মাদুরোকে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি, পাল্টা অবস্থানে রাশিয়া ও চীন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে উদ্দেশ্য করে নতুন করে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেছেন, মাদুরোর জন্য “পদত্যাগ করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে”। যুক্তরাষ্ট্র যখন ভেনেজুয়েলার ওপর চাপ আরও বাড়াচ্ছে, তখন রাশিয়া ও চীন প্রকাশ্যে কারাকাসের পাশে দাঁড়িয়েছে। ফ্লোরিডার মার-আ-লাগো রিসোর্টে সোমবার এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, মাদুরো যদি ‘কঠোর আচরণ’ অব্যাহত রাখেন, তবে সেটিই হবে তার শেষবারের মতো কঠোর হওয়া। এ সময় তার পাশে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরানোই যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হতে পারে। তিনি বলেন, “এটা তার সিদ্ধান্ত। তবে আমার মনে হয়, সরে দাঁড়ানোই তার জন্য ভালো হবে। আমরা দেখব কী হয়।” এই হুমকির মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড ভেনেজুয়েলার উপকূলে তৃতীয় একটি তেলবাহী ট্যাঙ্কার ধাওয়া করছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এসব জাহাজ ‘ডার্ক ফ্লিট’-এর অংশ, যেগুলো নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে তেল পরিবহন করে। ইতোমধ্যে দুটি জাহাজ ও প্রায় ৪০ লাখ ব্
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে উদ্দেশ্য করে নতুন করে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। তিনি বলেছেন, মাদুরোর জন্য “পদত্যাগ করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে”। যুক্তরাষ্ট্র যখন ভেনেজুয়েলার ওপর চাপ আরও বাড়াচ্ছে, তখন রাশিয়া ও চীন প্রকাশ্যে কারাকাসের পাশে দাঁড়িয়েছে।
ফ্লোরিডার মার-আ-লাগো রিসোর্টে সোমবার এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, মাদুরো যদি ‘কঠোর আচরণ’ অব্যাহত রাখেন, তবে সেটিই হবে তার শেষবারের মতো কঠোর হওয়া। এ সময় তার পাশে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরানোই যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হতে পারে। তিনি বলেন, “এটা তার সিদ্ধান্ত। তবে আমার মনে হয়, সরে দাঁড়ানোই তার জন্য ভালো হবে। আমরা দেখব কী হয়।”
এই হুমকির মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড ভেনেজুয়েলার উপকূলে তৃতীয় একটি তেলবাহী ট্যাঙ্কার ধাওয়া করছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এসব জাহাজ ‘ডার্ক ফ্লিট’-এর অংশ, যেগুলো নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে তেল পরিবহন করে। ইতোমধ্যে দুটি জাহাজ ও প্রায় ৪০ লাখ ব্যারেল ভেনেজুয়েলান তেল জব্দ করা হয়েছে।
ট্রাম্প জানান, জব্দ করা তেল ও জাহাজ যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই থাকবে। তিনি বলেন, “হয়তো বিক্রি করব, হয়তো রাখব, কিংবা কৌশলগত রিজার্ভে ব্যবহার করব।”
মাদুরোর পাল্টা প্রতিক্রিয়া
ট্রাম্পের বক্তব্যের জবাবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো কড়া প্রতিক্রিয়া জানান। রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের উচিত নিজের দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংকটের দিকে মনোযোগ দেওয়া।
মাদুরো বলেন, “তিনি যদি নিজের দেশের বিষয় সামলান, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্ব—উভয়ের জন্যই তা ভালো হবে।”
আন্তর্জাতিক উদ্বেগ ও জাতিসংঘ বৈঠক
ভেনেজুয়েলার তেল খাতকে লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। ক্যারিবীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি এবং মাদকবিরোধী অভিযানের নামে চালানো হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে বলে সমালোচকদের অভিযোগ।
এই পরিস্থিতিতে ভেনেজুয়েলার অনুরোধে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের একটি জরুরি বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। এতে রাশিয়া ও চীন সমর্থন দিয়েছে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ভান গিলের সঙ্গে ফোনালাপে ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযানে “গভীর উদ্বেগ” প্রকাশ করেন। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, মস্কো বর্তমান প্রেক্ষাপটে ভেনেজুয়েলার সরকার ও জনগণের প্রতি পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।
চীনের কড়া সমালোচনা
চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন বলে আখ্যা দিয়েছে। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, “ভেনেজুয়েলার সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা লঙ্ঘন করে এমন যেকোনো কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করে চীন।”
তিনি আরও বলেন, ভেনেজুয়েলার স্বাধীনভাবে উন্নয়ন ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে সহযোগিতার অধিকার রয়েছে এবং সেই অধিকার রক্ষায় চীন ভেনেজুয়েলার অবস্থানকে সমর্থন করে।
বিশ্বব্যাপী জ্বালানি বাজারে প্রভাবের আশঙ্কা
ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়ভান গিল জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর উদ্দেশে প্রেসিডেন্ট মাদুরোর লেখা এক চিঠি পড়ে শোনান। এতে সতর্ক করে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধ ও তথাকথিত ‘জাহাজ ডাকাতি’ বৈশ্বিক তেল ও জ্বালানি সরবরাহে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।
চিঠিতে বলা হয়, “ভেনেজুয়েলা শান্তির পক্ষেই রয়েছে। তবে সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় প্রয়োজনে আত্মরক্ষার জন্য প্রস্তুত।”
সূত্র- আলজাজিরা।
What's Your Reaction?