মানবাধিকার কমিশনে হবে ‘জাতীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা বিভাগ’

নির্যাতন ও অমানবিক আচরণ প্রতিরোধে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাঠামোতে পরিবর্তন এনে ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে অধ্যাদেশের গেজেট জারি করা হয়েছে। এতে নতুনভাবে ‘জাতীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা বিভাগ’ গঠন, স্বাধীন বাজেট, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং স্বাধীনতা বঞ্চিত ব্যক্তিদের সুরক্ষায় বিস্তৃত ক্ষমতা যুক্ত করা হয়েছে। নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক বা লাঞ্ছনাকর আচরণ ও দণ্ডবিরোধী সনদের ঐচ্ছিক প্রটোকল (অপশনাল প্রোটোকল টু দ্য কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট টরচার অ্যান্ড আদার ক্রুয়েল, ইনহিউম্যান অর ডিগ্রেডিং ট্রিটমেন্ট অর পানিশমেন্ট) বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অধীনে ‘জাতীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা বিভাগ’ নামের একটি পৃথক ইউনিট গঠনের বিধান সংযোজন করা হয়েছে সংশোধিত অধ্যাদেশে। অধ্যাদেশের নতুন ৩০(ক) ধারা অনুযায়ী এই বিভাগের প্রধান হবেন কমিশনের চেয়ারপারসন। তার সঙ্গে থাকবেন কমিশন মনোনীত একজন কমিশনার এবং কারাবন্দি বা স্বাধীনতা বঞ্চিতদের অধিকার ও কল্যাণ বিষয়ে অভিজ্ঞ একজন মানবাধিকারকর্মী, য

মানবাধিকার কমিশনে হবে ‘জাতীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা বিভাগ’

নির্যাতন ও অমানবিক আচরণ প্রতিরোধে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাঠামোতে পরিবর্তন এনে ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে অধ্যাদেশের গেজেট জারি করা হয়েছে।

এতে নতুনভাবে ‘জাতীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা বিভাগ’ গঠন, স্বাধীন বাজেট, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং স্বাধীনতা বঞ্চিত ব্যক্তিদের সুরক্ষায় বিস্তৃত ক্ষমতা যুক্ত করা হয়েছে।

নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক বা লাঞ্ছনাকর আচরণ ও দণ্ডবিরোধী সনদের ঐচ্ছিক প্রটোকল (অপশনাল প্রোটোকল টু দ্য কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট টরচার অ্যান্ড আদার ক্রুয়েল, ইনহিউম্যান অর ডিগ্রেডিং ট্রিটমেন্ট অর পানিশমেন্ট) বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অধীনে ‘জাতীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা বিভাগ’ নামের একটি পৃথক ইউনিট গঠনের বিধান সংযোজন করা হয়েছে সংশোধিত অধ্যাদেশে।

অধ্যাদেশের নতুন ৩০(ক) ধারা অনুযায়ী এই বিভাগের প্রধান হবেন কমিশনের চেয়ারপারসন। তার সঙ্গে থাকবেন কমিশন মনোনীত একজন কমিশনার এবং কারাবন্দি বা স্বাধীনতা বঞ্চিতদের অধিকার ও কল্যাণ বিষয়ে অভিজ্ঞ একজন মানবাধিকারকর্মী, যিনি কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ পাবেন।

প্রয়োজন অনুযায়ী আইন, ফরেনসিক মেডিসিন, মনোবিজ্ঞান বা মানসিক স্বাস্থ্য, জেন্ডার বা আটক ব্যবস্থাপনায় বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের কো-অপ্ট বা পরামর্শক হিসেবে যুক্ত করার ক্ষমতাও বিভাগকে দেওয়া হয়েছে।

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, এই বিভাগ স্বাধীনতা হরণ করা হয় এমন সব স্থান—যেমন কারাগার, হাজতখানা, থানা, শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র, অভিবাসী আটক কেন্দ্র, মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্র, সামরিক আটক কেন্দ্র, সেফ হোম ও পরিচর্যা কেন্দ্র—চিহ্নিত করে নিয়মিত এবং পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই পরিদর্শন করবে। স্বাধীনতা বঞ্চিত ব্যক্তিদের সংখ্যা, পরিচয়, অবস্থা, রেজিস্টার, নথি, রেকর্ডসহ সব প্রাসঙ্গিক তথ্যে বিভাগের অবাধ প্রবেশাধিকার থাকবে। প্রয়োজন হলে স্বাধীনতা বঞ্চিত ব্যক্তিদের, তাদের স্বজন কিংবা আটক কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট কর্মীদের একান্ত ও গোপন সাক্ষাৎকার গ্রহণ করতে পারবে বিভাগটি।

নির্যাতন প্রতিরোধে এবং স্বাধীনতা বঞ্চিত ব্যক্তিদের সুরক্ষা জোরদারে কমিশনের কাছে সুপারিশ করা এবং সেই সুপারিশ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ বজায় রাখাও বিভাগের দায়িত্বের মধ্যে থাকবে।

বিভাগটি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয়ের নির্যাতন প্রতিরোধ বিষয়ক উপকমিটি—সাবকমিটি অন প্রিভেনশন অব টর্চার—এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জাতীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা বজায় রাখবে।

পরিদর্শন ও তদন্তের ক্ষেত্রে কমিশনের ধারা ২০–এ বর্ণিত ক্ষমতা এবং তথ্যের গোপনীয়তা ও তথ্যদাতার সুরক্ষায় ধারা ২৫–এ বর্ণিত ক্ষমতা প্রয়োগের সুযোগও এই ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে।

বিভাগের কার্যসম্পাদন নিশ্চিত করতে সরকার পর্যাপ্ত জনবল, প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং অর্থ প্রদান করবে। কমিশনের অধীনে বিভাগের জন্য একটি পৃথক ও সুরক্ষিত বাজেট বরাদ্দ থাকবে, যা বিভাগের স্বাধীনতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করবে। প্রতি বছর বিভাগটি তাদের কার্যক্রম সম্পর্কিত একটি পৃথক বার্ষিক প্রতিবেদন প্রস্তুত করবে এবং কমিশনের নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় তা দাখিল ও প্রকাশ করবে। পাশাপাশি প্রতিবেদনটি জাতিসংঘের নির্যাতন প্রতিরোধ উপকমিটিতেও পাঠানো হবে বলেও অধ্যাদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

আরএমএম/ইএ/জেআইএম

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow