ভূমিকম্পের পর মাথা ঘোরা ২৪ ঘণ্টার বেশি থাকলে তা কিসের লক্ষণ
ভূমিকম্পের পর অনেকেই হালকা মাথা ঘোরা, দুলুনি বা ভারসাম্য হারানোর মতো অনুভূতি পান। এ অবস্থাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক বলা হয় আর্থকোয়েক সোয়ে সিনড্রম, যেখানে শরীরের ভারসাম্যব্যবস্থা হঠাৎ নড়াচড়ায় বিভ্রান্ত হয়ে যায়। সাধারণত কয়েক মিনিট বা কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এটি কমে যায়। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার বেশি মাথা ঘোরা থাকলে তা অন্য শারীরবৃত্তীয় বা স্নায়বিক সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। ভূমিকম্পের পর মাথা ঘোরা স্বাভাবিক ভূমিকম্পের সময় আমাদের শরীরের ভেস্টিবুলার সিস্টেম বা কানের ভেতরের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রক অংশ দ্রুত নড়াচড়ায় বিভ্রান্ত হয়ে যায়। ২০২৪ সালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অন ডিফনেস অ্যান্ড আদার কমিউনিকেশন ডিসঅর্ডার্স-এর একটি গবেষণা দেখায়, আকস্মিক কম্পন বা ঝাঁকুনি সংবেদনশীল ভেস্টিবুলার সিস্টেমকে সাময়িকভাবে অস্থিতিশীল করে তোলে। তাই হালকা দুলুনি বা মাথা ঘোরা স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। কিন্তু সমস্যা দীর্ঘ হলে কারণগুলো ভিন্ন হতে পারে কখন স্বাভাবিক নয়?২৪ ঘণ্টার বেশি মাথা ঘোরা স্বাভাবিক নাও হতে পারে। জেনে নিন এটি আর কীসের ইঙ্গিত দেয়- ১. ভেস্টিবুলার ডিসঅর্ডার কানের ভেতরের ভারসাম্যব্যবস্থা যদি আগে থেকেই দুর্বল থাকে, ভ
ভূমিকম্পের পর অনেকেই হালকা মাথা ঘোরা, দুলুনি বা ভারসাম্য হারানোর মতো অনুভূতি পান। এ অবস্থাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক বলা হয় আর্থকোয়েক সোয়ে সিনড্রম, যেখানে শরীরের ভারসাম্যব্যবস্থা হঠাৎ নড়াচড়ায় বিভ্রান্ত হয়ে যায়।
সাধারণত কয়েক মিনিট বা কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এটি কমে যায়। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার বেশি মাথা ঘোরা থাকলে তা অন্য শারীরবৃত্তীয় বা স্নায়বিক সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে।
ভূমিকম্পের পর মাথা ঘোরা স্বাভাবিক
ভূমিকম্পের সময় আমাদের শরীরের ভেস্টিবুলার সিস্টেম বা কানের ভেতরের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রক অংশ দ্রুত নড়াচড়ায় বিভ্রান্ত হয়ে যায়। ২০২৪ সালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অন ডিফনেস অ্যান্ড আদার কমিউনিকেশন ডিসঅর্ডার্স-এর একটি গবেষণা দেখায়, আকস্মিক কম্পন বা ঝাঁকুনি সংবেদনশীল ভেস্টিবুলার সিস্টেমকে সাময়িকভাবে অস্থিতিশীল করে তোলে। তাই হালকা দুলুনি বা মাথা ঘোরা স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। কিন্তু সমস্যা দীর্ঘ হলে কারণগুলো ভিন্ন হতে পারে
কখন স্বাভাবিক নয়?
২৪ ঘণ্টার বেশি মাথা ঘোরা স্বাভাবিক নাও হতে পারে। জেনে নিন এটি আর কীসের ইঙ্গিত দেয়-
১. ভেস্টিবুলার ডিসঅর্ডার
কানের ভেতরের ভারসাম্যব্যবস্থা যদি আগে থেকেই দুর্বল থাকে, ভূমিকম্পের নড়াচড়ায় সমস্যা বাড়তে পারে। ফলে দীর্ঘ মাথা ঘোরা, উঠে দাঁড়ালে দুলুনি, ঝাপসা দেখার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
২. বেনাইন পজিশনাল ভার্টিগো (বিপিপিভি)
ভেস্টিবুলার রোগীদের সবচেয়ে কমন সমস্যা এটি। এই সমস্যায় কানের ভেতরের ক্ষুদ্র ক্যালসিয়াম কণা ভুল স্থানে চলে গিয়ে দীর্ঘ সময় মাথা ঘোরে। ২০২৩ সালের এক গবেষণা বলছে, হালকা নড়াচড়াও বিপিপিভি ট্রিগার করতে পারে।
৩. ভেস্টিবুলার মাইগ্রেন
মাথাব্যথা ছাড়াও কেবল মাথা ঘোরা দিয়ে মাইগ্রেন প্রকাশ পেতে পারে। এটিকে বলে হেডেক-লেস মাইগ্রেন। ভূমিকম্পের ভয় বা স্ট্রেস এতে ভূমিকা রাখে।
৪. পোস্ট-ট্রম্যাটিক ভেস্টিবুলার সিনড্রোম
তীব্র ভয় বা মানসিক চাপ স্নায়ুতন্ত্রকে দীর্ঘ সময় সতর্ক অবস্থায় রাখে। জার্নাল অব অ্যাংজাইটি ডিজঅর্ডারে ২০২৪ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণা বলছে, ভয়–উদ্বেগ অনেকের ভারসাম্যব্যবস্থাকে অস্থির করে দিতে পারে।
৫. পানিশূন্যতা, রক্তচাপ বা গ্লুকোজ কমে যাওয়া
ভূমিকম্পের আতঙ্কে অনেকের রক্তচাপ কমে যেতে পারে, বা খাবার কথা ভুলে গিয়ে রক্তে শর্করা নেমে যেতে পারে। এতে মাথা ঘোরা দেখা দেয়।
৬. ভূমিকম্প পরবর্তী স্ট্রেস ডিসঅর্ডার
শক্তিশালী ভূমিকম্পের পরে অনেকের মানসিক অবস্থা স্বাভাবিকের থেকে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত অস্থির থাকে। এটি হলো পিইএসডি বা ভূমিকম্প পরবর্তী স্ট্রেস ডিসঅর্ডার।
লক্ষণগুলো হতে পারে—
>> বারবার ভূমিকম্পের স্মৃতি মনে আসা
>> অকারণেই আতঙ্ক বা উদ্বেগ অনুভব করা
>> নিদ্রাহীনতা বা ঘুমের সমস্যা
>> হঠাৎ মাথা ঘোরা বা শরীরের ভারসাম্য হারানো
২০২৩ সালে জার্নাল অব ট্রমাটিক স্ট্রেস এর একটি গবেষণা দেখিয়েছে, পিইএসডিতে আক্রান্তরা দীর্ঘ সময় মাথা ঘোরা ও ভারসাম্যহীনতার মতো শারীরিক উপসর্গ অনুভব করতে পারেন, কারণ স্নায়ুতন্ত্র তখনও ‘হাই অ্যালার্ট’ মোডে থাকে।
সোর্স: ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অন ডিফনেস অ্যান্ড আদার কমিউনিকেশন ডিসঅর্ডার্স (২০২৪), আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ ওটোল্যারিঙ্গোলজি (২০২৩), জার্নাল অফ অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার্স (২০২৪)
এএমপি/এমএস
What's Your Reaction?