সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ১৫ দিন ধরে নিখোঁজ ভোলার ১৩ জেলে
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ভোলার লালমোহন উপজেলার ১৩ জেলে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় ১৫ দিন পার হলেও এখনো তাদের কোনো খোঁজ মিলেনি। এতে নিখোঁজ জেলেদের পরিবারে দেখা দিয়েছে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। এ ঘটনায় নিখোঁজ জেলেদের সন্ধান চালিয়ে তাদের ফিরে আনার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতার দাবি জানিয়েছে তদের পরিবারের সদস্যরা। নিখোঁজ জেলেরা হলেন- ভোলার লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দলিল মাস্টার বাজার এলাকার মো. খোকন মাঝি, মো. সাব্বির, মো. হেলাল মাঝি, মাকসুদুর রহমান মাঝি, মো. শামিম মাঝি, মো. সজিব মাঝি, নাছির মাঝি, মো. জাহাঙ্গীর মাঝি এবং একই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাতিরখাল এলাকার মাকসুদ মাঝি, ফারুক মাঝি, আব্দুল মালেক, ফারুক মাঝি, মো. আলম মাঝি। জানা গেছে, গত ১০ নভেম্বর লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফারুক মাঝির নেতৃত্বে ১৩ জেলে গভীর সাগরে মাছ ধরতে যায়। নিখোঁজ জেলে মো. খোকন মাঝির স্ত্রী রিপা বেগম জানান, তার স্বামী ফারুক মাঝির নেতৃত্বে গত ১০ নভেম্বর বাড়ি থেকে মাছ শিকার করতে গভীর সাগরে যান। সেসময় খোকন মাঝি জানিয়েছিলেন- তারা চরফ্যাশনের সামরাজ মৎস্য ঘাট থেকে খাবা
বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ভোলার লালমোহন উপজেলার ১৩ জেলে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় ১৫ দিন পার হলেও এখনো তাদের কোনো খোঁজ মিলেনি। এতে নিখোঁজ জেলেদের পরিবারে দেখা দিয়েছে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
এ ঘটনায় নিখোঁজ জেলেদের সন্ধান চালিয়ে তাদের ফিরে আনার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতার দাবি জানিয়েছে তদের পরিবারের সদস্যরা।
নিখোঁজ জেলেরা হলেন- ভোলার লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের দলিল মাস্টার বাজার এলাকার মো. খোকন মাঝি, মো. সাব্বির, মো. হেলাল মাঝি, মাকসুদুর রহমান মাঝি, মো. শামিম মাঝি, মো. সজিব মাঝি, নাছির মাঝি, মো. জাহাঙ্গীর মাঝি এবং একই ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাতিরখাল এলাকার মাকসুদ মাঝি, ফারুক মাঝি, আব্দুল মালেক, ফারুক মাঝি, মো. আলম মাঝি।
জানা গেছে, গত ১০ নভেম্বর লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফারুক মাঝির নেতৃত্বে ১৩ জেলে গভীর সাগরে মাছ ধরতে যায়।
নিখোঁজ জেলে মো. খোকন মাঝির স্ত্রী রিপা বেগম জানান, তার স্বামী ফারুক মাঝির নেতৃত্বে গত ১০ নভেম্বর বাড়ি থেকে মাছ শিকার করতে গভীর সাগরে যান। সেসময় খোকন মাঝি জানিয়েছিলেন- তারা চরফ্যাশনের সামরাজ মৎস্য ঘাট থেকে খাবারসহ অন্যান্য সামগ্রী নিয়ে সাগরের উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন। কথা ছিল ৫ থেকে ৬ দিনের মধ্যে তাদের ফিশিংবোড আবার ফিরে আসবে। কিন্তু ফিরে আসা তো দূরের কথা তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগও করা যাচ্ছে না। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ রয়েছে।
খোকনের মা রাজিয়া বেগম জানান, খোকনের বাবা অসুস্থ। ছেলের স্বল্প আয়ের মধ্যেও তাদের চিকিৎসা চলে। এখন তার ছেলের কিছু হলে তাদের পরিবার চলবে কী হবে।
একই এলাকার নিখোঁজ বাক্প্রতিবন্ধী মো. সাব্বির মাঝির স্ত্রী সিমা বেগম জানান, মাত্র ৪ মাস আগে তাদের বিয়ে হয়েছে। তার স্বামী কখনই জেলের কাজ করেনি। বিয়ের পর আমি দেখেছি সে অন্য কাজ করে সংসার চালাতো। কিন্তু হঠাৎ বেশি ইনকামের আশায় প্রথমবারের মতো সাগরে মাছ শিকার করতে যান। কিন্তু এখনও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
নিখোঁজ সাব্বিরের মা নাজমা বেগম জানান, তার ছেলে বাক্প্রতিবন্ধী। কয়েক মাস আগে বিয়ে করিয়েছি। ছেলে ঘরে নতুন বউ রেখে সাগরে প্রথমবারের মত মাছ শিকার করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে। আমার বিশ্বাস ছেলে বেঁচে আছে। আমি সরকারের কাছে ছেলের সন্ধানের অনুরোধ করছি।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. এমরান হোসেন সোহাগ ও মো. সফিউল্লাহ জানান, গত ১০ নভেম্বর দুপুরের দিকে লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফারুক মাঝির নেতৃত্বে তার মা-বাবার দোয়া ফিশিংবোড নিয়ে একই ইউনিয়নের বাতিরখাল মৎস্যঘাট থেকে রওনা হয় ১৩ জেলে। ১১ নভেম্বর তারা চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ থেকে তারা ৫ থেকে ৭ দিনের খাবারসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে রওনা হয় গভীর সাগরের উদ্দেশ্যে। কথা ছিল ৫ দিনের মধ্যেই তারা আবার আশানুরূপ মাছ শিকার করে ফিরে আসবেন। কিন্তু ১৫ দিন ধরে তাদের সন্ধান না পেয়ে উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন নিখোঁজ পরিবার সদস্যরা। নিখোঁজ জেলেদের স্বজনদের বিশ্বাস তারা এখনও বেঁচে আছেন।
তারা আরও জানান, নিখোঁজ জেলেদের বোট যদি গভীর সাগরে নষ্ট হয় যায় তাহলে তো তারা ভাসছে। অথবা তারা যদি দিক হারিয়ে ভারত, শ্রীলঙ্কা কিংবা মিয়ানমার চলে যেতে পারে। তারা যেভাবেই থাকুক যেখানেই থাকুক আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করছি- নিখোঁজ জেলেদের সন্ধান করে পরিবারে কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
লালমোহন উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. শাহ আজিজ জানান, নিখোঁজ জেলেদের সন্ধানের জন্য কোস্টগার্ড কাজ করছেন। নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যরাও সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন। নিখোঁজ পরিবারের পাশে উপজেলা প্রশাসন রয়েছেন।
তিনি আরও জানান, নিখোঁজ জেলেরা ইঞ্জিন বিকল হয়ে সাগরে ভাসছে কি না অথবা দিক হারিয়ে অন্য কোনো দেশের চলে গেছে কি না সে বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
জুয়েল সাহা বিকাশ/এনএইচআর/জেআইএম
What's Your Reaction?