মাদারীপুরে হর্টিকালচার সেন্টারে ২০০ প্রজাতির ক্যাকটাস

মাদারীপুরের হর্টিকালচার সেন্টারে ঢুকতেই চোখে পড়বে নানা রঙের, নানা ধরনের বিচিত্র কাঁটায় ভরা গাছ। যেন গরম-শক্ত ও রং-বেরঙের নানা মুগ্ধকর ও অদ্ভুত ধরনের গাছের সমাহার। সেখানে শোভা পাচ্ছে ২০০ প্রজাতির ক্যাকটাস। কম দামে গাছগুলো গাছপ্রেমীদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্যই চলছে মহাযজ্ঞ। পরম যত্নে গাছের চারা উৎপাদনের কাজ করছেন হর্টিকালচার সেন্টার সংশ্লিষ্টরা। গত ২ বছরে শুধু ক্যাকটাস বিক্রি করেছেন ৫ লাখ টাকা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের মোস্তফাপুর বড় ব্রিজ এলাকায় অবস্থিত মাদারীপুর হর্টিকালচার সেন্টারটি। হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক কৃষিবিদ আশুতোষ কুমার বিশ্বাস প্রথমে ব্যক্তি উদ্যোগে ক্যাকটাস সংগ্রহ শুরু করেন। এরপর একধরনের ক্যাকটাসের প্রেমে পড়ে যান। সেই নেশা থেকেই শুরু হয় সংগ্রহের কাজ। অনলাইনে বিভিন্ন ক্যাকটাসের গাছ দেখে কিনে আনতে শুরু করেন। এরপর বিভিন্ন নার্সারি, মানুষের বাড়ি থেকে সংগ্রহ করেন। যখন যেখানে গেছেন বা কাজের জন্য বিভিন্ন জেলায় গিয়েও ক্যাকটাস সংগ্রহ করেন। মাত্র ২ বছরেই ২০০ প্রজাতির ক্যাকটাস শোভা পাচ্ছে হর্টিকালচারে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায়ও কিনে নেওয়া হচ্ছে

মাদারীপুরে হর্টিকালচার সেন্টারে ২০০ প্রজাতির ক্যাকটাস

মাদারীপুরের হর্টিকালচার সেন্টারে ঢুকতেই চোখে পড়বে নানা রঙের, নানা ধরনের বিচিত্র কাঁটায় ভরা গাছ। যেন গরম-শক্ত ও রং-বেরঙের নানা মুগ্ধকর ও অদ্ভুত ধরনের গাছের সমাহার। সেখানে শোভা পাচ্ছে ২০০ প্রজাতির ক্যাকটাস। কম দামে গাছগুলো গাছপ্রেমীদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্যই চলছে মহাযজ্ঞ। পরম যত্নে গাছের চারা উৎপাদনের কাজ করছেন হর্টিকালচার সেন্টার সংশ্লিষ্টরা। গত ২ বছরে শুধু ক্যাকটাস বিক্রি করেছেন ৫ লাখ টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার মোস্তফাপুর ইউনিয়নের মোস্তফাপুর বড় ব্রিজ এলাকায় অবস্থিত মাদারীপুর হর্টিকালচার সেন্টারটি। হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক কৃষিবিদ আশুতোষ কুমার বিশ্বাস প্রথমে ব্যক্তি উদ্যোগে ক্যাকটাস সংগ্রহ শুরু করেন। এরপর একধরনের ক্যাকটাসের প্রেমে পড়ে যান। সেই নেশা থেকেই শুরু হয় সংগ্রহের কাজ। অনলাইনে বিভিন্ন ক্যাকটাসের গাছ দেখে কিনে আনতে শুরু করেন। এরপর বিভিন্ন নার্সারি, মানুষের বাড়ি থেকে সংগ্রহ করেন। যখন যেখানে গেছেন বা কাজের জন্য বিভিন্ন জেলায় গিয়েও ক্যাকটাস সংগ্রহ করেন। মাত্র ২ বছরেই ২০০ প্রজাতির ক্যাকটাস শোভা পাচ্ছে হর্টিকালচারে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায়ও কিনে নেওয়া হচ্ছে গাছগুলো।

মাদারীপুরে হর্টিকালচার সেন্টারে ২০০ প্রজাতির ক্যাকটাস

কর্তৃপক্ষ জানায়, মাদারীপুর হর্টিকালচার সেন্টারে সংগ্রহ করা বিভিন্ন প্রজাতির ক্যাকটাসগুলো থেকে চারা উৎপাদনের কাজ চলছে। এগুলো তৈরির জন্য আলাদাভাবে দুটি ক্যাকটাস হাউজ তৈরি করা হয়েছে। কিছু ক্যাকটাস বীজ থেকে আবার কিছু ডাল থেকে বানানো হচ্ছে। আগামী বছরের মার্চ মাসে এগুলো বিক্রির উপযোগী হবে। মাত্র ২ বছরে বিক্রি করেছেন ৫ লাখ টাকা। জেলা পর্যায়ে ক্যাকটাস মানুষ পছন্দ করবে কি না, তা ভাবনার বিষয় ছিল। কিন্তু চারা প্রস্তুত করার পর সেই ভাবনা বদলে গেছে। অল্পদিনেই গাছগুলো মানুষ কিনে নিয়েছে। জেলায় ক্যাকটাসের চাহিদা অনেক বেশি। তাই বিভিন্ন পদ্ধতিতে গাছ উৎপাদন করা হচ্ছে।

মাদারীপুরে হর্টিকালচার সেন্টারে ২০০ প্রজাতির ক্যাকটাস

বিচিত্র গাছগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, চকলেট ক্যাকটাস, পদ্মসেজী, ওপানশিয়া, ইউফরবিয়া টুলিয়রেনসিস, ডিভাইন ক্যাকটাস, বিশপ’স ক্যাপ ক্যাকটাস, র‌্যাটস টেইল ক্যাকটাস, ফেইরি ক্যাসেল, ম্যামিলারিয়া, অ্যাস্ট্রোফাইটাম, রেইনবো ক্যাকটাস, ওল্ড লেডি, হেমাটো ক্যাকটাস, ব্রেইন ক্যাকটাস, পিনাট ক্যাকটাস, ব্যানানা ক্যাকটাস, বান্নি ক্যাকটাস, ইচিনোপসিস, ক্যাটস টেইল ক্যাকটাস, স্টেপেলিয়া, জিমনোক্যাকটাস, ফেরো ক্যাকটাস, গোল্ডেন ব্যারেল, লাভাভিয়া, কোরাল ক্যাকটাস, ইউফরবিয়া, ওল্ড ম্যান, নোটো ক্যাকটাস, প্যারোডিয়া, ক্রিস্টেড, লেডি ফিঙ্গার, মাংকিটেইল ক্যাকটাসসহ আছে ২০০ প্রজাতির ক্যাকটাস।

ক্যাকটাসগুলোর কোনোটায় কাঁটাভর্তি, কোনোটায় কাঁটা নেই, কোনোটা গরম, কোনোটা শক্ত, কোনোটা সবুজ, কোনোটা লাল, কোনোটা নীল, কোনোটা হলুদ, কোনোটার নকশা আছে আবার কোনোটা মসৃণ। এছাড়া বিচিত্র সমাহারে ভরা। যা দেখে যে কারোরই মন জুড়িয়ে যাবে। তবে এখানে শুধু ক্যাকটাস নয়, আছে নানা প্রজাতির ফল, ফুল, ওষুধিসহ নানাজাতের গাছ। গত অর্থবছরে ৪২ লাখ টাকার গাছ বিক্রি করা হয়েছে। হর্টিকালচারটি দিনে দিনে মাদারীপুরবাসীর জন্য সৌন্দর্যময় স্থান হয়ে উঠেছে। অনেকেই পরিবার নিয়ে গাছ কেনার পাশাপাশি ঘুরতে আসেন। নানা প্রজাতির গাছ দেখে মুগ্ধ হন। হর্টিকালচারটি গাছ দিয়ে সাজানো, যে কারোরই ভালো লাগবে।

মাদারীপুরে হর্টিকালচার সেন্টারে ২০০ প্রজাতির ক্যাকটাস

মাদারীপুরের ইতিহাস গবেষক সুবল বিশ্বাস বলেন, ‘মাদারীপুরের হর্টিকালচারে ২০০ প্রজাতির ক্যাকটাস আছে। যা দেখতে খুবই সুন্দর। একসাথে এতগুলো ক্যাকটাস সত্যিই প্রশংসারযোগ্য। তাছাড়া এখানে শুধু ক্যাকটাসই নয়; আছে নানা ধরনের ফুল, ফল ও ওষুধি গাছ।’

আরও পড়ুন
হাতের কাছেই পাবেন যেসব ফুল
চারপাশে উঁকি মারছে দীপ্ত লুচি, চেনেন কি?

হর্টিকালচার সেন্টারে ঘুরতে আসা ফারজানা ইমু বলেন, ‘এখানে এলে মন ভরে যায়। এত এত প্রজাতির গাছ দেখে মন ভালো হয়ে যায়। তাই প্রায়ই পরিবার নিয়ে এখানে ঘুরতে আসি।’

স্থানীয় সংগঠন জিজীবিষার প্রতিষ্ঠাতা মিলন মুন্সি বলেন, ‘মাদারীপুরের বিভিন্ন নার্সারিতে গাছের দাম বেশি। হর্টিকালচারে গাছের দাম কম। তাই অনেকেই এখন থেকে গাছ কেনেন। আমিও অনেক সময় এখান থেকে গাছ কিনি। এখানকার গাছগুলোর দাম যেমন কম; তেমনই মানের দিক দিয়েও ভালো।’

মাদারীপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপপরিচালক কৃষিবিদ আশুতোষ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘প্রকারভেদে ক্যাকটাসের বিভিন্ন দাম হয়ে থাকে। সাধারণত ক্যাকটাসের দাম বেশি হয়। অনেকের ইচ্ছে থাকলেও দামের জন্য কিনতে পারেন না। তাই আমরা সংগ্রহ করা ক্যাকটাস থেকে চারা বানিয়ে থাকি। অল্পদামে ক্যাকটাসপ্রেমীদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্যই গত ২ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছি।’

মাদারীপুরে হর্টিকালচার সেন্টারে ২০০ প্রজাতির ক্যাকটাস

তিনি বলেন, ‘কিছু ক্যাকটাসের বীজ হয়, সেই বীজ থেকে বহু চারা তৈরি করা যায়। কিছু ক্যাকটাস কলম করা হয়। কোনো কোনো ক্যাকটাস কুড়ি থেকে চারা তৈরি করা যায়। কিছু আছে কাণ্ড কেটেও চারা বানানো যায়। এভাবেই ক্যাকটাসের সংখ্যা বাড়াচ্ছি। আগামী মার্চ মাস থেকে তা বিক্রি করা হবে। তবে অনেকেই বলেছিলেন, মাদারীপুরে ক্যাকটাসের চাহিদা হয়তো বেশি হবে না। কিন্তু মাদারীপুরে বহু মানুষ প্রবাসে থাকেন; সেসব পরিবার অনেক সৌখিন। তারা শখ করে গাছ নেবেন। পরে আমরা যখন গাছ উৎপাদন করলাম; তখন দেখি মাদারীপুরসহ অন্য জেলা থেকেও মানুষ এসে ক্যাকটাস সংগ্রহ করছেন।’

আশুতোষ কুমার আরও বলেন, ‘আমাদের আগ্রহ বেড়ে যায়। সবার চাহিদা পূরণ করার জন্য ক্যাকটাস সংগ্রহ ও বিস্তারের জন্য কাজ করছি। মাত্র গত ২ বছরই ক্যাকটাস বিক্রি হয়েছে ৫ লাখ টাকার। আমাদের সংগ্রহ বেড়ে ২০০ প্রজাতির হয়েছে। এ প্রজাতির সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাবে বলে আশা করছি। একটা সময় আমাদের বিশাল বিচিত্র ক্যাকটাসে সংগ্রহে পরিণত হবে। তাছাড়া গাছগুলো সহজেই লাগানো যায় এবং ঘরের ভেতরে রেখে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা যায়।’

এসইউ/জেআইএম

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow