শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে ঢাকার অলিগলিতে সরব আলোচনা

রামপুরার একটি গার্মেন্টসে ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করেন রোকন ইসলাম। পরিবার নিয়ে থাকেন ধূপখোলা মাঠের পাশেই। শেখ হাসিনার মামলার রায়কে কেন্দ্র করে যানবাহনের স্বল্পতা ও পরিস্থিতি বিবেচনায় হাতে সময় নিয়ে বাসা থেকে বের হয়েছেন। জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‌শহরের মানুষ একে অপরকে না চিনলেও দেশ ও সময়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে সবারই ভালো লাগে। আজকের আলোচনার কেন্দ্র শেখ হাসিনার মামলার রায়। দেখা যাক কি হয়। সরেজমিনে এই দৃশ্য দেখা যায় রাজধানীর কয়েকটি সড়কের অলিগলিতেও। বিশেষ করে লক্ষ্মীবাজার, কলতাবাজার, রায় সাহেব বাজার, ঋষি কেষ দাশ লেন, সূত্রাপুর বাজার এলাকায়। এসব অলিগলি ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে আলাপ চলছে চায়ের দোকান, খাবারের দোকান এবং আশপাশের মুদির দোকানগুলোয়। প্রধান সড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ কিছুটা কম দেখা গেলেও অলিগলিতে মানুষের উপস্থিতি ছিল স্বাভাবিক। আর মানুষের কথোপকথনের মূল বিষয় ছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ঘোষিত রায়। যা এই অলিগলি ধরে চললেই কানে আসছে। সকাল সাড়ে ৭টা, সূত্রাপুর থানার মুরগীটোলা মোড় থেকে ধূপখোলা মাঠের দিকে যেতে বেশ কয়েকটি খাবারের দোকান পথে

শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে ঢাকার অলিগলিতে সরব আলোচনা

রামপুরার একটি গার্মেন্টসে ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করেন রোকন ইসলাম। পরিবার নিয়ে থাকেন ধূপখোলা মাঠের পাশেই। শেখ হাসিনার মামলার রায়কে কেন্দ্র করে যানবাহনের স্বল্পতা ও পরিস্থিতি বিবেচনায় হাতে সময় নিয়ে বাসা থেকে বের হয়েছেন। জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‌শহরের মানুষ একে অপরকে না চিনলেও দেশ ও সময়ের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে সবারই ভালো লাগে। আজকের আলোচনার কেন্দ্র শেখ হাসিনার মামলার রায়। দেখা যাক কি হয়।

সরেজমিনে এই দৃশ্য দেখা যায় রাজধানীর কয়েকটি সড়কের অলিগলিতেও। বিশেষ করে লক্ষ্মীবাজার, কলতাবাজার, রায় সাহেব বাজার, ঋষি কেষ দাশ লেন, সূত্রাপুর বাজার এলাকায়।

এসব অলিগলি ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে আলাপ চলছে চায়ের দোকান, খাবারের দোকান এবং আশপাশের মুদির দোকানগুলোয়। প্রধান সড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ কিছুটা কম দেখা গেলেও অলিগলিতে মানুষের উপস্থিতি ছিল স্বাভাবিক। আর মানুষের কথোপকথনের মূল বিষয় ছিল সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ঘোষিত রায়। যা এই অলিগলি ধরে চললেই কানে আসছে।

সকাল সাড়ে ৭টা, সূত্রাপুর থানার মুরগীটোলা মোড় থেকে ধূপখোলা মাঠের দিকে যেতে বেশ কয়েকটি খাবারের দোকান পথে। সকালের নাস্তা খেতে আসা কিংবা জরুরি প্রয়োজনে যারা দোকানে ঢুকছিলেন, বেশিরভাগ মানুষেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রায় নিয়ে নিজেদের মতামত দিচ্ছিলেন।

কোথাও কোথাও আবার একসঙ্গে রিকশাচালক থেকে শুরু করে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকেও জটলা করে এই বিষয়ে আলাপ করতে দেখা যায়।

সকাল ৮টায় নারিন্দা কাঁচাবাজার এলাকায় দেখা যায়, একটি বড় মুদি দোকানে ঝোলানো টেলিভিশনের সামনে দোকানদার থেকে শুরু করে ক্রেতা, এমনকি বাইরে দাঁড়ানো পথচারীরাও চোখ রেখেছেন। একটি বেসরকারি সংবাদভিত্তিক চ্যানেলে তখন রায় নিয়ে বিশ্লেষণ প্রচার হচ্ছিল।

শেখ হাসিনার মামলার রায় নিয়ে একটি চায়ের দোকানে আলাপ-আলোচনা করছিলেন চাকরিজীবী আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, যদি রায় শাস্তিমূলক হয়, তাহলে এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং ক্ষমতার ভারসাম্যের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

তিনি বলেন, হাসিনার সমর্থকরা এই মামলাকে ‘রাজনৈতিক নিধন’ বা ক্ষমতা শোষণের হাতিয়ার হিসেবে আখ্যায়িত করতে পারে। বিরোধীরা এটি গণঅভ্যুত্থানের প্রভাব এবং নির্যাতনভুক্তদের ক্ষতিপূরণ-খোঁজার অংশ হিসেবে দেখতে পারেন।

শাহিনা আক্তার নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেন, এই মামলা নিয়ে দেশে অনেক বিভাজন তৈরি হয়েছে। রায়ের পর যেন কোনো ধরনের অস্থিরতা না তৈরি হয়, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। রাজনীতি যাই হোক, দেশটা যেন শান্ত থাকে—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ। রায়টি সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে রায় ঘোষণা করা হবে। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

দেশের ইতিহাসে কোনো প্রধানমন্ত্রী মানবতাবিরোধী অপরাধে প্রথমবারের মতো বিচার শেষে সাজার মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। আর এ রায় ঘিরে দেশ-বিদেশের মানুষের দৃষ্টি এখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দিকে।

জুলাই-আগস্টে গণহত্যার দায়ে কী সাজা পাবেন একসময়ের প্রতাপশালী প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী; এমন কানাঘুষা চলছে সর্বত্র। অপেক্ষার প্রহর গুনছে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে নিহতদের পরিবার ও স্বজনরা।

শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্ট ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গেট ও আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে পুলিশ- র্যাব ও বিজিবির পাশাপাশি নিয়োজিত রয়েছে সেনাবাহিনী। গত ১৩ নভেম্বর রায়ের দিন ঠিক করার আগে থেকেই তৎপর গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও।

এরই মধ্যে নিরাপত্তার স্বার্থে সন্ধ্যার পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দোয়েল চত্বর হয়ে শিক্ষা ভবনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সীমিত করা হয়েছে পথচারীদের চলাচল।

এছাড়া ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণার সময়ও নির্ধারণ করা হয়েছে সোমবার (১৭ নভেম্বর) বেলা ১১টায়।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও আসামি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন।

যদিও রাজসাক্ষী হিসেবে সাবেক আইজিপি মামুন ট্রাইব্যুনালে সাক্ষী দিয়েছেন। হাসিনা ও কামাল দুজনেরই সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে প্রসিকিউশন। আর মামুনের খালাস চেয়েছেন তার আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ। হাসিনা-কামালের পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে নিযুক্ত (স্টেড ডিফেন্স) আইনজীবী মো. আমির হোসেন বলেছেন, ন্যায়বিচার হলে সব সাবেক প্রধানমন্ত্রী-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও খালাস পাবেন বলে তার বিশ্বাস।

জানা গেছে, শেখ হাসিনার রায় ঘোষণা সরাসরি দেখানো হবে। এ ছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বড় পর্দায় রায় দেখানো হবে। রায় ট্রাইব্যুনালের লিংক থেকে সরাসরি দেখানো হবে। ন্যায়বিচারের স্বার্থে ট্রাইব্যুনাল যে আদেশ দেবেন তা মেনে নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউশন।

বিটিভিতে শেখ হাসিনার মামলার রায়ের কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার করা হবে জানিয়ে প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে এটিই সর্বপ্রথম রায় হবে।

অনুমতি সাপেক্ষে ট্রাইব্যুনালে রায় বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করতে পারবে দেশের সব গণমাধ্যম।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সর্বোচ্চ সাজার প্রত্যাশা করছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তিন জনের মামলার রায়ের দিন ১৭ নভেম্বর (সোমবার) ঘোষণা করার দিন ঠিক করার পর ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে শেখ হাসিনার মামলার রায়ের দিন ধার্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, আমরা আদালতের কাছে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে আবেদন করেছি। আদালত সুবিবেচনা প্রয়োগ করবেন। তবে আমাদের পক্ষ থেকে প্রেয়ার হচ্ছে যে, এই অপরাধের দায়ে আসামিদের যেন সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হয়।

এর আগে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের রায়ের দিন ধার্য করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

এদিন মামলার অন্যতম আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আনা হবে। এ মামলায় পলাতক রয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

এমডিএএ/এমআরএম/এএসএম

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow