শিক্ষা কেন্দ্র রাজনীতিমুক্ত রাখা অপরিহার্য: শিক্ষা উপদেষ্টা

শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক কলুষতা আনা অযৌক্তিক। শিক্ষা কেন্দ্রগুলিকে রাজনীতিমুক্ত রাখতে হবে এবং এক্ষেত্রে শিক্ষকদের বড় ধরনের ভূমিকা রয়েছে। একই অনুষ্ঠানে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, রাজনীতিবিদ ছাত্রদের মুখ থেকে আমরা শিক্ষকদের শেখানো ভাষা শুনতে চাই। ফরিদপুরে এক সেমিনারে যথাক্রমে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দিতে গিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ও দুদক চেয়ারম্যান এ কথাগুলো বলেন।শনিবার (২৯ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে ফরিদপুর সদর উপজেলা মিলনায়তনে “শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় গুণগত মানোন্নয়নে শিক্ষকদের ভূমিকা” শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে বৃহত্তর ফরিদপুরের মাদারীপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ এবং ফরিদপুরে কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মকর্তাবৃন্দ অংশ নেন।শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। এর জন্য যে পরিমাণ সম্পদ ও অর্থ বিনিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন তা আমরা দিতে পারিনি। বর্তমান সরকার ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ অবস্থায় ভঙ্গুর অর্থনীতি নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। তারপরও আমরা আমাদের সাধ্যমতো কাজ করে যাচ্ছি। "শিক্ষকদের কল্যাণ তহবিল

শিক্ষা কেন্দ্র রাজনীতিমুক্ত রাখা অপরিহার্য: শিক্ষা উপদেষ্টা

শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক কলুষতা আনা অযৌক্তিক। শিক্ষা কেন্দ্রগুলিকে রাজনীতিমুক্ত রাখতে হবে এবং এক্ষেত্রে শিক্ষকদের বড় ধরনের ভূমিকা রয়েছে।

একই অনুষ্ঠানে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, রাজনীতিবিদ ছাত্রদের মুখ থেকে আমরা শিক্ষকদের শেখানো ভাষা শুনতে চাই। ফরিদপুরে এক সেমিনারে যথাক্রমে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দিতে গিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ও দুদক চেয়ারম্যান এ কথাগুলো বলেন।

শনিবার (২৯ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে ফরিদপুর সদর উপজেলা মিলনায়তনে “শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় গুণগত মানোন্নয়নে শিক্ষকদের ভূমিকা” শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। এতে বৃহত্তর ফরিদপুরের মাদারীপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ এবং ফরিদপুরে কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মকর্তাবৃন্দ অংশ নেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। এর জন্য যে পরিমাণ সম্পদ ও অর্থ বিনিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন তা আমরা দিতে পারিনি। বর্তমান সরকার ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ অবস্থায় ভঙ্গুর অর্থনীতি নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে। তারপরও আমরা আমাদের সাধ্যমতো কাজ করে যাচ্ছি। "শিক্ষকদের কল্যাণ তহবিল ও অবসর ভাতা তাদের প্রাপ্য এবং আমরা তাৎক্ষণিকভাবে দিতে চাই" মন্তব্য করে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, আগে এ কাজগুলো স্বেচ্ছাচারীভাবে করা হয়েছে। এ কারণে এ টাকা শিক্ষকদের সময়মতো দেওয়া যাচ্ছে না। আমাদের হাতে টাকা থাকলে দিতে সমস্যা ছিল না। কিন্তু যে ব্যাংকে টাকা রাখা হয়েছিল সেই ব্যাংকে টাকা নেই। খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে আমাদের চলতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, শিক্ষকরা পথপ্রদর্শক, তারা আলো জ্বালান। মা, বাবা, অভিভাবকরা শিক্ষকদের হাতে সন্তানদের তুলে দেন। তাই শিক্ষা পরিবারের দায়িত্ব অপরিসীম। শিক্ষার্থীদের শুধু অক্ষর জ্ঞান শেখালে হবে না, নৈতিকভাবে শিক্ষার্থীদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা নিজেদের ঋদ্ধ করতে পারে। তাদের স্বপ্ন দেখাতে হবে, সুনাগরিক হওয়ার শিক্ষা দিতে হবে, যাতে দেশকে, দশকে ও পৃথিবীকে তারা কিছু দিতে পারে।

শিক্ষক রাজনীতির কলুষিত দিকের উদাহরণ তুলে ধরে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষকদের মধ্যে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা হওয়ায় কীভাবে প্রতিষ্ঠানগুলোকে নষ্ট করেছে তা উচ্চ পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই। আমার আহ্বান থাকবে, যারা রাজনীতি করতে চান অবশ্যই রাজনীতি করবেন কিন্তু শিক্ষাকেন্দ্রগুলিকে রাজনীতি দিয়ে কলুষিত করার কোনো মানে হয় না। আমরা মনে করি শিক্ষাকেন্দ্রগুলি রাজনীতিমুক্ত রাখতে হবে। এ ব্যাপারে শিক্ষকদের বড় ধরনের ভূমিকা রয়েছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন একটি গল্পের উদাহরণ টেনে বলেন, সরকারের ওপর যারা বিশেষ সন্তুষ্ট তাদের দেখাশোনার কাজ দুর্নীতি দমন কমিশনের। সরকারের ওপর তারা সন্তুষ্ট থাকতে পারে যারা সরকারকে চুষে চুষে খেতে পারে, সরকারের আইন কানুন দুমড়ে মুচড়ে টাকা পয়সা আদায় করতে পারে।

তিনি বলেন, শিক্ষকদের বলি, রাজনৈতিক দলের লেজুরবৃত্তি করবেন না। লেজুরবৃত্তিতে লাভ আছে, তবে তাতে সত্যিকারের শিক্ষক হওয়া যায় না। যদি লেজুরবৃত্তি না করেন তাহলে ভালো থাকতে পারবেন। দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, যারা রাজনীতি করেন তাদের যারা শিক্ষক তারা সবাই তো এখানে। শিক্ষকরা রাজনীতিবিদ ছাত্রদের কী ভাষা শেখান? রাজনীতিবিদদের ভাষা অনেক সময় আমাদের বিব্রত করে, আমরা অসন্তুষ্ট হই।

এখানেও কেউ কেউ এ জাতীয় ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করেছেন। জোর গলায় কথা বলে কোনো লাভ হয় না। ভালো গলায়, যত আস্তে ভালো কথা বলা যায়, তাতে কাজ হয়। তাই শিক্ষকদের কাছে আমার আবেদন আপনাদের ভাষাই তো রাজনীতিবিদরা শিখবে। রাজনীতিবিদ ছাত্রদের মুখ থেকে আমরা শিক্ষকদের শেখানো ভাষা শুনতে চাই।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মাউশি ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক ফকির মইনুদ্দিন, মাউশির ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক ফকির মোহাম্মদ বি এম আব্দুল হান্নান, যশোর শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এবিএম সাত্তার, অধ্যাপক রিজভী জামান, অধ্যাপক কাকলি মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow