মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের বাইশারী শাহ নুরুদ্দিন দাখিল মাদ্রাসার সুপার নুরুল হাকিমের (৫৬) বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগের প্রতিবাদে মানববন্ধনে যাওয়ার পথে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে অভিযুক্ত সুপার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত রোববার (৭ ডিসেম্বর) মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিতে বাইশারী বাজার থেকে মাদ্রাসার দিকে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের একটি মিছিলে হামলা চালানো হয়। এতে ৪-৫ জন শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এই ঘটনায় গত সোমবার (৮ ডিসেম্বর) আহত এক শিক্ষার্থীর মা রাবেয়া আক্তার বাদী হয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। থানায় দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, মাদ্রাসার নবম ও দশম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রীকে সুপার নুরুল হাকিম বিভিন্ন অজুহাতে শরীরে স্পর্শ করতেন। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীরা বাসায় এসে অভিভাবকদের
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের বাইশারী শাহ নুরুদ্দিন দাখিল মাদ্রাসার সুপার নুরুল হাকিমের (৫৬) বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগের প্রতিবাদে মানববন্ধনে যাওয়ার পথে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে অভিযুক্ত সুপার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত রোববার (৭ ডিসেম্বর) মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিতে বাইশারী বাজার থেকে মাদ্রাসার দিকে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের একটি মিছিলে হামলা চালানো হয়। এতে ৪-৫ জন শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এই ঘটনায় গত সোমবার (৮ ডিসেম্বর) আহত এক শিক্ষার্থীর মা রাবেয়া আক্তার বাদী হয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
থানায় দায়ের করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, মাদ্রাসার নবম ও দশম শ্রেণির কয়েকজন ছাত্রীকে সুপার নুরুল হাকিম বিভিন্ন অজুহাতে শরীরে স্পর্শ করতেন। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীরা বাসায় এসে অভিভাবকদের জানালে মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির কাছে অভিযোগ করা হয়, তবে সেখানে সন্তোষজনক বিচার পাওয়া যায়নি। এরই ধারাবাহিকতায় মানববন্ধনে যাওয়ার সময় হামলার ঘটনা ঘটে।
বাদী রাবেয়া আক্তার বলেন, আমরা ন্যায়বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। আমার সন্তান ছেলে, তাই যৌন হয়রানির বিষয়টি সরাসরি জানি না। তবে হামলার বিচার চাই।
তবে অভিযুক্ত মাদ্রাসা সুপার নুরুল হাকিম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বয়স প্রায় ৬০। ৩০ বছরের শিক্ষকতা জীবনে কখনো এমন অভিযোগ ওঠেনি। এই প্রতিষ্ঠানে ২৫ বছর ধরে সেবা দিয়ে তিলে তিলে এটিকে বড় করেছি। এখন একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে ষড়যন্ত্র করছে।
এদিকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মাহাবুব উল ইলাহিকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
তদন্ত কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অল্প সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, নবম ও দশম শ্রেণির কিছু ছাত্রী হাতে মেহেদি দিয়ে আসলে সুপার তাদের হাত ধরে শাসন করতেন, যা অনাকাঙ্ক্ষিত। তবে যৌন হয়রানির অভিযোগের সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মাদ্রাসার সাবেক পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আলম কোম্পানি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নুরুল হাকিমকে চিনি। আমার বিশ্বাস হয় না তিনি এমন কাজে জড়িত। মনে হচ্ছে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল বাতেন জানান, হামলার ঘটনায় একটি অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, যৌন হয়রানির অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা এখনও প্রতিবেদন জমা দেয়নি। হামলার বিষয়টিও আলাদাভাবে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।
What's Your Reaction?