার্থের জন্য নিজ দেশের সঙ্গেও প্রতারণা করতে এক বিন্দু পিছপা হব না। এটাই বাস্তব।

এম এ বাশার বলেন, আমি আবার বলছি, আমরা ছিলাম, আছি এবং থাকব— বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের শক্তির সঙ্গেই। বাংলাদেশ এলডিপি অটুট— অদম্য— অপরাজেয়।

এ দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই যোগদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটু তখন জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ এলডিপির ১১১ সদস্যবিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সবাই আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগদান করেছেন।

জানতে চাইলে বুধবার (আজ) তমিজ উদ্দিন টিটু কালবেলাকে বলেন, বাংলাদেশ এলডিপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এম এ বাশারের সংবাদ সম্মেলন সম্পর্কে তিনি অবগত নন। এ সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই। তবে একটি দল কোনো একজন ব্যক্তির সিদ্ধান্তে পরিচালিত হয় না। আমি এটা (বাংলাদেশ এলডিপি বিলুপ্ত) নিয়ে নেতাকর্মীদের চাপে আছি। এ জন্য আমরা শিগগিরই বসে এ ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্ত নেব এবং সেটা আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমকে জানানো হবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow