‘ম্যানার’ শেখানোর নামে থাপ্পড়, কানে শুনছে না নবীন শিক্ষার্থী

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ‘ম্যানার’ শেখানোর নামে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। র‍্যাগিংয়ের একপর্যায়ে দ্বীন ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় মারা হয়। তারপর থেকে তিনি কানে শুনতে পারছেন না বলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ। সোমবার (২৪ নভেম্বর) ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এর আগে, গতকাল রোববার (২৩ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয়-২৪ হলের ছাদে এ ঘটনা ঘটেছে।  র‍্যাগিংয়ের শিকার ১৭তম ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ভর্তি হওয়ার পর থেকেই ১৬তম ব্যাচের কয়েকজন সিনিয়র তাদের নিয়মিত মানসিক চাপে রাখতেন। তাদের উদ্দেশে করে প্রায়ই অশালীন ভাষায় গালাগালি করা হতো। বিষয়টি বিভাগীয় প্রধানকে জানানো হলে দেড় মাসের মতো তারা চুপ ছিলেন। বিভাগের সিনিয়র তামি, মেঘনাদ, রাফি, মামুন, আজিজুল, ফাহিম, মনিরুল, সাকিল ও ফরহাদ তাদের গালাগাল ও র‍্যাগিং করেন বলে অভিযোগ তোলেন। র‍্যাগিংয়ের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তারা জানান, ১৬তম ব্যাচের সিনিয়ররা রোববার সন্ধ্যায় ক্লাসের সিআরকে ফোন দিয়ে সবাইকে নিয়ে ব্যাডমিনটন কোর্টে আসতে

‘ম্যানার’ শেখানোর নামে থাপ্পড়, কানে শুনছে না নবীন শিক্ষার্থী

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ‘ম্যানার’ শেখানোর নামে বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। র‍্যাগিংয়ের একপর্যায়ে দ্বীন ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থীকে থাপ্পড় মারা হয়। তারপর থেকে তিনি কানে শুনতে পারছেন না বলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

এর আগে, গতকাল রোববার (২৩ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয়-২৪ হলের ছাদে এ ঘটনা ঘটেছে। 

র‍্যাগিংয়ের শিকার ১৭তম ব্যাচের নবীন শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ভর্তি হওয়ার পর থেকেই ১৬তম ব্যাচের কয়েকজন সিনিয়র তাদের নিয়মিত মানসিক চাপে রাখতেন। তাদের উদ্দেশে করে প্রায়ই অশালীন ভাষায় গালাগালি করা হতো। বিষয়টি বিভাগীয় প্রধানকে জানানো হলে দেড় মাসের মতো তারা চুপ ছিলেন। বিভাগের সিনিয়র তামি, মেঘনাদ, রাফি, মামুন, আজিজুল, ফাহিম, মনিরুল, সাকিল ও ফরহাদ তাদের গালাগাল ও র‍্যাগিং করেন বলে অভিযোগ তোলেন।

র‍্যাগিংয়ের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তারা জানান, ১৬তম ব্যাচের সিনিয়ররা রোববার সন্ধ্যায় ক্লাসের সিআরকে ফোন দিয়ে সবাইকে নিয়ে ব্যাডমিনটন কোর্টে আসতে বলেন। সেখানে আসলে তারা কিছুক্ষণ বকাবকি করে পরে বিজয়-২৪ হলের ছাদে নিয়ে যায়। সেখানে আবারও খারাপ ভাষায় গালাগালি করেন। এ সময় মামুন ও মেঘনাদ ছাদে লাইন করে দাঁড় করিয়ে কিছুক্ষণ বকাবকি করে দূরে চলে যায়। পরে মামুন আবার সেখানে এসে দ্বীন ইসলামকে গালাগালির একপর্যায়ে গালে চড় মারে। এ সময় সে চিৎকার করে কান্না করলে হলে থাকা কিছু শিক্ষার্থী ছাদে আসেন। 

পরে দ্বীন ইসলাম তাদের জানায়, সে কানে শুনতে পারছে না। এ সময় সে বলতে থাকে ‘আমি কানে কিছু শুনতে পারছি না। আমাকে কানে থাপ্পড় মারা হয়েছে। আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান।’ পরে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। 

এসময় অভিযুক্ত মামুনকে চড় দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে বলেন, ‘তাকে ওইভাবে কিছু করা হয়নি। তাকে ওইভাবে হাত তুলি নাই, যেভাবে বলছে সেটা বেশি বলছে। আমি জাস্ট গায়ে একটু হাত দিছি।’

‎পরে প্রক্টর ও হল প্রশাসনকে জানানো হলে সহকারী প্রভোস্ট টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য নেন। এ সময় আবাসিক শিক্ষার্থীরা দ্রুত বিচার এবং অভিযুক্তদের আজীবন বহিষ্কারের দাবি জানান।

এদিকে সোমবার দুপুরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী দ্বীন ইসলামের সঙ্গে কথা হলে বলেন, ‘আমি কানে কিছু শুনতে পারছি না, টেস্ট করাতে মেডিকেল আসছি।’

এদিকে র‍্যাগিংয়ের ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বিজয়-২৪ হল প্রশাসন। কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে—হলের সহকারী প্রভোস্ট ড. এ.টি.এম. জিন্নাতুল বাসারকে। সদস্য হিসেবে আছেন সহকারী প্রভোস্ট সাইফুদ্দীন খালেদ এবং সহকারী প্রক্টর মো. ফায়সাল-ই-আলম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজয়-২৪ হলের প্রভোস্ট ড. আমির শরীফ বলেন, ‘তিন সদস্যদের তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। প্রতিবেদন দাখিলে তাদের ২৪ ঘণ্টার সময় দেওয়া হয়েছে।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, ‘র‍্যাগিংয়ের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় জিরো টলারেন্স অবস্থান নিয়েছে। র‍্যাগিংয়ে জড়িত কেউ ছাড় পাবে না। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে শৃঙ্খলা বোর্ডের বৈঠকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
 

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow