আমরা সবাই জীবনের কোনো না কোনো সময় অতিরিক্ত চিন্তা করি—পরীক্ষার আগে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বা ভুল কিছু ঘটার পর। কিন্তু যখন একটা বিষয় নিয়ে বারবার, ঘুরে-ফিরে চিন্তা করতে থাকি, তখন তা শুধু মাথার ভেতরই ঘোরে না—মনকেও দুর্বল করে তোলে।
আরও পড়ুন : মুখের যত্নে বাড়ে মস্তিষ্কের শক্তি
আরও পড়ুন : সম্পর্ক মধুর রাখতে বিশেষজ্ঞদের ৭ পরামর্শ
ঘুমের ব্যাঘাত, স্ট্রেস, খিটখিটে মেজাজ, এমনকি হতাশাও তৈরি হতে পারে ওভারথিংকিং থেকে। তবে চাইলে এই মানসিক চক্র থেকে বের হওয়া সম্ভব। চলুন জেনে নিই কীভাবে সহজে এই অভ্যাস থেকে মুক্তি পাওয়া যায়—
আপনি কখন বেশি চিন্তা করছেন, সেটা আগে বোঝার চেষ্টা করুন
অনেক সময় আমরা বুঝতেই পারি না—কখন অতিরিক্ত চিন্তা শুরু হয়ে গেছে। হঠাৎ খেয়াল করি, একটা বিষয় নিয়ে অনেকক্ষণ ধরে মাথা খাচ্ছি। এমন হলে নিজেকে জিজ্ঞেস করুন-
- আমি কি একই কথা বারবার ভাবছি?
- এই চিন্তা কি আমাকে শান্ত করছে, না আরও অস্থির করছে?
- এই সচেতনতা তৈরি হলেই আপনি নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবেন।
‘এখন’-এ ফিরে আসুন
ওভারথিংকিং সাধারণত অতীতের ভুল বা ভবিষ্যতের ভয় নিয়ে হয়ে থাকে। অথচ আমরা তো বাঁচি বর্তমানেই। মনকে ‘এখন’-এ ফিরিয়ে আনতে পারেন এভাবে-
- ধীরে ধীরে ৫টা গভীর শ্বাস নিন।
- আপনার চারপাশে থাকা ৫টি জিনিস খেয়াল করুন (রং, গন্ধ, শব্দ, স্বাদ ও স্পর্শ)।
- নিজেকে জিজ্ঞেস করুন : ‘এই মুহূর্তে আমি ঠিক আছি তো?’
এই ছোট ছোট সচেতন অভ্যাস মনকে শান্ত রাখে।
চিন্তার জন্য নির্দিষ্ট সময় রাখুন
সারাদিন ভাবতে ভাবতে ক্লান্ত হয়ে পড়েন? একদমই দরকার নেই। বরং নিজের জন্য প্রতিদিন ১০-১৫ মিনিট নির্দিষ্ট করুন ‘চিন্তা করার সময়’ হিসেবে।
যখনই মনে হবে, ‘এটা নিয়ে ভাবতে হবে’— নিজেকে বলুন : ‘ভালো কথা, তবে এখন না। আমার চিন্তার সময় তখন, তখন ভাবব।’
মনকে সময় দিন, কিন্তু সব সময় নয়।
শরীরকে ব্যস্ত রাখুন
মন যখন খুব বেশি ভাবছে, তখন শরীরকে কাজে লাগান। কারণ শরীর নড়াচড়া করলে মনও একটু ঘুরে দাঁড়ায়।
- হাঁটুন কিছুক্ষণ
- ঘর গুছিয়ে ফেলুন
- কিছু হালকা এক্সারসাইজ করুন
- নাচুন বা গান শুনে হাত-পা নড়ান
আরও পড়ুন : সকালে ঘুম থেকে উঠে শরীরে ব্যথা কেন হয়?
আরও পড়ুন : যখন নিজেই জানেন না আপনি অন্তঃসত্ত্বা
যেকোনো সহজ কাজ, যেটা আপনাকে ‘মাথা থেকে শরীর’-এ নিয়ে আসবে, সেটা আপনাকে মুক্তি দেবে ওভারথিংকিং থেকে।
চিন্তা করা খারাপ না, কিন্তু যখন চিন্তা আমাদের শান্তি নষ্ট করে ফেলে, তখন সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। নিজেকে সময় দিন, নিজেকে বোঝার চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন—আপনার মস্তিষ্ক আপনাকে চালাবে না, আপনি চালাবেন আপনার মস্তিষ্ককে।