শিশু সাজিদ কি সত্যিই জীবিত উদ্ধার হয়েছিল? জেনে নিন সার্বিক অবস্থা
রাজশাহীর তানোরে পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে যাওয়া দুই বছরের শিশু সাজিদ আর বেঁচে নেই। প্রায় ৩২ ঘণ্টার তীব্র উদ্ধার অভিযান শেষে শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হলেও তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শিশুর মরদেহ পরিবারের বাড়িতে নেওয়া হয় এবং দাফন সম্পন্ন হয়েছে। উদ্ধার অভিযান ও পরিস্থিতিশিশু সাজিদকে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ৫০ ফুট গভীর মাটির নলকূপ থেকে উদ্ধার করা হয়। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, শিশুটি উদ্ধারকালে অচেতন অবস্থায় ছিল। পাইপের ব্যাস মাত্র ৬ থেকে ৮ ইঞ্চি হওয়ায় এবং স্থানীয়দের আগের চেষ্টার কারণে পাইপের ভেতরে প্রচুর মাটি ও খড়কুটো পড়ে গিয়েছে, যার কারণে শিশু মাটির নিচে চাপা পড়ে। উদ্ধার অভিযানটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও সময়সাপেক্ষ ছিল। তিনটি এক্সকেভেটর ব্যবহার করা হলেও মূল পাইপের স্থানকে কম্পনমুক্ত রাখতে ম্যানুয়াল ও যান্ত্রিক পদ্ধতির সংমিশ্রণে কাজ করা হয়। উদ্ধারকাজ চলাকালীন উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, আনসার, সেনাবাহিনী, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ সার্বক্ষণিক সহযোগিতা প্রদান করেন। হাসপাতালে মৃত্যু
রাজশাহীর তানোরে পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে যাওয়া দুই বছরের শিশু সাজিদ আর বেঁচে নেই। প্রায় ৩২ ঘণ্টার তীব্র উদ্ধার অভিযান শেষে শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হলেও তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শিশুর মরদেহ পরিবারের বাড়িতে নেওয়া হয় এবং দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
উদ্ধার অভিযান ও পরিস্থিতি
শিশু সাজিদকে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ৫০ ফুট গভীর মাটির নলকূপ থেকে উদ্ধার করা হয়। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, শিশুটি উদ্ধারকালে অচেতন অবস্থায় ছিল। পাইপের ব্যাস মাত্র ৬ থেকে ৮ ইঞ্চি হওয়ায় এবং স্থানীয়দের আগের চেষ্টার কারণে পাইপের ভেতরে প্রচুর মাটি ও খড়কুটো পড়ে গিয়েছে, যার কারণে শিশু মাটির নিচে চাপা পড়ে।
উদ্ধার অভিযানটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও সময়সাপেক্ষ ছিল। তিনটি এক্সকেভেটর ব্যবহার করা হলেও মূল পাইপের স্থানকে কম্পনমুক্ত রাখতে ম্যানুয়াল ও যান্ত্রিক পদ্ধতির সংমিশ্রণে কাজ করা হয়। উদ্ধারকাজ চলাকালীন উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, আনসার, সেনাবাহিনী, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ সার্বক্ষণিক সহযোগিতা প্রদান করেন।
হাসপাতালে মৃত্যু
তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বার্নাবাস হাসদা জানান, রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে শিশুকে হাসপাতালে আনা হয়, তবে তার মৃত্যু ইতোমধ্যে ঘটেছে। দীর্ঘ সময় অক্সিজেন না পাওয়াকে মৃত্যুর মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। শিশুর নানা আইয়ূব আলী দাবি করেন, উদ্ধারকর্মীরা শিশুটিকে তোলার সময় সে জীবিত ছিল। তবে হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
দুর্ঘটনার কারণ
স্থানীয়রা জানান, গত বছর ওই এলাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন করা হলেও পানি না পাওয়ায় গর্তটি পরিত্যক্ত অবস্থায় খোলা রাখা হয়েছিল। বর্ষার কারণে গর্তের মুখ আরও বড় হয়ে গিয়েছে। কোনো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না থাকায় শিশুটি সেই গর্তে পড়ে যায়।
শিশুর বাবা রাকিব উদ্দীন বলেন, “আমি ফুটফুটে একটা সন্তান হারিয়েছি। আল্লাহই দিয়েছেন, আল্লাহই নিয়ে গেছেন। কিন্তু অবহেলা হয়েছে, এটি একমাত্র কারণ। যারা হাউজিং (গর্ত) করেছে, তাদেরই দায়িত্ব। প্রশাসনিকভাবে বিচার হলে আমি তাতে সন্তুষ্ট হব।”
গ্রামের প্রতিক্রিয়া
শিশুর জানাজা শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় নেককিড়ি কবরস্থান সংলগ্ন মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। গ্রামের মানুষজনের চোখ ভিজে ওঠে, স্কুলপড়ুয়া শিশুরা থেকে বৃদ্ধরা সবাই জানাজার মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। জানাজার নামাজ কাজী মাওলানা মিজানুর রহমান পরিচালনা করেন। পুরো গ্রামের মানুষ সাজিদের জন্য দোয়া করেন এবং পরিবারের ধৈর্য্য কামনা করেন।
গ্রামের সব দোকান বন্ধ থাকে এবং সাধারণ জীবন প্রায় থমকে যায়। শিশুর ছোট্ট দেহটি সাদা কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় কফিনে রাখা হয়। তার মা বারবার জানাজার মাঠে ছুটে আসার চেষ্টা করলেও কেউ তাকে ধরে রাখে।
উদ্ধার অভিযান সংক্রান্ত বিবরণ
শিশুটিকে উদ্ধার করতে ফায়ার সার্ভিস বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে অভিযান শুরু করে। মূল গর্তের পাশ থেকে কেটে শিশুটিকে উদ্ধার করার জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে খননযন্ত্র ব্যবহার করা হয়। ৩২ ঘণ্টার কঠোর খননের পর রাত ৯টার দিকে শিশুটি মাটির নিচ থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধারকালে শিশুটিকে জীবিত রাখার চেষ্টা হিসেবে পাইপের মাধ্যমে অক্সিজেন প্রদান করেছিলেন।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে অরক্ষিত গর্ত ফেলে রাখার বিষয়ে সতর্কবার্তা দেন। তিনি বলেন, “প্রজেক্টের কাজ শেষে ছোট ছোট গর্ত এভাবে অরক্ষিত রাখা দুর্ঘটনার কারণ হয়। সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।”
সমবেদনা ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া
শিশুর মৃত্যু পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, যথাযথ সতর্কতা না থাকায় এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া যেত। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় প্রশাসন শিশুটিকে উদ্ধার করতে সর্বোচ্চ সতর্কতা ও সেফটি বজায় রেখে কাজ করেছেন।
শিশুর পরিবার ও গ্রামের মানুষ দীর্ঘক্ষণ কান্না ও প্রার্থনায় ডুবে থাকেন। সবাই শিশুটির মাগফিরাত কামনা করেন এবং পরিবারের জন্য ধৈর্য্য প্রার্থনা করেন।
What's Your Reaction?