বিএনপির কোন্দলে শক্তিশালী হচ্ছে জামায়াত
উত্তরের জেলা নওগাঁর বরেন্দ্র অধ্যুষিত উপজেলা ধামইরহাট ও পত্নীতলা। এ দুটি উপজেলা নিয়ে গঠিত নওগাঁ-২ আসন। দুটি পৌরসভা ও ১৬টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হওয়ায় জেলার অতি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী এলাকা এটি। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের বৃহত্তর দুটি রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী এরইমধ্যে এ আসনে তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এরপরই থেকেই জাতীয় সংসদের ৪৭ নম্বর এ আসনে বইছে নির্বাচনি হাওয়া। বর্তমানে প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় গণসংযোগ করছেন বিএনপি ঘোষিত প্রার্থী কেন্দ্রীয় বিএনপির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক শামসুজ্জোহা খান ও জামায়াতের প্রার্থী জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। তবে সংসদীয় এ আসনে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা তিন ভাগে বিভক্ত হওয়ায় নিজেদের ভোট ব্যাংক শক্তিশালী করার সুযোগ পাচ্ছে জামায়াত। নতুন সদস্য সংগ্রহে দলটির নেতাকর্মীরা দাওয়াতি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন সবখানে। এতে বেশ সাড়া পাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী। বিপরীতে এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ, এবি পার্টিসহ অন্যান্য ইসলামি দল, বামদল ও ছোট ছোট দলগুলোর প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা খুব একটা দেখা যায়নি। বিএনপি ও জামায়াতকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো তেমন
উত্তরের জেলা নওগাঁর বরেন্দ্র অধ্যুষিত উপজেলা ধামইরহাট ও পত্নীতলা। এ দুটি উপজেলা নিয়ে গঠিত নওগাঁ-২ আসন। দুটি পৌরসভা ও ১৬টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হওয়ায় জেলার অতি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনী এলাকা এটি। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের বৃহত্তর দুটি রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী এরইমধ্যে এ আসনে তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এরপরই থেকেই জাতীয় সংসদের ৪৭ নম্বর এ আসনে বইছে নির্বাচনি হাওয়া।
বর্তমানে প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় গণসংযোগ করছেন বিএনপি ঘোষিত প্রার্থী কেন্দ্রীয় বিএনপির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক শামসুজ্জোহা খান ও জামায়াতের প্রার্থী জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। তবে সংসদীয় এ আসনে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা তিন ভাগে বিভক্ত হওয়ায় নিজেদের ভোট ব্যাংক শক্তিশালী করার সুযোগ পাচ্ছে জামায়াত। নতুন সদস্য সংগ্রহে দলটির নেতাকর্মীরা দাওয়াতি কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন সবখানে। এতে বেশ সাড়া পাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী।
বিপরীতে এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ, এবি পার্টিসহ অন্যান্য ইসলামি দল, বামদল ও ছোট ছোট দলগুলোর প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা খুব একটা দেখা যায়নি। বিএনপি ও জামায়াতকে ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো তেমন হেভিওয়েট প্রার্থীও নেই এসব দলে। সব দিক বিবেচনায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের রাজনীতির মাঠে এ আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বিএনপি ও জামায়াতের।
দলীয় সূত্র বলছে, নওগাঁ-২ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য নওগাঁ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক শামসুজ্জোহা খান, নওগাঁ জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি খাজা নাজিবুল্লাহ চৌধুরী এবং কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক কে এম এস মুসাব্বির শাফি।
বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটের পর সংসদীয় এ আসনে ধামইরহাট ও পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির সম্মেলনের পাশাপাশি একইসঙ্গে অনুষ্ঠিত হয় নজিপুর ও ধামইরহাট পৌর বিএনপির সম্মেলন। ওই সম্মেলনে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে ভোটার তালিকা তৈরি করে তৎকালীন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। যার ফলে এসব কমিটিতে জায়গা পাননি যোগ্যরা। এরপর থেকেই সংসদীয় এ আসনে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যকার বিভক্তি চরমে পৌঁছায়। প্রায় সময়েই একে অপরের সমর্থকের প্রতি হামলার ঘটনাও ঘটছে অহরহ।
আরও পড়ুন:
বিএনপির দখলে নির্বাচনি মাঠ, থেমে নেই জামায়াত-ইসলামী আন্দোলন
জামায়াতের ‘দুর্গে’ জয় পেতে চায় বিএনপি
দলীয় মনোনয়ন ইস্যুতে টালমাটাল বিএনপি, নির্ভার জামায়াত
আগে এখানে দুই ভাগে বিভক্ত থাকলেও বর্তমানে তিন ভাগে বিভক্ত দলটি। বেশিরভাগ নেতাকর্মী কাজ করেন কেন্দ্রীয় বিএনপির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক শামসুজ্জোহা খান এবং নওগাঁ জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি খাজা নাজিবুল্লাহ চৌধুরীর হয়ে। দলীয় অভ্যন্তরীণ এ কোন্দলে অনেকেই বর্তমানে দলীয় কার্যক্রম থেকে নিজেদের বিরত রাখার চেষ্টা করছেন। ফলে নড়বড়ে হচ্ছে বিএনপির ভোট ব্যাংক। এই বিভক্তির সুযোগে শক্তিশালী হচ্ছে জামায়াতের অবস্থান।
সার্বিক বিষয়ে কথা হলে বিএনপি ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য শামসুজ্জোহা খান জাগো নিউজকে বলেন, ‘১৭ বছর মাঠের রাজনীতিতে অনুপস্থিত ছিলেন খাজা নাজিবুল্লাহ চৌধুরী। একজন মৌসুমি রাজনীতিবিদ হিসেবে পুরো এ সংসদীয় আসনে তার সর্বোচ্চ ৫০০ জন অনুসারী রয়েছে। এত কম সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে বিভক্তি সৃষ্টির সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, ‘ভোটের মাঠে সাধারণ জনগণ আমার পক্ষে আছে। নেতাকর্মীদের সুখে দুঃখে সবসময় পাশে থেকেছি। জনগণ আমাকে ধানের শীষ প্রতীকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবে বলে আমি আশাবাদী।’
জামায়াত মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রার্থী হওয়ার অনেক আগে থেকেই জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম। গণসংযোগ, পথসভা ও সমাবেশে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। জামায়াত এখন সবখানেই আস্থার প্রতীক। সম্প্রতি পত্নীতলা ও ধামইরহাট উপজেলার ফ্রেশ ইমেজের বিএনপির অনেক নেতাকর্মী তাদের দল থেকে পতদ্যাগ করে আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতে যোগদান করেছেন। এ থেকেই বোঝা যায় আমাদের বিজয় এ আসনে সুনিশ্চিত।’
নির্বাচনি তথ্য ঘেঁটে জানা যায়, নওগাঁ-২ আসনে ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির হুমায়ুন কবীর চৌধুরী ও ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে একই দলের এসএম নুরুজ্জামান নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে বিএনপির প্রার্থী আবদুর রউফ মান্নানকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শহীদুজ্জামান সরকার বাবলু। এরপর ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে নির্বাচিত হন বিএনপির শামসুজ্জোহা খান। ২০০৮ সালে আসনটি আবারও চলে যায় শহীদুজ্জামান সরকারের দখলে। এরপর থেকে সরকার পতনের আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের দখলে ছিল আসনটি।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, দুটি উপজেলা ও দুটি পৌরসভা নিয়ে এই আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৫৯ হাজার ৫৮৬ জন। পুরুষ ভোটার এক লাখ ৭৯ হাজার ৫৮৩ জন, নারী ভোটার এক লাখ ৮০ হাজার ১ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার দুজন।
এএইচআরএন/এসআর/এমএমএআর/জেআইএম
What's Your Reaction?