শেরপুরে হাজং জনগোষ্ঠির ‘নয়া খাওয়া’ নবান্ন উৎসব পালিত

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে হাজং জনগোষ্ঠির বিলুপ্ত প্রায় নবান্ন উৎসব ‘নয়া খাওয়া’ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার কয়রাকুড়ি গ্রামের হাজং পল্লীর নিরঞ্জন হাজং এর বাড়ীর আঙিনায় শনিবার (২২ নবেম্বর) এ ‘নয়া খাওয়া’ উৎসবটি পালিত হয়। ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রণমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইইডি) এর সহযোগিতায় নাগরিক প্ল্যাটফরম জনউদ্যোগ শেরপুর কমিটি ও বাংলাদেশ জাতীয় হাজং সংগঠন শেরপুর জেলা শাখা এ ‘নয়া খাওয়া’ নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেন। এ উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ‘নয়া খাওয়া’ উৎসবে শনিবার সকালে স্থানীয় একটি ধানক্ষেতের পাশে হাজং ঐতিহ্য অনুসারে বাস্তু পূজা করা হয়। এ সময় শস্যদেবতার উদ্দেশ্যে নতুন ফসলের নৈবেদ্য উৎসর্গ করা হয়। দুপুরে রান্না করা হয় ঐতিহ্যবাহী বিন্নি ধানের ‘বিচি ভাত’ (বিশেষ পদ্ধতিতে ভাপের তাপে রান্না আঠালো জাতীয় ভাত) ও বিভিন্ন ব্যঞ্জন (বিভিন্ন পদের তরকারি) এবং মাশ কলাইয়ের ডাল। ঐতিহ্যবাহী এসব খাবার দিয়ে দুপুরের আপ্যায়ন পর্ব শেষ করা হয়। এর আগে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে ‘সমাজসেবা ও জাতিস্বত্ত¡ার উন্নয়নে অবদান’ রাখায় বাংলাদেশ জাতীয় হাজং সংগঠন শেরপুর জেলা

শেরপুরে হাজং জনগোষ্ঠির ‘নয়া খাওয়া’ নবান্ন উৎসব পালিত

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে হাজং জনগোষ্ঠির বিলুপ্ত প্রায় নবান্ন উৎসব ‘নয়া খাওয়া’ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার কয়রাকুড়ি গ্রামের হাজং পল্লীর নিরঞ্জন হাজং এর বাড়ীর আঙিনায় শনিবার (২২ নবেম্বর) এ ‘নয়া খাওয়া’ উৎসবটি পালিত হয়। ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রণমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইইডি) এর সহযোগিতায় নাগরিক প্ল্যাটফরম জনউদ্যোগ শেরপুর কমিটি ও বাংলাদেশ জাতীয় হাজং সংগঠন শেরপুর জেলা শাখা এ ‘নয়া খাওয়া’ নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেন। এ উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

‘নয়া খাওয়া’ উৎসবে শনিবার সকালে স্থানীয় একটি ধানক্ষেতের পাশে হাজং ঐতিহ্য অনুসারে বাস্তু পূজা করা হয়। এ সময় শস্যদেবতার উদ্দেশ্যে নতুন ফসলের নৈবেদ্য উৎসর্গ করা হয়। দুপুরে রান্না করা হয় ঐতিহ্যবাহী বিন্নি ধানের ‘বিচি ভাত’ (বিশেষ পদ্ধতিতে ভাপের তাপে রান্না আঠালো জাতীয় ভাত) ও বিভিন্ন ব্যঞ্জন (বিভিন্ন পদের তরকারি) এবং মাশ কলাইয়ের ডাল। ঐতিহ্যবাহী এসব খাবার দিয়ে দুপুরের আপ্যায়ন পর্ব শেষ করা হয়। এর আগে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে ‘সমাজসেবা ও জাতিস্বত্ত¡ার উন্নয়নে অবদান’ রাখায় বাংলাদেশ জাতীয় হাজং সংগঠন শেরপুর জেলা শাখার মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা কল্পনা হাজংকে বিশেষভাবে সংবর্ধিত করা হয় এবং গায়ে উত্তরীয় জড়িয়ে সম্মাণনা স্মারক প্রদান করা হয়।

বাংলাদেশ জাতীয় হাজং সংগঠন শেরপুর জেলা শাখার সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুকুমার হাজং এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় হাজংদের নয়া খাওয়ার ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন হাজং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক শ্যামল চন্দ্র সরকার, ধান গবেষক সেন্টু হাজং ও কবি জ্যোতি পোদ্দার।

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন জনউদ্যোগ আহবায়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, শেরপুর সরকারী কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল কাদির, প্রাণ-প্রকৃতি ও পাখী বিশেষজ্ঞ শহীদুজ্জামান শহীদ, হাজং নেত্রী কল্পনা হাজং, এপেক্সিয়ান মমিনুল ইসলাম, আদিবাসী নেতা সুমন্ত বর্মন, মিঠুন কোচ, সোলায়মান আহম্মেদ প্রমুখ। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে হাজং শিল্পীরা নৃত্য-গীত পরিবেশন করেন।

বাংলাদেশ জাতীয় হাজং সংগঠন শেরপুর জেলা শাখার সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুকুমার হাজং বলেন, অন্যান নৃ-জনগোষ্ঠির মতো হাজং জনগোষ্ঠির নিজস্ব ভাষা এবং সংস্কৃতি হারিয়ে যেতে বসেছে। নানা কারণে এখন আর আগের মতো নিজস্ব সংস্কৃতির উৎসব আয়োজন নেই। পুরণো ঐহিত্য ফিরিয়ে আনতে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কিছু কাজ হচ্ছে। নতুন প্রজন্মের মাঝে নিজস্ব কৃষ্টি, সংস্কৃতি ঐতিহ্য তুলে ধরার লক্ষ্যেই এই ‘নয়া খাওয়া’ নবান্ন উৎসবের আয়োজন। এর মধ্য দিয়ে হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি আবার জাগরুক হবে এবং তরুণ প্রজন্ম এটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow