শিক্ষকদের কর্মবিরতি সরকারি চাকরি আইনের পরিপন্থি
তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ‘লাগাতার’ কর্মবিরতি পালন করছেন। এটিকে ‘সরকারি চাকরি আইন ও সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা’র পরিপন্থি বলে উল্লেখ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। অবিলম্বে এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ করেছে মন্ত্রণালয়। রোববার (৩০ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা আব্দুল্লা শিবলী সাদিক এ বিজ্ঞপ্তিতে সই করেছেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এ সময়ে কর্মবিরতি কর্মসূচি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দেবে। তাই শিক্ষার্থীদের কল্যাণ বিবেচনায় নিয়ে এ ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ এবং সরকারি চাকরি আইন ও সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা পরিপন্থি কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সহকারী শিক্ষকদের অনুরোধ করা হলো। তিন দফা দাবিতে গত ২৭ নভেম্বর থেকে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি
তিন দফা দাবিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা ‘লাগাতার’ কর্মবিরতি পালন করছেন। এটিকে ‘সরকারি চাকরি আইন ও সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা’র পরিপন্থি বলে উল্লেখ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। অবিলম্বে এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ করেছে মন্ত্রণালয়।
রোববার (৩০ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা আব্দুল্লা শিবলী সাদিক এ বিজ্ঞপ্তিতে সই করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এ সময়ে কর্মবিরতি কর্মসূচি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দেবে। তাই শিক্ষার্থীদের কল্যাণ বিবেচনায় নিয়ে এ ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ এবং সরকারি চাকরি আইন ও সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা পরিপন্থি কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সহকারী শিক্ষকদের অনুরোধ করা হলো।
তিন দফা দাবিতে গত ২৭ নভেম্বর থেকে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ। বিষয়টি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অবগত বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের কয়েকটি সংগঠন কর্তৃক তাদের দাবি বাস্তবায়নে ১ ডিসেম্বর তাদের সম্ভাব্য কর্মবিরতি কর্মসূচির বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অবহিত হয়েছে।
শিক্ষকদের দাবিগুলো বিবেচনা করা হচ্ছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেড দেওয়ার বিষয়ে অর্থ বিভাগের সম্মতির পরিপ্রেক্ষিতে সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে উন্নীতকরণের দাবি মন্ত্রণালয় যৌক্তিক মনে করে। এ প্রেক্ষিতে গত ১০ নভেম্বর অর্থ বিভাগের সচিবের সঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে শিক্ষক নেতাদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিন দফা দাবি পূরণে অর্থ এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। দাবিগুলো বাস্তবায়নের বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার অর্থ উপদেষ্টা এবং বেতন কমিশনের সভাপতির সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা করেছেন।
শিক্ষকদের দাবির প্রতি মন্ত্রণালয় সহানুভূতিশীল উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল উন্নীতকরণের বিষয়ে পে-কমিশনে কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং কমিশনের প্রতিবেদন পাওয়ার পরপরই অর্থ বিভাগ কর্তৃক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে মর্মে ১০ নভেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। দাবিগুলো কার্যকর বাস্তবায়নের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাই সহানুভূতিশীল। পে-কমিশন ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সক্রিয় যোগাযোগ অব্যাহত আছে।
এর আগে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকেও শিক্ষকদের বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি ইস্যু করা হয়। অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি অ্যান্ড অপারেশন) এ কে মোহাম্মদ সামছুল আহসানের সই করা চিঠি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। চিঠিটি সব বিভাগীয় উপ-পরিচালক এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামীকাল ১ ডিসেম্বর থেকে দেশব্যাপী সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় সাময়িক পরীক্ষা শুরু হবে। পরীক্ষা কার্যক্রম বিনা ব্যর্থতায় নির্ধারিত সময়ে সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। এতে আরও বলা হয়, তৃতীয় সাময়িক পরীক্ষা গ্রহণে শিক্ষক বা কর্মকর্তার কোনো প্রকার শৈথিল্য বা অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বর্জনের ঘোষণা দিয়ে ডিজিকে শিক্ষকদের চিঠি
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের হুঁশিয়ারির পরও পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্তে অনড় প্রাথমিকের শিক্ষকরা। মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর থেকে সতর্কতামূলক চিঠি ও বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর উল্টো শিক্ষকরাও অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দিয়েছেন।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের চারজন আহ্বায়কের সই করা চিঠিতে বলা হয়েছে, তিন দফা দাবি আদায়ে সহকারী শিক্ষকরা পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করে আসছেন। চলমান পূর্ণদিবস কর্মবিরতির পরিপ্রেক্ষিতে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তৃতীয় প্রান্তিক মূল্যায়ন (বার্ষিক পরীক্ষা) বর্জনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, আমাদের অভিভাবক প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে বিনীত নিবেদন, দ্রুত দাবি বাস্তবায়ন করে আমাদের পরীক্ষার কক্ষে ফেরানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
সহকারী শিক্ষকদের দাবি হলো দশম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ বছর ও ১৬ বছরপূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান ও শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি। তবে সরকার দশম গ্রেড দিতে সরাসরি অস্বীকৃতি জানিয়ে আপাতত ১১তম গ্রেডের সুপারিশ করেছে। শিক্ষকরাও আপাতত সেই প্রতিশ্রুতির (১১তম গ্রেড দেওয়ার) বাস্তবায়ন দাবি করেন।
এএএইচ/এমএমকে/জেআইএম
What's Your Reaction?