৫০তম টেস্টে পাননি, মিরপুরে শততম টেস্টে সেঞ্চুরি পাবেন মুশফিক!
কি আশ্চর্য! মুশফিকুর রহিমের ক্যারিয়ারে দুটি শহরের দুটি ভেন্যুই যেন আষ্টেপৃষ্টে বাঁধা। প্রথমটি লন্ডনের ‘লর্ডস।’ ক্রিকেটের তীর্থ ভেন্যু লর্ডসেই অভিষেক ঘটেছিল ১৭ বছরের কিছু বেশি সময়ের তরুণ মুশফিকের। সময়টা ২০০৫ সালের ২৬ মে। এর ১১ বছর পর মুশফিক তার ৫০ নম্বর টেস্ট খেলেছেন ২০১৬ সালের অক্টোবরে (২৮-৩০ অক্টোবর)। সেটা ছিল ঢাকার মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে। এরপর কেটে গেছে নয়টি বছর। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা আর বুড়িগঙ্গায় গড়িয়েছে অনেক জল। ২০২৫ সালের ১৯ নভেম্বর, বুধবার সকালে মুশফিক তার ১০০তম টেস্ট ম্যাচটি খেলতে নামবেন। কাকতালীয়ভাবে এবারও সেই শেরে বাংলায়। মোটা দাগে বলতে গেলে, মুশফিকের প্রথম টেস্ট লর্ডসে। ৫০ নম্বর টেস্ট শেরে বাংলায়। আবার শততম টেস্টও হতে যাচ্ছে সেই শেরে বাংলাতেই। খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, মুশফিক তার প্রথম টেস্টে কত রান করেছিলেন? ২০ বছর আগে ক্রিকেটের তীর্থ ভূমি লর্ডসে মুশফিকের প্রথম ইনিংসের সংগ্রহ ছিল ১৯। ৬ নম্বর পজিশনে নেমে ৮৫ মিনিট উইকেটে থেকে ৫৬ বল মোকাবিলা করে তিনটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১৯ রানে ইংলিশ পেসার ম্যাথ্যু হগার্ডের বলে বোল্ড হয়েছিলেন তিনি। মাত্র ১০৮ রানে অলআউট হওয়া বাংলাদেশ
কি আশ্চর্য! মুশফিকুর রহিমের ক্যারিয়ারে দুটি শহরের দুটি ভেন্যুই যেন আষ্টেপৃষ্টে বাঁধা। প্রথমটি লন্ডনের ‘লর্ডস।’ ক্রিকেটের তীর্থ ভেন্যু লর্ডসেই অভিষেক ঘটেছিল ১৭ বছরের কিছু বেশি সময়ের তরুণ মুশফিকের। সময়টা ২০০৫ সালের ২৬ মে।
এর ১১ বছর পর মুশফিক তার ৫০ নম্বর টেস্ট খেলেছেন ২০১৬ সালের অক্টোবরে (২৮-৩০ অক্টোবর)। সেটা ছিল ঢাকার মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে। এরপর কেটে গেছে নয়টি বছর। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা আর বুড়িগঙ্গায় গড়িয়েছে অনেক জল। ২০২৫ সালের ১৯ নভেম্বর, বুধবার সকালে মুশফিক তার ১০০তম টেস্ট ম্যাচটি খেলতে নামবেন। কাকতালীয়ভাবে এবারও সেই শেরে বাংলায়। মোটা দাগে বলতে গেলে, মুশফিকের প্রথম টেস্ট লর্ডসে। ৫০ নম্বর টেস্ট শেরে বাংলায়। আবার শততম টেস্টও হতে যাচ্ছে সেই শেরে বাংলাতেই।
খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, মুশফিক তার প্রথম টেস্টে কত রান করেছিলেন? ২০ বছর আগে ক্রিকেটের তীর্থ ভূমি লর্ডসে মুশফিকের প্রথম ইনিংসের সংগ্রহ ছিল ১৯। ৬ নম্বর পজিশনে নেমে ৮৫ মিনিট উইকেটে থেকে ৫৬ বল মোকাবিলা করে তিনটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১৯ রানে ইংলিশ পেসার ম্যাথ্যু হগার্ডের বলে বোল্ড হয়েছিলেন তিনি।
মাত্র ১০৮ রানে অলআউট হওয়া বাংলাদেশের পক্ষে ওই টেস্টের প্রথম ইনিংসে মুশফিকসহ মাত্র তিনজন ব্যাটার দুই অংকে পা রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। যার একজন ওপেনার জাভেদ ওমর (২২), অপরজন আফতাব আহমেদ (২০)। দ্বিতীয় ইনিংসেও সুবিধা করতে পারেননি মুশফিক। আরেক ইংলিশ ফাস্টবোলার এন্ড্রু ফ্লিনটফের বলে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মাত্র তিন রানে।
এরপর ৫০তম টেস্ট ম্যাচটিতেও ব্যাট হাতে কিছু করতে পারেননি মুশফিক। প্রথম ইনিংসে ৪ আর দ্বিতীয় ইনিংসে ৯ রানে আউট হয়ে গিয়েছিলেন। ব্যাটার মুশফিক রান পাননি, ২ ইনিংসের একবারও দুই অংকে পা রাখতে পারেননি, তাতে কি! টিম পারফরমেন্স ছিল অসাধারণ।
২০১৬ সালের অক্টোবরে হোম অব ক্রিকেটে হওয়া সেই টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ পেয়েছিল ১০৮ রানের ঐতিহাসিক জয়। তামিম ইকবালের শতরান (১০৪) আর মুমিনুল হকের ফিফটি (৬৬) এবং মেহেদি হাসান মিরাজের (১২/১৫৯) ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা বোলিং নৈপুণ্যে বাংলাদেশ পায় অবিস্মরনীয় টেস্ট জয়ের স্বাদ এবং সে অবিশ্বাস্য জয় ধরা দিয়েছিল মুশফিকের অধিনায়কত্বে।
এবার সেই শেরে বাংলায় কাল বুধবার ক্যারিয়ারের ১০০ নম্বর টেস্ট ম্যাচ খেলতে নামবেন মুশফিক। এবার কি করবেন? ১ ও ৫০ নম্বর টেস্টে পারেননি বড় ইনিংস খেলতে। এবারও কি তাই হবে? না ইতিহাস বদলে শততম টেস্টে এসে ঠিক জ্বলে উঠবেন পরিশ্রমী, অধ্যবসায়ী, মনোযোগী, আত্মনিবেদনকারী মুশফিক। যদি সেঞ্চুরি হাঁকাতে পারেন, তাহলে অমর হয়ে থাকবেন।
টেস্ট ক্রিকেটের সুদীর্ঘ ইতিহাসে ৮৪ নম্বর ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ নম্বর টেস্ট খেলা মুশফিক কি এ টেস্টের দুই ইনিংসে অন্তত একবার শতরান করে নিজেকে অমর করে রাখবেন? সেই কলিন কাউড্রে থেকে শুরু করে জাভেদ মিয়াঁদাদ, গর্ডন গ্রিনিজ, অ্যালেক স্টুয়ার্ট, ইনজামাম উল হক, রিকি পন্টিং, গ্রায়েম স্মিথ, হাশিম আমলা, জো রুট আর ডেভিড ওয়ার্নারের পর শততম টেস্টে শতরানকারী হিসেবে ১১ নম্বর ব্যাটার হিসেবে কি মুশফিকের নামও ইতিহাসের পাতায় স্বর্নাক্ষরে লিখা থাকবে ?
সিলেটে প্রথম টেস্টে তার ৪ সহযোগি ও আগে ব্যাট করা মাহমুদুল হাসান জয় (১৭১), সাদমান ইসলাম (৮০), মুমিনুল হক (৮২) নাজমুল হোসেন শান্ত (১০০) চারজনই রান পেয়েছেন। দীর্ঘ ইনিংস খেলেছেন। তারপরে উইকেটে যাওয়া লিটন দাসের ব্যাটও ফিফটি (৬০) ছুঁয়েছে। ৬ স্পেশালিস্ট ব্যাটারের মধ্যে একমাত্র মুশফিকই (২৩) কম রানে আউট হয়েছেন।
ইতিহাস কিন্তু আশার প্রদীপ হয়ে আছে। ইতিহাস ও পরিসংখ্যান জানাচ্ছে ৯৯ টেস্টে মুশফিকের শতরান ১২টি। তার মধ্যে আছে তিন-তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি। যার দুটি এই মিরপুরের শেরে বাংলায় (দুটিই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। প্রথমটি ২০১৮ সালের ১১ নভেম্বর ২১৯ অপরাজিত, আর পরেরটি ২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০৩ নট আউট)।
সেটাই শেষ নয়, তার একডজন টেস্ট সেঞ্চুরির ঠিক অর্ধেক দেশের মাটিতে। যার ৪টিই যে মিরপুরে! কাজেই শেরে বাংলা যে তার পয়োমন্তঃ টেস্ট ভেন্যু। এবার ঢাকার মিরপুরের সেই শেরে বাংলায় নিজের ১০০ নম্বর টেস্টে পূর্ব সাফল্যর পূনরাবৃত্তি ঘটিয়ে আর একটি দীর্ঘ ইনিংস খেলবেন মিস্টার ‘ডিপেন্ডেবল?’
এআরবি/আইএইচএস/
What's Your Reaction?