হাসিনাসহ ৩ আসামির বিরুদ্ধে যে পাঁচ অভিযোগ
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। সেগুলো হলো- গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার ‘উসকানিমূলক বক্তব্য’ দেওয়া; হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ দেওয়া; রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা; রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পোড়ানোর অভিযোগ। শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলার অন্য দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলার রায় ঘোষণা করবেন আজ। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলার রায় ঘোষণা করবেন। এই ট্রাইব্য
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। সেগুলো হলো- গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার ‘উসকানিমূলক বক্তব্য’ দেওয়া; হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ দেওয়া; রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা; রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পোড়ানোর অভিযোগ।
শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলার অন্য দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলার রায় ঘোষণা করবেন আজ। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলার রায় ঘোষণা করবেন। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
যে পাঁচ অভিযোগ
প্রথম অভিযোগে বলা হয়েছে, চীন থেকে ফিরে গত বছর ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন শেখ হাসিনা। ওই সময় আন্দোলনরত ছাত্রদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’, ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ বলে রাষ্ট্রীয় এবং সহযোগী বাহিনীগুলোকে উসকানি দেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন অধীনস্ত বাহিনীকে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার জন্য ‘সুপিরিয়র কমান্ডার’ হিসেবে নির্দেশ দেন। এই নির্দেশে অধিনস্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও সহযোগী বাহিনী ব্যাপক মাত্রায় পদ্ধতিগত হত্যা, হত্যা-চেষ্টা, নির্যাতন এবং অন্যান্য অমানবিক আচরণ করার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ করে, যা আসামিদের জ্ঞাতসারে কার্যকর করা হয়েছে।
দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, ছাত্র-জনতার ওপর হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের হত্যা করে নির্মূলের নির্দেশ দেন আসামি শেখ হাসিনা। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসামি আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের নির্দেশে তাঁদের নিয়ন্ত্রণাধীন ও অধীনস্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে শেখ হাসিনার নির্দেশনা কার্যকর করেন। এর মধ্য দিয়ে আসামিরা অপরাধ সংঘটনের নির্দেশ প্রদান, অপরাধ সংঘটনে সহায়তা, অপরাধে সম্পৃক্ত হয়ে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করেন, যা তাদের জ্ঞাতসারে কার্যকর করা হয়েছে।
তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামি শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য এবং মারণাস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশে আসামি আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনসহ তৎকালীন সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্ররোচনা, সহায়তা ও সম্পৃক্ততায় তাঁদের অধীনস্ত ও নিয়ন্ত্রণাধীন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য ও সশস্ত্র আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ব্যাপক মাত্রায় ও পদ্ধতিগতভাবে নিরীহ-নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণের অংশ হিসেবে গত বছর ১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে লক্ষ্য করে একাধিক গুলি চালিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে পুলিশ। পরে চাপ প্রয়োগ করে তাঁর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন চারবার পরিবর্তন করা হয়। এ ঘটনায় আবু সাঈদের সহপাঠীদের আসামি করে মামলাও করে পুলিশ। ‘সুপিরিয়র কমান্ডার’ হিসেবে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের নির্দেশে এই হত্যা, তথ্য গোপন ও মিথ্যা মামলা করা হয়। এসবের নির্দেশ দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন তিন আসামি।
চতুর্থ অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামি শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য এবং মারণাস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশে আসামি আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনসহ তৎকালীন সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্ররোচনা, সহায়তা ও সম্পৃক্ততায় তাঁদের অধীনস্ত ও নিয়ন্ত্রণাধীন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য ও সশস্ত্র আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ব্যাপক মাত্রায় ও পদ্ধতিগতভাবে নিরীহ-নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণের অংশ হিসেবে গত ৫ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি চলার সময় রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় আন্দোলনরত নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর তৎকালীন সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা নিরীহ-নিরস্ত্র ছয়জন আন্দোলনকারীকে গুলি করে। আর এই হত্যার মাধ্যমে আসামিরা হত্যার নির্দেশ, হত্যায় প্ররোচনা, উসকানি, সহায়তা, সম্পৃক্ততা এবং ষড়যন্ত্রের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ করেন।
পঞ্চম অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামি শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য এবং মারণাস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে হত্যার নির্দেশে আসামি আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনসহ তৎকালীন সরকারের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্ররোচনা, সহায়তা ও সম্পৃক্ততায় তাঁদের অধীনস্ত ও নিয়ন্ত্রণাধীন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য ও সশস্ত্র আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ব্যাপক মাত্রায় ও পদ্ধতিগতভাবে নিরীহ-নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার ওপর আক্রমণ চালায়। এই আক্রমণের অংশ হিসেবে গত ৫ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে আসার সময় ঢাকার আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী। এতে নিরীহ-নিরস্ত্র ছয়জনের মৃত্যু হয়। পরে তাঁদের লাশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনাসহ এই তিন আসামি জ্ঞাতসারে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।
জেএইচ/এএসএম
What's Your Reaction?