অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। শ্বশুরবাড়ি কৈলাস থেকে কন্যারূপে দেবী দুর্গা বাপের বাড়ি বেড়াতে এসেছেন মর্ত্যলোকে। এবার দেবী দুর্গা আসছেন গজে (হাতি) করে, বিদায় নেবেন দোলায় (পালকি)। সেজন্য সকাল থেকে খুলনার মণ্ডপগুলোতে ছিল তাকে আহ্বান জানানোর আনুষ্ঠানিকতা।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ঘট স্থাপন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে পূজার সূচনা হয়।
এ সময় ভক্তরা উপবাস থেকে দেবী দুর্গার চরণে অঞ্জলি নিবেদন করেন এবং শান্তি, সমৃদ্ধি ও সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করেন। প্রতি বছরের মতো এবারও দুর্গোৎসবকে ঘিরে খুলনায় বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। শহরের অলিগলি, পাড়া-মহল্লা ও গ্রামীণ এলাকাজুড়ে চলছে পূজার প্রস্তুতি। বিভিন্ন পূজামণ্ডপ সাজানো হয়েছে আলোকসজ্জা, তোরণ ও রঙিন ব্যানারে। চারদিকে বাজছে আগমনি গান, ভক্তদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে উচ্ছ্বাস।
রোববার সকালে খুলনার আর্য ধর্মসভা মন্দির পরিদর্শন করেন খুলনা নৌ অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল একেএম জাকির হোসেন। এ সময় তিনি মন্দির কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং পূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে নৌবাহিনীর গৃহীত পদক্ষেপ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গোৎসব সম্পন্নের লক্ষ্যে নৌবাহিনী টহলসহ নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। ভক্তরা যাতে নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন করতে পারেন, সেজন্য সব ধরনের সহায়তার জন্য নৌবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। দুর্গাপূজাকে ঘিরে খুলনায় কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সম্ভাবনা নেই।’
এ বছর খুলনা জেলায় মোট ৯৮০টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে মহানগরে ১২০টি এবং জেলার ৯ উপজেলার ৮৬০টি মণ্ডপে পূজা হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি মণ্ডপে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে। নগরজুড়ে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা, বিশেষ চেকপোস্ট ও মেটাল ডিটেক্টর।
উৎসব নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, আনসার ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মাঠে কাজ করছে। স্থানীয় পূজা উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মের মানুষও পূজা উৎসবে অংশ নেবেন। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এই উৎসবকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে এক মিলনমেলা।