রোববারের মধ্যে দাবি না মানলে প্রাথমিকে বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন

তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে তিন লাখ সহকারী শিক্ষকের ‘লাগাতর’ কর্মবিরতি চলছে। গত ২৭ নভেম্বর থেকে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা। বার্ষিক পরীক্ষা সামনে রেখে এবার তারা সরকারকে নতুন আলটিমেটাম দিয়েছেন। ঘোষণা অনুযায়ী- আগামীকাল রোববারের (৩০ নভেম্বর) মধ্যে তাদের দাবি না মানা হলে পরশু (সোমবার) থেকে শুরু হতে যাওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করবেন। প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মু. মাহবুবর রহমান জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। শনিবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মাহবুবর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা লাগাতর কর্মবিরতি করছি। সারাদেশের সাড়ে ৬৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ। বার্ষিক পরীক্ষা আসন্ন। তার আগে রোববার যদি সরকার আমাদের দাবি না মানে, তাহলে সোমবার থেকে শুরু হতে যাওয়া বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করবো আমরা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।’ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সারাদেশে বর্তমানে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে তিন লাখ ৮৪ হাজারের বেশি শিক্ষক কর্মরত

রোববারের মধ্যে দাবি না মানলে প্রাথমিকে বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন

তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে তিন লাখ সহকারী শিক্ষকের ‘লাগাতর’ কর্মবিরতি চলছে। গত ২৭ নভেম্বর থেকে এ কর্মসূচি পালন করছেন তারা। বার্ষিক পরীক্ষা সামনে রেখে এবার তারা সরকারকে নতুন আলটিমেটাম দিয়েছেন।

ঘোষণা অনুযায়ী- আগামীকাল রোববারের (৩০ নভেম্বর) মধ্যে তাদের দাবি না মানা হলে পরশু (সোমবার) থেকে শুরু হতে যাওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করবেন।

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মু. মাহবুবর রহমান জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

শনিবার (২৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মাহবুবর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা লাগাতর কর্মবিরতি করছি। সারাদেশের সাড়ে ৬৫ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ। বার্ষিক পরীক্ষা আসন্ন। তার আগে রোববার যদি সরকার আমাদের দাবি না মানে, তাহলে সোমবার থেকে শুরু হতে যাওয়া বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন করবো আমরা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।’

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সারাদেশে বর্তমানে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে তিন লাখ ৮৪ হাজারের বেশি শিক্ষক কর্মরত। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই সহকারী শিক্ষক। প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকরা বর্তমানে দশম গ্রেডে উন্নীত হয়েছেন। সহকারী শিক্ষকরা ১৩তম গ্রেডে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। তারা এ নিয়ে অসন্তুষ্ট। গ্রেড উন্নীতকরণের দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছেন তারা।

গত ৮ থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি করেন শিক্ষকরা। এ কর্মসূচি চলাকালে শহীদ মিনারে পুলিশের হামলায় দেড় শতাধিক শিক্ষক ‍আহত হন। এরপর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসে শিক্ষকরা ক্লাসে ফেরেন। তবে সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কোনো অগ্রগতি না থাকায় ফের কর্মবিরতি শুরু করেন।

আরও পড়ুন
ডিজির অনুরোধে প্রাথমিক শিক্ষকদের ‘না’, কর্মবিরতি চলবে 
প্রাথমিকে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু, বার্ষিক পরীক্ষা ঘিরে সংশয় 

গত ২৭ নভেম্বর প্রাথমিক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে কর্মবিরতিতে থাকা সহকারী শিক্ষকদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবু নূর মো. শামসুজ্জামান। একই সঙ্গে তিনি আসন্ন বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন না করতে শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ জানান।

তবে আন্দোলনরত শিক্ষকরা ডিজির অনুরোধে সাড়া দেননি। গত ১২ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিবের সঙ্গে বৈঠকে তিন দফা দাবি পূরণে যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তা বাস্তবায়ন না করা পর্যন্ত সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দেন।

ওইদিন ডিজির সঙ্গে বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে- এমন প্রশ্নে পরিষদের আহ্বায়ক মাহবুবর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘সামনে বার্ষিক পরীক্ষা। ডিজি স্যার আমাদের বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন না করার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমরা তার আহ্বানে সাড়া দিতে পারিনি। আমরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবো বলে তাকে অবহিত করেছি।’

আরেক আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দিন মাসুদ বলেন, ‘ডিজি স্যার জানিয়েছেন, গ্রেড উন্নীতকরণসহ অন্য দাবি বাস্তবায়নে কিছুটা সময় লাগবে। পে-কমিশন এটা নিয়ে কাজ করছে। আমরা বলেছি, পে-কমিশনের সঙ্গে আমাদের দাবির সম্পর্ক নেই। অর্থ বিভাগের সচিব আমাদের জানিয়েছেন, সরকার ইতিবাচক হলে এ দাবি একদিনে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। ফলে আমরা চাই, সরকার শিক্ষকদের দাবি দ্রুত পূরণ করুক। তা না করলে আন্দোলন চলবে। বার্ষিক পরীক্ষাও বর্জন করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থী মিলেই প্রাথমিক বিদ্যালয়। শিক্ষকদের আর্থিক সুবিধা বাড়লে পড়ালেখার মান আরও বাড়বে। আমরা মনে করি, বার্ষিক পরীক্ষা এক সপ্তাহ পিছিয়ে গেলেও পরে নেওয়া সম্ভব। কিন্তু আমাদের দাবি এখন বাস্তবায়ন না করলে এটা ঝুলে যাবে। প্রয়োজনে আমাদের আবার অর্থ বিভাগের সচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসার ব্যবস্থা করতে ডিজিকে অনুরোধ জানিয়েছি।’

সহকারী শিক্ষকদের দাবিগুলো হলো- দশম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ বছর ও ১৬ বছরপূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান ও শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি। তবে সরকার দশম গ্রেড দিতে সরাসরি অস্বীকৃতি জানিয়ে আপাতত ১১তম গ্রেডের সুপারিশ করেছে। শিক্ষকরাও আপাতত সেই প্রতিশ্রুতির (১১তম গ্রেড দেওয়ার) বাস্তবায়ন দাবি করেন।

এএএইচ/কেএসআর

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow