সাগরের নিচ থেকে ময়লা তুলে আনবে মনুষ্যবিহীন রোবট!

আজকের পৃথিবীতে অন্যতম বড় পরিবেশগত সমস্যা সামুদ্রিক দূষণ। সাগরে ফেলে দেওয়া মাছ ধরার জাল, কন্টেইনার বা অন্যান্য বর্জ্য সামুদ্রিক প্রাণীদের জড়িয়ে ফেলে বা শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলতে পারে। প্লাস্টিক বর্জ্য ভেঙে মাইক্রোপ্লাস্টিকে পরিণত হয়, যা পানিতে বিষাক্ত রাসায়নিক ছড়িয়ে খাদ্য শৃঙ্খলেও প্রবেশ করে। কিন্তু এবার এসব বিপদ থেকে বাঁচতে সাহায্য করবে মনুষ্যবিহীন একটি রোবট। একদল গবেষক ও শিক্ষার্থী তৈরি এই স্বয়ংক্রিয় ডাইভিং রোবট সমুদ্রের তলদেশ থেকে আবর্জনা শনাক্ত করে তুলে আনতে পারে। স্মার্ট গ্র্যাপল: আবর্জনা শনাক্ত ও সংগ্রহে সক্ষম জার্মানির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব মিউনিখ (টিইউএম)-এ তৈরি রোবটটির নাম ‘স্মার্ট গ্র্যাপল’। এটি পানির নিচে ক্যামেরা বা ঘোলা পানিতে সোনার ইমেজিং ব্যবহার করে আবর্জনা শনাক্ত করে। এরপর চার আঙুল-বিশিষ্ট শক্তিশালী মেকানিক্যাল হাতে সেই বর্জ্য ধরতে পারে, যা এক মিটার লম্বা ও চওড়া বা প্রায় ২৫০ কিলোগ্রাম ওজনের বস্তু তুলতে সক্ষম। পরে সেগুলো পানির ওপর ভাসমান ছোট একটি স্বয়ংক্রিয় নৌকায় তুলে পাঠায়, যা আবর্জনা কূলে নিয়ে যায় পুনর্ব্যবহারের জন্য। আরও পড়ুন>>রোবটের ‘গর্ভে’ মানবশিশ

সাগরের নিচ থেকে ময়লা তুলে আনবে মনুষ্যবিহীন রোবট!

আজকের পৃথিবীতে অন্যতম বড় পরিবেশগত সমস্যা সামুদ্রিক দূষণ। সাগরে ফেলে দেওয়া মাছ ধরার জাল, কন্টেইনার বা অন্যান্য বর্জ্য সামুদ্রিক প্রাণীদের জড়িয়ে ফেলে বা শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলতে পারে। প্লাস্টিক বর্জ্য ভেঙে মাইক্রোপ্লাস্টিকে পরিণত হয়, যা পানিতে বিষাক্ত রাসায়নিক ছড়িয়ে খাদ্য শৃঙ্খলেও প্রবেশ করে। কিন্তু এবার এসব বিপদ থেকে বাঁচতে সাহায্য করবে মনুষ্যবিহীন একটি রোবট।

একদল গবেষক ও শিক্ষার্থী তৈরি এই স্বয়ংক্রিয় ডাইভিং রোবট সমুদ্রের তলদেশ থেকে আবর্জনা শনাক্ত করে তুলে আনতে পারে।

স্মার্ট গ্র্যাপল: আবর্জনা শনাক্ত ও সংগ্রহে সক্ষম

জার্মানির টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি অব মিউনিখ (টিইউএম)-এ তৈরি রোবটটির নাম ‘স্মার্ট গ্র্যাপল’। এটি পানির নিচে ক্যামেরা বা ঘোলা পানিতে সোনার ইমেজিং ব্যবহার করে আবর্জনা শনাক্ত করে। এরপর চার আঙুল-বিশিষ্ট শক্তিশালী মেকানিক্যাল হাতে সেই বর্জ্য ধরতে পারে, যা এক মিটার লম্বা ও চওড়া বা প্রায় ২৫০ কিলোগ্রাম ওজনের বস্তু তুলতে সক্ষম। পরে সেগুলো পানির ওপর ভাসমান ছোট একটি স্বয়ংক্রিয় নৌকায় তুলে পাঠায়, যা আবর্জনা কূলে নিয়ে যায় পুনর্ব্যবহারের জন্য।

আরও পড়ুন>>
রোবটের ‘গর্ভে’ মানবশিশু? চীনের গবেষণায় বিশ্বজুড়ে হইচই
১০ বছরের মধ্যে ঘরে ঘরে থাকবে রোবট
মঞ্চে মুখ থুবড়ে পড়লো রাশিয়ার রোবট ‘এআইডল’

রোবটটি একটি তারের সাহায্যে নৌকার সঙ্গে যুক্ত থাকে। এই তারই রোবটকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে এবং ভারী বস্তু ওপরে তুলতে সাহায্য করে। প্রয়োজন হলে রোবটটি নিজস্ব থ্রাস্টারের সাহায্যে পানির নিচে চলতেও পারে।

গবেষক স্টেফান সোসনোভস্কি বলেন, তারটিকে আমরা ক্রেনের ক্যাবল হিসেবে ব্যবহার করি। এতে রোবটকে নিজে ভেসে জিনিস তোলার দরকার হয় না, বিদ্যুৎচালিত উইঞ্চ সিস্টেম সেটা তুলতে পারে আরও কার্যকরভাবে।

আবর্জনা শনাক্ত হলে রোবটটি সেটিকে ৩-ডি ইমেজে রূপান্তর করে সঠিকভাবে কোথা থেকে ধরতে হবে সেটি নির্দিষ্ট করে। জটিল সেন্সর সিস্টেম নিশ্চিত করে, যেন বর্জ্যটি শক্তভাবে ধরা পড়ে কিন্তু ভেঙে ছোট ছোট অংশে ছড়িয়ে না যায়।

গবেষণা থেকে বাস্তবে

টিইউএম’র গবেষক নিকোলাস হোইশেন বলেন, দুই বছর আগে এটি শুধু একটি ছোট হাত ছিল, আর এখন পূর্ণাঙ্গ গ্র্যাপল। এটি কাজ করতে দেখাটা সত্যিই অবিশ্বাস্য।

হোইশেন জানান, তিনি প্রকল্পে যুক্ত হন কারণ তিনি রোবটিকসের জ্ঞান বাস্তব, পরিবেশবান্ধব কাজে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন, যা সমুদ্রবন্দর থেকে শুরু করে যে কোনো দেশকে পানির নিচের বর্জ্য অপসারণে সহায়তা করতে পারে।

পরীক্ষামূলক সাফল্য

সম্প্রতি ফ্রান্সের মার্সেই বন্দরে এবং জার্মানির হামবুর্গ বন্দরে রোবটটি পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়। সেখান থেকে এটি সফলভাবে নানা ধরনের বর্জ্য তুলে আনে।

রোবটটি এখনো আংশিকভাবে রিমোট কন্ট্রোলে চলে, তবে দ্রুতই সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় হওয়ার পথে।

গবেষকরা জানান, পানির নিচে প্রকৃত আবর্জনা আর প্রাকৃতিক বস্তু (যেমন পাথর বা গাছের অংশ) আলাদা করাই ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য তারা ৭ হাজার ৫০০টিরও বেশি ছবি দিয়ে রোবটকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন, যা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আন্ডারওয়াটার ডেটাসেট।

সূত্র: সিএনএন
কেএএ/

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow