বিসিকের জায়গা সংকটে স্বপ্ন ভাঙছে নতুন উদ্যোক্তাদের
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) শিল্পনগরীতে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় উৎপাদন কিংবা কারখানা সম্প্রসারণ করতে পারছেন না অনেক উদ্যোক্তা। এতে জেলার সম্ভাবনাময় শিল্প ও উদ্যোক্তা খাত কার্যত স্থবির হয়ে পড়ছে। উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই বিসিক এলাকায় জায়গা সংকট দেখা দিয়েছে। নতুন প্লট বরাদ্দ বন্ধ থাকায় অনেকে চাহিদামতো জায়গা পাচ্ছেন না। ফলে তারা বড় অর্ডার নিতে পারছেন না, উপজেলায় বা জেলার বাইরে থেকেও অর্ডার হাতছাড়া হচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্থানীয় অর্থনীতি। সরেজমিনে জেলার বিসিক শিল্পনগরীতে গিয়ে দেখা যায়, ১৯৮৯ সালে কার্যক্রম শুরু করা শিল্পনগরীর প্রায় ১১ একর জমিতে ৮৮টি প্লট রয়েছে। প্লটগুলো জেলার বড় বড় ব্যবসায়ীরা বরাদ্দ নিয়ে রেখেছেন। এতে স্থান পাচ্ছেন না নতুন উদ্যোক্তারা। একেক ব্যবসায়ীর নামে তিন থেকে আটটি পর্যন্ত প্লট রয়েছে। এসব প্লটে গড়ে উঠেছে বেকারি, জুট মিল ও ক্রোকারিজ তৈরির কারখানা। তরুণ উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, কৃষিভিত্তিক উৎপাদন, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, প্যাকেজিং, সিরামিক ও হস্তশিল্প সব খাতেই বিনিয়োগের আগ্রহ বাড়ছে। কিন্তু বিসিক কর্তৃপক্ষ জমির স্বল্পত
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) শিল্পনগরীতে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় উৎপাদন কিংবা কারখানা সম্প্রসারণ করতে পারছেন না অনেক উদ্যোক্তা। এতে জেলার সম্ভাবনাময় শিল্প ও উদ্যোক্তা খাত কার্যত স্থবির হয়ে পড়ছে।
উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই বিসিক এলাকায় জায়গা সংকট দেখা দিয়েছে। নতুন প্লট বরাদ্দ বন্ধ থাকায় অনেকে চাহিদামতো জায়গা পাচ্ছেন না। ফলে তারা বড় অর্ডার নিতে পারছেন না, উপজেলায় বা জেলার বাইরে থেকেও অর্ডার হাতছাড়া হচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্থানীয় অর্থনীতি।
সরেজমিনে জেলার বিসিক শিল্পনগরীতে গিয়ে দেখা যায়, ১৯৮৯ সালে কার্যক্রম শুরু করা শিল্পনগরীর প্রায় ১১ একর জমিতে ৮৮টি প্লট রয়েছে। প্লটগুলো জেলার বড় বড় ব্যবসায়ীরা বরাদ্দ নিয়ে রেখেছেন। এতে স্থান পাচ্ছেন না নতুন উদ্যোক্তারা। একেক ব্যবসায়ীর নামে তিন থেকে আটটি পর্যন্ত প্লট রয়েছে। এসব প্লটে গড়ে উঠেছে বেকারি, জুট মিল ও ক্রোকারিজ তৈরির কারখানা।
তরুণ উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, কৃষিভিত্তিক উৎপাদন, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, প্যাকেজিং, সিরামিক ও হস্তশিল্প সব খাতেই বিনিয়োগের আগ্রহ বাড়ছে। কিন্তু বিসিক কর্তৃপক্ষ জমির স্বল্পতা ও পর্যাপ্ত অবকাঠামো না থাকায় নতুন আবেদন গ্রহণে অনীহা দেখাচ্ছে। এতে উদ্যোক্তাদের বড় স্বপ্নগুলো থেমে যাচ্ছে শুরুর পর্যায়েই।
এ বিষয়ে তরুণ উদ্যোক্তা আলি আশরাফ বলেন, উৎপাদন বাড়াতে না পারায় ব্যাংক ঋণও যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারছি না। এতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে যন্ত্রপাতির আপগ্রেডেশন। আবার অনেকে বাধ্য হয়ে ভাড়া করা ছোট জায়গায় ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে ব্যবসা চালাচ্ছেন। বিসিকে স্থান পেলে আমাদের জন্য ভালো হতো।
আরও পড়ুন-
আবর্জনায় ভরা ফেনী বিসিক শিল্পনগরী, কর্তৃপক্ষ বলছে বাজেট কম
নিষ্ক্রিয় মেহেরপুর বিসিকের পরিত্যক্ত প্লটে স্থবির শিল্পায়ন
৪২ কোটি টাকার বিসিকে কারখানা চলে ৩টি, বাকি সব আগাছা
স্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের দাবি, চাঁপাইনবাবগঞ্জের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা অত্যন্ত উজ্জ্বল। এখানে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে উঠলে হাজারো মানুষের কর্মসংস্থান হবে। তাই দ্রুত বিসিকের সম্প্রসারণ, নতুন প্লট বরাদ্দ এবং আধুনিক অবকাঠামো তৈরির দাবি জানান তারা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিসিকে প্লট অল্প। শহরের বড় বড় ব্যবসায়ীরা। এসব দখল করে রেখেছেন। কিন্তু স্থান হচ্ছে না নতুন উদ্যোক্তাদের। আমি ৫-৬ বছর ধরে কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু বিসিকের কোনো প্লট পাইনি। কারণ তাদের যে প্লটগুলো রয়েছে সবগুলোই কেউ না কেউ নিয়ে রেখেছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো. আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, জেলার বিসিক শিল্পনগরী বহু আগেই পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। মাত্র একটি ছোট শিল্পনগরীতে এত উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীকে স্থান দেওয়া সম্ভব নয়। ফলে কেউ প্লট পাচ্ছেন না, কেউ আবার ব্যবসা বাড়াতে পারছেন না। এতে তরুণ উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, খাদ্যশিল্প, টেক্সটাইল, কাঠ ও ধাতুশিল্পসহ অসংখ্য খাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু জায়গা সংকটের কারণে এসব খাতের সম্প্রসারণ থমকে আছে। শিল্পায়ন এগোতে হলে দ্রুত বিসিক এলাকার সম্প্রসারণ, নতুন প্লট তৈরি এবং উদ্যোক্তাদের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, জেলার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হলে এবং বেকারত্ব কমাতে হলে নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। তাই চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিসিকের পরিধি বাড়ানো এখন সময়ের দাবি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিসিকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) মো. সাজিদুল ইসলাম বলেন, আমরা উদ্যোক্তাদের চাহিদার বিষয়ে অবগত। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এখানে একটি নতুন শিল্পনগরী গড়ে তোলার বিষয়ে বারবার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ হলে উদ্যোক্তাদের জন্য বড় পরিসরে উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে। এতে স্থান পাবেন জেলার নতুন উদ্যোক্তারা। সমৃদ্ধ হবে জেলার অর্থনীতি। বিসিকের প্লটগুলোর পেছনে আরও ১০ একর জমি অধিগ্রহণ করে পরিধি বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠানো আছে মন্ত্রণালয়ে।
এফএ/জেআইএম
What's Your Reaction?