অতিরিক্ত সচিব জিয়াউদ্দিনের বিরুদ্ধে জনপ্রশাসনে অভিযোগ

4 hours ago 6
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে অনৈতিক অর্থ দাবি ও হয়রানি করার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন এক ভুক্তভোগী। রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে লিখিত অভিযোগ দেন বগুড়ার শিবগঞ্জের রুপসী ফ্লাওয়ার, রাইস অ্যান্ড পুষ্টি মিলের স্বত্বাধিকারী মো. মহিদুল হক। তিনি লিখিত অভিযোগে বলেন, আমার রুপসী ফ্লাওয়ার, রাইস অ্যান্ড পুষ্টি মিলটি খাদ্য অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত পেষণ ক্ষমতা সম্পন্ন ফ্লাওয়ার মিল। জেলা প্রশাসক, বগুড়া গত ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর সরকারি অর্থ সাশ্রয়ের স্বার্থে আমার ফ্লাওয়ার মিলটি বগুড়ার শিবগঞ্জ পৌরসভার ও কাহালু পৌরসভার ওএমএসের একক পেষণ ক্ষমতা প্রদানের জন্য সচিব, খাদ্য মন্ত্রণালয় বরাবর পত্র প্রেরণ করেন। সেই প্রেক্ষিতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় জেলা প্রশাসক, বগুড়া গত ৯ জানুয়ারি শিবগঞ্জ ও কাহালু পৌরসভার পেষণ ক্ষমতা প্রদানের সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। উল্লেখিত বিষয়াদিসহ অনুমোদনের জন্য নথিটি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ মন্ত্রণালয়ের স্বাক্ষরের জন্য উপস্থাপিত হলে নথিটি স্বাক্ষর না করে আমার নিকটাত্মীয় বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মীর শাহে আলমকে সচিবালয়ে ডেকে নিয়ে অনুমোদনের শর্তে ২০ লাখ টাকা অনৈতিক দাবি করেন। বিষয়টি আমার নজরে এলে আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে পুনরায় হয়রানি করার উদ্দেশ্যে বগুড়া জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে উল্লেখিত বিষয়ে পুনরায় তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণের নির্দেশ দেন। তারপর গত ৩০ জানুয়ারি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, বগুড়া পুনরায় রুপসী ফ্লাওয়ার, রাইস অ্যান্ড পুষ্টি মিল, বেতগাড়ী মীরবাড়ী, শিবগঞ্জ, বগুড়াকে শিবগঞ্জ ও কাহালু পৌরসভার একক পেষণ ক্ষমতা প্রদানের সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রেরণ করেন। লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী বলেন, এরপরও অনৈতিক সুবিধা না পাওয়ায় পুনরায় বগুড়া জেলার তালিকাভুক্ত সব পেষণ ক্ষমতাসম্পন্ন ফ্লাওয়ার মিলের কাছ থেকে না দাবিনামা শর্তসহ পুনরায় তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণের নির্দেশনা দেয়। আমাকে এবং আমার নিকটাত্মীয় মীর শাহে আলমকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি প্রদান করেন। এছাড়াও বগুড়ার তালিকাভুক্ত ফ্লাওয়ার মিলের মালিকদের আলাদাভাবে টেলিফোন করে না দাবি প্রত্যয়ন না দেওয়ার জন্য নির্দেশনা ও হুমকি দেন। এরপরও বগুড়া জেলার ব্যবসায়িক মহলে আমার সুনামের কথা চিন্তা করে তালিকাভুক্ত সব ফ্লাওয়ার মিল মালিকরা রুপসী ফ্লাওয়ার, রাইস অ্যান্ড পুষ্টি মিল, বেতগাড়ী মীরবাড়ী, শিবগঞ্জ, বগুড়াকে শিবগঞ্জ পৌরসভার সম্পূর্ণ ও কাহালু পৌরসভার আংশিক পেষণ ক্ষমতা প্রদানের জন্য নাদাবী প্রত্যয়ন শিবগঞ্জ উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে দাখিল করে। পরবর্তীতে দাখিলকৃত নাদাবী প্রত্যয়নগুলোসহ পূর্ণাঙ্গ একটি প্রতিবেদন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, বগুড়া মহাপরিচালক, খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে সচিব, খাদ্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন। পরবর্তী সময়ে জিয়াউদ্দিন আহমেদ অনৈতিক সুবিধা না পাওয়ায় প্রজাতন্ত্রের একজন সেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন না করে দীর্ঘদিন আমার এ বিষয়টি নিয়ে হয়রানি করার পর সমস্ত প্রতিবেদন আমার পক্ষে থাকার পরও শুধু স্বৈরাচার হাসিনার দোসর হিসেবে আমার বাড়ি বগুড়া হওয়ায় বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে নিয়ে সংক্ষুব্ধ হয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ভুল বুঝিয়ে শিবগঞ্জ ও কাহালু পৌরসভার পেষণ ক্ষমতা তো প্রদান করেননি বরং সার্বিক বিবেচনায় ২০ ফেব্রুয়ারির পত্র অনুযায়ী ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতি করা হয়েছে। উল্লেখ্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক থাকার সময় খাদ্য অধিদপ্তরের মাফিয়া ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ঠিকাদার মো. সোহাগের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিল, তাকে ব্যবসায়িক সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে তদবির করেছে এবং জিয়াউদ্দিন আহমেদের ঠিকাদার সোহাগের কাছে কয়েক কোটি টাকা লগ্নি করা আছে বলে জানা যায়। অভিযোগে আরও বলা হয়, ইতোমধ্যে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তর ঠিকাদার মো. সোহাগের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন খাদ্য মন্ত্রণালয়ে গত ৩০ জানুয়ারি দাখিল করেছে। জিয়াউদ্দিন আহমেদ খাদ্য মন্ত্রণালয়ে যোগদানের পর থেকে মাফিয়া ব্যবসায়ী সোহাগসহ অনেক ব্যবসায়ীর সঙ্গে গোপনে দেন-দরবার করে খাদ্য ঘাটতি ও বাজার অস্থীতিশীল করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জনরোষে ফেলার সবসময় চেষ্টা করে যাচ্ছে। অতএব ফ্যাসিবাদ স্বৈরাচার হাসিনার দোসর হিসেবে পরিচিত জিয়াউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে সার্বিক অভিযোগ ও নথি আমলে নিয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিনীত অনুরোধ করছি। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত সচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদকে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও রিসিভ করেননি। 
Read Entire Article